অনলাইন ডেস্ক | ১১ জুলাই ২০১৭ | ৭:৫৭ অপরাহ্ণ
আগামী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ দুটি। আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করে বিএনপিকে নির্বাচনে আনা এবং সে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া। নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ওই দুই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে এগোচ্ছেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর অশান্ত দেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরিয়ে এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের মেয়াদও শেষ করে এনেছেন।
এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। বর্তমান সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ২৩৪ জন। ২০০ বেশী না হলেও আওয়ামী লীগের ১৮০ আসনে জয় নিশ্চিত করতে চান। এই টার্গেট পূরণ করতে গিয়ে তিনি কোনো প্রকার ঝুঁকি নিতে নারাজ। নির্বাচনে জিতে আসার ঝুঁকিতে আছেন এমন অর্ধডজন কেন্দ্রীয় ডাকসাইটে নেতাও এবার ছিটকে পড়তে পারেন।
আবার আসন নিশ্চিত করতে নৌকার প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে বিএনপির বেশ কয়েক গুরুত্বপূর্ণ নেতা, সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা, শিল্পপতি ও প্রবাসী ধনাঢ্য ব্যক্তিকে।
সূত্র জানায়, বর্তমান সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ২৩৪ জন। তাদের মধ্যে মাত্র ৪০-৪৫ জন আছেন যারা নিশ্চিন্তে জিতে আসতে পারবেন। বাকিরা নানা কারণে এলাকার ভোটার ও কর্মীদের কাছে বিতর্কিত হয়েছেন। সরকারের তিনটি গোয়েন্দা সংস্থা, বাছাই করা দলীয় কর্মীদের একটি জরিপ দল, পেশাদার দুটি জরিপ সংস্থা ও আমলাদের একটি দলের জরিপ প্রতিবেদনে উঠে আসা চিত্র পর্যালোচনা করছেন স্বয়ং দলীয় প্রধান। আগামী নির্বাচনে শতভাগ নিশ্চিত জিতে আসার মতো প্রার্থী বাছাইয়ের পাশাপাশি ওই সব এলাকার বর্তমান এমপির জনবিচ্ছিন্নতা ও আগামী নির্বাচনে কেন পরাজিত হতে পারেন তার কারণও জমা পড়ছে দলীয় নেত্রীর কাছে। শেখ হাসিনার অধীনে হলেও বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে-এমন হিসাব মাথায় রেখেই দলীয় মনোনয়ন ছক কষছেন আওয়ামী লীগ প্রধান।
সূত্র মতে, এবার নির্বাচনী কৌশলও বদল হচ্ছে, তিনশ’ আসনে সম গুরুত্বের বদলে টার্গেট করা হচ্ছে নিশ্চিত জয়ের আসনগুলো। সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত রূপ পাবে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার পর। তার আগে সম্ভাব্য সব প্রার্থী ও বর্তমান সংসদের এমপিদের এলাকায় গিয়ে কাজ করার কথা বলা-ই অব্যাহত রাখবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, কিছু আসনে আগেভাগেই নিশ্চিত জিতে আসার মতো বেশ ক’জন নতুন মুখকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হতে পারে, যাতে তারা এলাকায় পরিচিত হওয়ার সুযোগ পান। এসব নতুন মুখের মধ্যে আছেন পেশাজীবী নেতা, সাবেক পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতা।
আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির এক ডজন নেতার সঙ্গে বিশেষ মহলের নিবিড় যোগাযোগ চলছে। জাতীয়ভাবে এরা বড় নেতা না হলেও তাদের স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকায় জনপ্রিয় এবং সহজে এমপি হয়ে আসার মতো। বৃহত্তর কুমিল্লায় দেখা যেতে পারে বিএনপি থেকে আসা বেশ কয়েকজন নতুন মুখ।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লা বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হলে প্রার্থী বদল হতে পারে, নতুন মুখ আসতে পারে। প্রতিটি নির্বাচনে এমন হয়। এছাড়া সংসদীয় গণতন্ত্রে আসন বড় ফ্যাক্টর। সব দলই চায়, নির্বিঘ্নে জিতে আসতে পারে এমন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে। সূত্র : পূর্বপশ্চিম