আজকের অগ্রবাণী ডেস্ক | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ১১:১৮ অপরাহ্ণ
বঙ্গোপসাগরের ইনানী বিচ থেকে ভাসমান অবস্থায় ১৪ রোহিঙ্গা নারী-শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়। এ সময় আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ১২ জনকে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৫৩ রোহিঙ্গা নারী ও শিশু। মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আসার চেষ্টাকালে রাতের আঁধারে ট্রলারডুবিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ নিয়ে গত ২৫ আগস্টের পর থেকে দেড় শতাধিক হতভাগ্য রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করা হলো, যারা মূলত নৌকা ও ট্রলারডুবিতে মারা গেছেন।
ট্রলারডুবিতে ৮ স্বজনকে হারিয়ে হতবাক মিয়ানমারের রাখাইনের কাঠুরিয়া আব্দুস সালাম। তিনি ট্রলারডুবিতে নিজের মা, ভাই-ভাবী, ভাইয়ের এক সন্তান, বোন ও বোনের তিন সন্তানকে হারিয়েছেন।
একই ট্রলারে আসা যুবক আব্দুস সালাম জানান, বাংলাদেশি মাঝির ট্রলারে তারা অন্তত ৮০ জন ছিলেন। বঙ্গোপসাগরের টেকনাফের বাহাড়ছড়া পয়েন্টে আসার পর অতিরিক্ত যাত্রী ও বৈরি আবহাওয়ায় পড়ে তাদের ট্রলারটি ডুবে যায়।
তিনি আরও জানান, বুধবার বিকেলে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেন ৮০ রোহিঙ্গাবাহী ট্রলারটি। সাগর পাড়ি দিয়ে টেকনাফের বাহাড়ছড়ায় তাদের উঠার কথা ছিল।
ট্রলারডুবির ঘটনায় আহত ১২ জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আব্দুস সালম, রফিকুল ইসলাম ও তসলিমার নাম জানা গেছে।
উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) কাই কিসলো জানান, সাগরে ট্রলারডুবিতে এই ১৪ রোহিঙ্গা নারী-শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে। নিহত আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট মধ্যরাতের পরে রাখাইনে অন্তত ৩০টি পুলিশ চৌকি ও একটি সেনাক্যাম্পে রোহিঙ্গা যোদ্ধারা প্রবেশের চেষ্টা করে। পরে দেশটির সেনাবাহিনী জঙ্গি দমনের নামে অভিযান শুরু করে।
এরপর এখন পর্যন্ত জাতিসংঘ জানিয়েছে, প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম সেনা নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অভিযানে ৫ হাজারের উপরে রোহিঙ্গা নিহতের খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। যদিও মিয়ানমার সরকারের দাবি, নিহতের এই সংখ্যা ৪শ’।