
| শনিবার, ০৭ মার্চ ২০২০ | প্রিন্ট
গত বছর ডিসেম্বরের শেষে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে চীনের উহানে। তারপর থেকে এক-এক করে ভাইরাস ছড়াতে থাকে দেশটির বহু শহরে। সংক্রমণ রুখতে শহরগুলোকে তালাবন্দি করে দেয় চীন। বাড়িতে ‘বন্দি’ করা হয় বাসিন্দাদের।
গত দু’মাস ধরে এভাবেই কাটাচ্ছেন চীনের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে ভালো। কিন্তু সম্প্রতি দৈনন্দিন সামগ্রীর অভাব দেখা গেছে বন্দি শহরগুলোয়। বিশেষ করে টয়লেট পেপারের আকাল। চীনের দেখাদেখি এখন সংক্রমণ রুখতে শহর তালাবন্দি করার পথে হাঁটছে ইতালির মতো ইউরোপের দেশগুলোও। ফলে ভয় দানা বেধেছে পশ্চিমে।
যদি কোয়ারেন্টাইন হতে হয়, হলে যদি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আকাল দেখা দেয়। কিন্তু খাবার, পানীয়ের থেকেও দুশ্চিন্তা বেশি টয়লেট পেপার নিয়ে। দু’দিন না খেয়ে থাকা যাবে, সপ্তাহ দুয়েকও কাটানো যাবে, কিন্তু প্রকৃতির ডাক উপেক্ষা করবেন কী করে!-এমনই বলছেন বাসিন্দারা। তাই ‘হাত ও পানির কাজে’ অনভ্যস্ত সাহেব-মেমেরা হন্যে হয়ে কিনছেন টয়লেট পেপার। শপিং মলে ক্রেতাদের ট্রলি উপচে পড়ছে টয়লেট পেপারে। গৃহবন্দি হতে হলেও টয়লেটে যেন বন্দি হতে না হয়!
করোনা সঙ্কটে টয়লেট পেপার নিয়ে হাহাকার পড়ে গেছে সিঙ্গাপুর, জাপান, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ বহু দেশেই। বাসিন্দাদের আতঙ্ক, শেষে না ‘টয়লেট বন্দি’ হয়ে মরতে হয়! এই কারণে দোকানে এর দাম বাড়ছেই, অনলাইনে দাম চড়েছে ওই বিশেষ কাগজের।
সিডনির একটি রেডিও চ্যানেলে আবার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রথম পুরস্কার হিসেবে রাখা হয় তিনটি টয়লেট পেপার রোল। অস্ট্রেলিয়ার একটি সংবাদপত্র আরো এক ধাপ এগিয়ে। তারা খবরের কাগজে আলাদা করে আট পাতা দিয়েছে। কোনো খবর লেখা নেই তাতে। জলছাপ দেওয়া পাতাগুলোর নিচে রয়েছে একটি বিশেষ বার্তা, ‘টয়লেট পেপার হিসেবে ব্যবহার করুন।’
টয়লেট পেপার নিয়ে হাহাকার এই পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, লোকের বাড়ির টয়লেট থেকেও চুরি যাচ্ছে এই বিশেষ পেপার। সোনাদানা নয়, চোরের পছন্দ ওই ‘মহামূল্যবান’ কাগজটি। সিডনির এক সুপারমার্কেটে গত বুধবার টয়লেট পেপার কেনা নিয়ে এক রকম হাতাহাতি বেধে গিয়েছিল। ছুরি নিয়ে হামলা করে এক যুবক। শেষে ঝামেলা থামাতে পুলিশ ডাকতে হয়।
এর আগে হংকংয়ে তো লঙ্কাকাণ্ড ঘটে যায় টয়লে পেপার নিয়ে। একটি দোকানে আচমকাই হানা দেয় এক দল সশস্ত্র দুষ্কৃতী। অস্ত্র দেখিয়ে বলে, ‘‘যা আছে সব দিয়ে দাও, না হলে গুলি চালিয়ে দেব…।’’ বাধা দেওয়ার সাহস দেখাননি কেউ। দোকানের সব টয়লেট পেপার রোল ডাকাতি হয়ে যায়।
Posted ১০:২৬ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৭ মার্চ ২০২০
ajkerograbani.com | shalauddin Razzak
.
.
Archive Calendar