নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইনামুল হাসানের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও নারী-শিশু নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
বুধবার রাতে আলফাডাঙ্গা থানায় এ মামলাটি হয়। মামলাটি করেন, গোপালপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আলী।
জানা যায়, প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে মঙ্গলবার উপজেলার কামারগ্রামে ইউপি চেয়ারম্যান ইনামুল হাসান ও তার ভাই মাহাবুব আলমের নেতৃত্বে কাঞ্চন একাডেমির সামনের রাস্তা বেরিগেড দিয়ে ইজিবাইক চালক হেমায়েত হোসেনকে মারধর ও তার গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওইদিন রাতে আবারো চেয়ারম্যান ইনামুলের নেতৃত্বে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী, কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী উপজেলার মালা গ্রামের হুসাইন শেখসহ ৫০/৬০ জন একত্রিত হয়ে বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাত করে। তাণ্ডবে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় স্থানীয় আলাউদ্দিন আলী, আলী মিয়া, সাখাওয়াত হেসেন, বেলায়েত হোসেন, হাসমত হোসেন কাজল, ওমর মিয়া ও সাংবাদিক মুজাহিদুল ইসলামসহ আরো কয়েকটি বাড়ি। হামলাকারীদের সবার হাতে ছিল রামদা, ছেনদা, লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্র। সময় তারা বাড়িতে থাকা নারী ও শিশুদেরকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে।
আলাউদ্দিন আলী বলেন, ‘হামলার বিষয়টি টের পেয়ে আমরা পালিয়ে ছিলাম। পরে বাড়িতে এসে দেখি বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর করে সবকিছু লুটপাট করা হয়েছে। হামলা আমাদের প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার বেশি ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গৃহহীনদের জন্য সরকারের বিনামূল্যে বরাদ্দকৃত ঘর বিতরণে মোটা অংকের টাকা লেনদেন ছাড়াও বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, শিশু কার্ড বিতরণে অনিয়ম এবং বরাদ্দের চাল আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের ঘরে জুয়ার আসর ভাড়া দেয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগও আছে। অভিযোগগুলো ফরিদপুর জেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় সরকার বিভাগ তদন্ত করছে। এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয়রা ৩১ জানুয়ারি একটি ঝাড়ু মিছিল করেছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটুক্তি এবং ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা হয়েছে। সেই সঙ্গে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনে গতবছর এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করে তার স্ত্রী।
নাম প্রকাশ না শর্তে হামলার শিকার একজন ভুক্তভোগি জানান, মামলা হওয়ার পরেও পুলিশ আসামিদের ধরছে না। তারা প্রকাশ্যে এখনো হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে যাচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।