ডেস্ক | ০৩ মার্চ ২০২০ | ১১:৪০ অপরাহ্ণ
সরকারি দলের সংসদ সদস্য আসলামুল হকের গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বিআইডব্লিউটিএ।
মঙ্গলবার বুড়িগঙ্গার পশ্চিম পাড়ের চরওয়াশপুরে বুড়িগঙ্গা তীরে মাইশা গ্রুপের একটি প্ল্যান্টের কাছে দখল করা দেয়াল ও দুটি স্থাপনা ভেঙে দেয়া হয়।
বিআইডব্লিউটিএ এর উপ-পরিচালক মো. শহিদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মাইশা প্লান্টটির মালিক ঢাকা-১৪ এর সাংসদ আসলামুল হক।’
ঢাকার মিরপুর এলাকার বাসিন্দা ২০০৮ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন; এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হন তিনি।
বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ বলেন, চরওয়াশপুরে জেটি নির্মাণের অনুমতি থাকলেও প্ল্যান্ট নির্মাণের অনুমতি ছিলো না। এছাড়া নদীর তীরে দেয়াল ও ছোট ছোট দুটি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল। সেগুলো ভেঙে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
এদিকে উচ্ছেদের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন সংসদ সদস্য আসলামুল হক। তিনি উচ্ছেদ কার্যক্রমের বিরোধিতা করেন।
গণমাধ্যমকে তিনি জানান, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বিআইডব্লিউটিএর অনুমতি নিয়েই করা হয়েছে। এটি বৈধ জায়গা তার। বিআইডব্লিউটিএর বিরুদ্ধে আদালতে যাবেন বলেন জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন তার দাবির প্রেক্ষিতে বলেন, এটি নদীর জায়গা। এখানে বেশ কয়েকটি বিধান অমান্য করা হয়েছে। এখানে নদীর জায়গা বালি দিয়ে ভরাট করে আইন অমান্য করা হয়েছে। এখানে তারা শুধু পাওয়ার প্ল্যান্টের আবেদন করেছে। আবেদন আর অনুমতি এক জিনিস না।
একেএম আরিফ উদ্দিন আরো বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী জাতি ধর্ম, বর্ণ , ধনী, গরিব নির্বিশেষে বৈষম্যহীনভাবে সবাইকেই নদীর অবৈধ দখল থেকে উচ্ছেদ করা হবে।
গত বছরের ২৯ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৬৮ কার্য দিবসে প্রায় ৭ হাজার স্থাপনা উচ্ছেদ করে ১৫০ একর নদীর জমি দখল মুক্ত করা হয়।
মাইশা পাওয়ার প্লান্ট কর্তৃপক্ষের মতে, জেটি স্থাপনের জন্য বিআইডব্লিটিএ’র অনুমতি নেয়া হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ বলছে, জেটি স্থাপনের জন্য প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে একাধিকবার বিআইডব্লিউটিএ’র কাছে আবেদন করা হলেও সংস্থাটি সে অনুমতি দেয়নি।
মাইশা পাওয়ার প্লান্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের স্থাপনাটি নদীর সীমানার বাইরে। এমন ছাড়পত্র খোদ বিআইডব্লিউটিএ তাদের দিয়েছে। ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট সংস্থাটির তৎকালীন উপ-পরিচালক (বন্দর) মো. সুলতান আহম্মদ স্বাক্ষরিত ঢাকা ওয়াস্ট পাওয়ার প্লান্ট, ওয়াসপুর, বছিলা, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা নামক প্রকল্প সম্পর্কে প্রতিবেদক প্রকাশ করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে, ‘প্রকল্পটি বুড়িগঙ্গা নদীর তীর সংলগ্ন এলাকায় হলেও কর্তৃপক্ষের ফোরশোর সীমানা অর্থাৎ বুড়িগঙ্গা নদীর সীমানার বাইরে অবস্থিত।‘
এদিকে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, পাওয়ার প্লান্টটি নির্মাণের সময় দক্ষিণ পাশে চর ওয়াসপুর গ্রামের অনেক মালিকানা জমি মাইশা গ্রুপ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। যার ওপর পাওয়ার প্লান্টটি স্থাপন করা হয়েছে। জমি কিনে নেয়ার কথা থাকলেও এক যুগের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও অনেক জমি মালিক তাদের টাকা বুঝে পাননি বলে স্থানীয়ভাবে প্রচার রয়েছে।