
ডেস্ক রিপোর্ট | বুধবার, ০৭ জুলাই ২০২১ | প্রিন্ট
চকলেটের নাম শুনে জিভে জল আসে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। চকলেটে বিদ্যমান সেরেটোনিনের প্রভাবে শরীরে বাড়তি উদ্দীপনা সৃষ্টি হয় যা বিষন্নতা কমাতে সাহায্য করে এবং আমাদের ইন্দ্রিয়ে ভালো লাগার অনুভূতিগুলো সক্রিয় হয়। ফলে চকলেটের লোভনীয় স্বাদে অনুরক্ত হয়ে পড়ে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই। আর ঠিক সে কারণেই বর্তমানে চকলেট পৃথিবীর জনপ্রিয়তম ফ্লেভারগুলোর একটি।
চকলেট মূলত মায়া ও আজটেক সভ্যতার অবদান। তখনকার সময় চকলেট পানীয় হিসেবে পান করা হতো। যা তৈরি করা হতো কোকোর বীজ থেকে। ৭ জুলাই আজ বিশ্ব চকলেট দিবস। ধারণা করা হয়, ইউরোপে ১৫৫০ সাল থেকে ৭ জুলাই চকলেট দিবস পালিত হয়ে আসছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় চকলেট দিবস পালিত হয় ২৮ অক্টোবর। ঘানাতে কোকো সেলিব্রেটস চকলেট দিবস পালিত হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি। তেতোমিষ্টি চকলেট দিবস ১০ জানুয়ারি, মিল্ক চকলেট দিবস ২৮ জুলাই, সাদা চকলেট দিবস ২২ সেপ্টেম্বর এবং চকলেট কভারিং দিবস ১৬ ডিসেম্বর।
দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন উপত্যকার এক বিশেষ উদ্ভিদ কোকো, যার বীজ থেকে তৈরি হয় চকলেট। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে মধ্য আমেরিকার আরো কয়েকটি দেশে প্রথম এর চাষ শুরু হয়। এরপর এই বীজ আসে আফ্রিকায়।
আফ্রিকার আইভরি কোস্ট, ঘানা, নাইজেরিয়া ও ক্যামেরুনে ব্যাপকভাবে চাষ হয় কোকোর। বিশ্বের মোট কোকোর ৬০ শতাংশ উৎপাদিত হয় ঘানা ও আইভরি কোস্টে। তবে দেশ দুটি মূলত অপ্রক্রিয়াজাত বীজ রপ্তানি করে। বিশ্বের মোট চকলেট বিক্রি থেকে যে পরিমাণ আয় হয়, কোকো বিক্রি করে তার এক–দশমাংশ আয় হয় আফ্রিকার।
চকলেট তৈরির প্রধান কাঁচামাল কোকোর বীজ। আইভরি ও ঘানাতে কোকো ফার্মে বীজ সংগ্রহ, শুকানো, ভাজা ও গাঁজন প্রক্রিয়ার কাজের জন্য পার্শ্ববর্তী হতদরিদ্র দেশ নাইজেরিয়া, নাইজার, মালি, বুরিনা ফাসো থেকে সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন অজস্র শিশু পাচার করা হয় শুধুমাত্র সস্তায় কোকো ফার্মগুলিতে কাজ করানোর জন্য।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থা (আইএলও)-এর সঙ্গে কোকো ফার্মগুলোর হারকিন এঞ্জেন প্রোটোকল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যেখানে বলা হয়েছে—কোকো ফার্মগুলোতে শিশুশ্রম হচ্ছে না তা খতিয়ে দেখতে এবং কোনো কোকো ফার্মে শিশুশ্রমের অভিযোগ পাওয়া গেলে উক্ত ফার্মের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যদিও তা নথিতেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। বাস্তবায়িত হয়নি। বিবিসির রিপোর্ট বলছে, শুধুমাত্র আইভরি কোস্টেই আট লক্ষ শিশু কোকো ফার্মে কাজ করছে। প্রতিদিন চকলেটের কাঁচামাল কোকো ফার্মে কাজ করতে গিয়ে মারা যাচ্ছে কোনো না কোনো শিশু।
পৃথিবীর অনেক দেশই চকলেটের জন্য বিখ্যাত। এরমধ্যে বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত। আধুনিক চকলেটের জনক হলেন জোসেফ ফ্রে। তিনি ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে ডাচ কোকোর সঙ্গে অপসারিত কোকো মাখন মিশিয়ে প্রথম চকলেট পেস্ট তৈরি করেন।
ইউরোপের সাধারণ মানুষের কাছে চকলেট পৌঁছতে আর তেমন দেরি হয়নি। ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে ‘ক্যাডভেরি’ নামে একটি ছোট কোম্পানি চকলেট ক্যান্ডির বক্স ইংল্যান্ডে বাজারজাত করতে শুরু করে। এর কয়েক বছর পরই নেসলে বাজারে নিয়ে আসে মিল্ক চকলেট। তারপর ক্রমান্বয়ে বর্তমানে চকলেট ব্যবসা এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে।
Posted ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৭ জুলাই ২০২১
ajkerograbani.com | shalauddin Razzak
.
.
Archive Calendar