অনলাইন ডেস্ক | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ৮:৪২ অপরাহ্ণ
ইন্টারনেটের ইউজার মাত্রেই জানেন, ইউটিউব বা অন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘সেক্সুয়ালি এক্সপ্লিসিট’ কিছু আপলোড করা যায় না। নগ্নতা ফেসবুকে নিষিদ্ধ হতে পারে। কিন্তু ইউটিউবে নগ্নতা ততটাই প্রদর্শনযোগ্য, যতটা সেন্সর ছাড় দেয়। বেশ কিছু ‘প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য’ তকমা লাগানো সিনেমা ইউটিউবে লভ্য। এসব কথা অবশ্য নেট-ইউজাররা জানেন। কিন্তু নতুন নেট-এ ক্লিক করতে শেখা পাবলিককে বিভ্রান্ত করে দিতে পারে এমন ভিডিও-র সংখ্যাও অগণিত ইউটিউবে।
বিশেষ করে, বাংলাভাষী ইউটিউব-বাজদের সামনে এক আশ্চর্য প্রলোভনের জগৎ খলবল করছে। এর জন্য যে সামান্য কসরৎটুকু করতে হয়, তা হল এই— ইউটিউব সার্চ অপশনে গিয়ে বাংলায় টাইপ করতে হবে কিছু একটা। রামায়ণ বা মহাভারত টাইপ করলেও ‘আপ নেক্সট’ কলামে একের পরে এক ভেসে উঠতে শুরু করবে এমন সব ভিডিও-র আহ্বান, যার তালিকায় চোখ বোলালে মনে হতেই পারে আপনি পর্ন সাইটে হানা দিচ্ছেন।
‘১৮ বছরের মেয়ে গোলসখানায় নগ্ন হল’, ‘শিখে নিন সঙ্গমের সঠিক উপায় (ভিডিও সহ)’, ‘পর্দায় নগ্ন হলেন জয়া আহসান’ এই সব তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে রয়েছে ‘ব্রা সম্পর্কে কিছু জরুরি তথ্য শুধু মেয়েদের জন্য, পুরুষরা দেখবেন না’, ‘১৮ বছরের নীচে হলে এই ভিডিও দেখবেন না’-গোছের জিনিসও। বলাই বাহুল্য, পুরুষরা বেশি করে এমন ভিডিওয় উঁকি দেবে, অনূর্ধ্ব ১৮-রাই হামলে পড়বে ওই সব ক্লিপ-এ।
কিন্তু ব্যাপারটাকে যতখানি রসালো বলে মনে হচ্ছে, ততটা আদৌ নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাংলা চেনা সিনেমার ক্লিপ ব্যবহার করে এই ভিডিওগুলি তৈরি করা। আবার অনেকক্ষেত্রে ভিডিও-ই নেই। স্ক্রিন জুড়ে অসংখ্য ভুল বানানে হাবিজাবি লেখা। কোনওটায় আবার এমন কোনও ভিডিও, যার সঙ্গে শিরোনামের কোনও সম্পর্কই নেই। ক্লিক করলেই দেখা যাবে কিম্ভুত নিউজ-টেপ।
এহেন খিল্লির অর্থ কী, তা জানতে চেয়ে তলায় খিস্তি-সহ কমেন্টের বন্যা বয়ে যায়। কিন্তু আপলোডারদের তাতে সুবিধে। ক্রমশ ভাইরাল হতে থাকে এই সব আবর্জনা। ফেসবুকে ফেক প্রোফাইলের মালিকরা খপাখপ শেয়ার করেন এই সব ফেক ভিডিও। খেলাটা অনেকটা ১৯৮০-র দশকে কলকাতার হলে হলে রমরমিয়ে চলা মালয়ালাম ছবির মতো। বাংলা তরজমা করলে যে ছবির নামের মানে দাঁড়ায় ‘অনন্ত সূর্যোদয়’, তার ইংরেজি লেখা থাকত ‘সেক্সি নাইট’। বিভ্রান্ত দর্শকরা গালাগাল করতে করতে হল থেকে বেরিয়ে আসতেন। পরে অবশ্য আবার যেতেন এমন ছবি দেখতে।
আপলোড আর ক্লিক আর তাতে পয়সা— এই খেলায় কতজন বাংলাভাষী যে নাম লিখিয়ে বসে রয়েছেন, তা বলা কঠিন। তবে, একান্তভাবে বঙ্গজনই যে এই কাণ্ডে এগিয়ে, তা প্রমাণ করে এমন ভিডিও-র সংখ্যাধিক্যই।