অনলাইন ডেস্ক | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ৬:৪১ অপরাহ্ণ
রাজশাহী মহানগরীর শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার খাঁচায় রাখার দুদিন পর পালিয়ে যায় বিশাল একটি অজগর। দুদিন পর তাকে পাওয়া যায় পাশের একটি ইঁদুরের গর্তে। কিন্তু দুই মাস পর আবার পালিয়ে যায়।
দুই বছর চার মাস ১০ দিন পর সেই অজগরটি পাওয়া গেছে চিড়িয়াখানার পাশে জেলা জজের বাসভবনের আখক্ষেতে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে অজগরটি উদ্ধার করে চিড়িয়াখানার খাঁচায় ঢোকান সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
জেলা জজের বাসভবনে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা জানান, গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রথমবারের মতো তাঁরা একটি বিশাল অজগর সাপ দেখতে পান। কিন্তু সাপটি দ্রুত বাসাসংলগ্ন আখক্ষেতে ঢুকে পড়ে। এরপর রাত ১০টার দিকে আবার আখক্ষেত থেকে সাপটি বেরিয়ে আসে। এ সময় পাশেই চিড়িয়াখানার লোকজনকে সংবাদ দিলে তাঁরা গিয়ে সাপটিকে ধরেন। খবর পেয়ে ছুটে যান রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফরহাদ হোসেন জানান, অজগর সাপটি ভারতীয় রকি পাইথন প্রজাতির। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে নওগাঁর ধামইরহাটের আলতাদীঘি বন থেকে ওই প্রজাতির একটি অজগর ধরে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছিল বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ। তখন সাপটি রাখার মতো নতুন কোনো খাঁচা না থাকায় পুরাতন একটি খাঁচায় রাখা হয়েছিল। চিড়িয়াখানায় আসার দুদিন পর অজগরটি একবার পালিয়ে যায়। দুদিন পর পাশের একটি ইঁদুরের গর্তে সাপটি খুঁজে পাওয়া যায়। এরপর ওই বছরের ২৪ এপ্রিল খাঁচার ভাঙা অংশ দিয়ে সাপটি আবার পালিয়ে যায়। সেই সময় অনেক খুঁজেও অজগরটি পাওয়া যায়নি।
ডা. ফরহাদ হোসেন জানান, পালিয়ে যাওয়ার সময় সাপটি ১০ থেকে ১২ ফুট লম্বা ছিল। ওজন ছিল সাত থেকে আট কেজি। অবশেষে দুই বছর চার মাস পর চিড়িয়াখানা সংলগ্ন জেলা জজের বাসভবনের আখক্ষেতে ওই অজগরটি পাওয়া গেল। এখন সাপটি লম্বায় ১৮ ফুট হয়েছে। ওজন হয়েছে সাড়ে ১৬ কেজি।
এতদিন কী খেয়ে সাপটি বেঁচে ছিল- জানতে চাইলে ভেটেরিনারি সার্জন ডা. ফরহাদ হোসেন জানান, জেলা জজের বাসভবনের আয়তন প্রায় ৬৫ বিঘা। সেখানে ছোট ছোট পুকুর, খাল ও গর্ত আছে। ব্যাঙসহ নানা কীটপতঙ্গও আছে সেখানে। এগুলো খেয়েই অজগরটি বেঁচে ছিল। মূল বাসভবনের বাইরে যে বিশাল এলাকা সেখানে ঝোপঝাড়ও আছে। এতদিন ওই ঝোপঝাড়ে সাপটি লুকিয়ে ছিল। একদিন পেট পুরে খেলে অজগরটি সাতদিন ঘুমিয়ে থাকে। এ প্রজাতির অজগর সাধারণত বনের গাছে থাকে। গাছ বেয়ে সাপটি সোজা দাঁড়াতেও পারে।