গিয়াস উদ্দিন | ২১ আগস্ট ২০১৭ | ১২:১৬ অপরাহ্ণ
সাংবাদিক, সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। মূলত এটি জাতির দর্পন সরূপ । জাতিকে দিক নির্দেশনা দেয়। চলার গতি প্রকৃতি ও বলে দেয়। একটি দেশের একটি জাতির অন্যতম স্তম্ভ সংবাদপত্র। সংবাদপত্র সঠিক পথের পাশাপাশি কখন কখন বিপথে ও চালনা করে । আর তখন তা হয়ে ওঠে হলুদ সাংবাদিকতা। আমরা বর্তমান সময়ে প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাথে ওতোপ্রতো ভাবে জড়িত। সকালের চায়ের চুমুকের সাথে সাথে শুরু হয় আর ঘুম অব্দি নানান ভাবে জড়িয়ে আছি আমরা। ফেসবুকের কল্যানে এটি আরো সহজতর হয়ে উঠেছে আমাদের মাঝে। সমাজ ও রাষ্ট্রের দর্পণ সংবাদপত্র। কারণ, দর্পণে যেমন কোনো বস্তুর প্রকৃত রূপ ফুটে উঠে-তেমনি সমকালীন বিশ্ব চরাচরের চলমান গতি-প্রকৃতি, ঘটনাপ্রবাহ, জীবনচিত্র ও দিকনির্দেশনা পাওয়া যায় সংবাদপত্রে। সামাজিক ও রাষ্ট্রিক উন্নয়ন-অগ্রগতি, সত্য-সুন্দর এবং ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠায় সংবাদপত্রের ভূমিকা অপরিসীম। এজন্যই ব্রিটিশ পার্লামেন্টের গ্যালারিতে উপস্থিত সংবাদ প্রতিনিধিদের লক্ষ করে রাষ্ট্র কাঠামোতে সংবাদপত্রের গুরুত্ব ও অপরিহার্যতা বোঝাতে এডমন্ড বার্ক সংবাদপত্রকে ‘ফোর্থ স্টেট’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
সংবাদপত্র আজ পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। কেননা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বসহ সব জাতীয়-আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ড ও সামাজিক-মানবিক অধিকার অর্জন ও সংরক্ষণে সংবাদপত্রের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয়, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো বিনির্মাণে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের ভূমিকা অগ্রগণ্য। সংবাদপত্রের তথ্যনির্ভর ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ জনগণ তথা পাঠককে চিন্তা-চেতনা ও জ্ঞানে-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ করে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং ব্যষ্টিক ও রাষ্ট্রীক ভূমিকা নির্ধারণে সংবাদপত্র পথিকৃত হিসেবে কাজ করে। তাই সংবাদপত্রের গুরুত্ব সম্পর্কে আমেরিকার দু’বার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জেফারসন এক সাংবাদিককে লিখেছিলেন, তাকে যদি সংবাদপত্রবিহীন সরকার এবং সরকারবিহীন সংবাদপত্র-এ দুটোর মধ্যে একটা বেছে নিতে বলা হয়, তাহলে তিনি সরকারবিহীন সংবাদপত্রকেই বেছে নেবেন।
সাংবাদিকতা হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ও মানবিক চেতনা বিকাশের কেন্দ্র এবং নীতি-নৈতিকতা, দায়-দায়িত্ব ও বুদ্ধি-বিবেকের আধার। তাই সৃজনশীল গণমাধ্যম ও সম্মানজনক পেশা হিসেবে সংবাদপত্র অগ্রগণ্য। তবে সবচে’ ঝুঁকিপূর্ণ এবং সাহসী, সংবেদনশীল ও নির্মোহ, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ, সত্যনিষ্ঠ ও গণসম্পৃক্ত সার্বক্ষণিক পেশা সাংবাদিকতা। সংবাদপত্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল দল নিরপেক্ষ সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা। সংবাদপত্র যতবেশি নিরপেক্ষ হবে এবং সাংবাদিকরা যত বেশি নির্ভীক ও সৎ হবে দেশ ও জাতির তত বেশি মঙ্গল হবে। আর সেজন্যই তো সাংবাদিকদের সমাজের অতন্দ্র প্রহরী বা ‘গেট কিপারস’ বলা হয়। তবে আভিধানিকভাবে সংবাদপত্রের এসব বৈশিষ্ট্য হলেও, অনেক সংবাদপত্র ও সাংবাদিক নানা স্বার্থে উল্টাপথে হাঁটেন বা অপসাংবাদিকতায় মেতে ওঠেন, এমন প্রমাণও ভূরিভূরি।
বর্তমান সমাজে কিছু কিছু জ্ঞানপাপী রয়েছে যারা শিল্পকর্ম না বুঝে শিব গড়াতে গিয়ে বাঁদর গড়িয়ে ফেলেন। কখন কখন এমনও হয় যেন জুনিয়র সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারেননি অথচ এম ফিল পিএইচডির পরিচয় দাঁড় করিয়ে দেন নিজের নামের পাশে।