অগ্রবাণী ডেস্ক | ০১ আগস্ট ২০১৭ | ১:২৫ পূর্বাহ্ণ
‘মেন্টাল’, ‘বসগিরি’ ও ‘ধ্যাততেরিকি’ ছবি পরিচালনা করে আলোচনায় আসেন চিত্রপরিচালক শামীম আহমেদ রনি। এরপর ‘রংবাজ’ নামের আরেকটি ছবি নির্মাণ করার সময় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। পরিচালক সমিতি তাকে নিষিদ্ধ করে। বিতর্কে জড়ান তিনি। এতো গেলো আলো ঝলমেলে জীবনের ফিরিস্তি। তবে ব্যক্তিজীবনেও কম যান এ পরিচালক।
সম্প্রতি ফেসবুকে তার স্ত্রীর লেখা এক চিঠি নিয়ে তিনি আবার আলোচনায় এসেছেন। দাম্পত্য জীবনে স্ত্রী তমা খানের সঙ্গে তিনি যে কহলে জড়িয়ে পড়েছেন শাকিব খানের কাছে লেখা স্ত্রীর সেই চিঠিতে তারই ইঙ্গিত রয়েছে। তমা তার ফেসবুকে গত ২৯ জুলাই চিঠিটি লিখেছেন। সেটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
`আজকে আমি অত্যন্ত দু:খ নিয়ে কিছু কথা ফেসবুকে সবার সঙ্গে শেয়ার করতে যাচ্ছি। যদিও আমার ফ্যামিলি থেকে পরিষ্কার করে বলে দেওয়া হইছে, তারা কোনো ডিসিশনে না আসা পর্যন্ত আমি যেনো আমার ব্যক্তিগত বিষয় টিষয়ে ফেসবুকে আর না লিখি। কিন্তু আমার আর চুপ করে থাকার মতন অবস্থা নেই! এভাবে চুপ করে থাকতে থাকতে আমি হয়তো একদিন স্ট্রোক করে মরে যাবো!
তাই, ফ্যামিলিকে ধরতে গেলে অগ্রাহ্য করেই আমি আমার না বলা কথাগুলো ফেসবুকে বলবো! কারণ আমিও তো একজন মানুষ… আমারো কিছু মতামত থাকতে পারে… কথা থাকতে পারে…. যেগুলো অনেকেরই জানা নেই হয়তো। জানানো উচিত সবাইকে….যেখানে জীবনটাই আমার সেখানে কথাগুলোও নিশ্চয়ই আমার।
(জানিয়ে রাখা ভাল, আমি কোনো দুধে ধোওয়া তুলসীপাতা না অথবা পীরবাবা না কিংবা নায়িকা শাবানাও না!)
যাইহোক আমি এখন কথাগুলো বলবো একটা চিঠির মাধ্যমে। এবং চিঠিটা লিখা হবে একজন সুপারস্টার এর উদ্দেশ্য ( বিশ্বাস করুন বন্ধুগণ, সস্তা পাবলিসিটি অথবা আলোচনায় আসবার জন্য আমার এই চিঠি লিখা না। আমি অতি সাধারণ একজন মানুষ। আর পাবলিসিটির জন্য অথবা আলোচনায় এসে আমার লাভটাই বা কি!? এগুলো পাওয়ার জন্য কিছু করতে হলে অনেক আগেই অনেক কিছুই করতে পারতাম!)
যাইহোক, এখন আসল কথায় আসি। মানে চিঠিটা লিখা শুরু করি। আশা করি খুব শীঘ্রই কথাগুলো প্রাপকের কাছে পোঁছে যাবে।
শ্রদ্ধেয় দুই বাংলার সুপারস্টার, ভীষণ ক্ষমতাবাণ, অত্যন্ত সফল একজন মানুষ এবং আমার একসময়ের খুব কাছের/প্রিয় বড়ভাই “শাকিব খান”।
আমার শুভেচ্ছা নিবেন। পর সমাচার এই যে, আপনার ব্যক্তিগত যে ফোন নম্বরটা আমার কাছে ছিলো ওটা বন্ধ পাচ্ছি কিছুদিন ধরে। এরপর আপনার খুব কাছের একজন মানুষের কাছে আপনার কন্টাক্ট নম্বর চেয়েছিলাম। সে সম্ভবত ইচ্ছা করেই দেয়নি অথবা সত্যি সত্যি খুঁজে পায় নি!
বাই দ্য ওয়ে, এই চিঠিটা আপনাকে লিখার পেছনে কয়েকটা কারণ আছে…হয়তো ২-১ টা কারণ আপনি আন্দাজও করতে পারছেন। কিন্তু যে কারণগুলা আপনি আন্দাজ করতে পারছেন না সেগুলো হলো। ‘মেন্টাল’ সিনেমা থেকে শুরু করে ‘রংবাজ’ সিনেমা বানানো পর্যন্ত যে লোকটা দীর্ঘ ৩ বছর আপনার সার্বক্ষণিক সঙ্গী হিসেবে ছিলো (এখনো আছে সম্ভবত) তিনি গত ৪ মাস ধরে আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখছেন না।
আমি কোথায় আছি / কিভাবে আছি এটা নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নাই। শুনেছি তিনি নতুন একজন প্রেমিকা জুটিয়েছেন। এবং তার সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করে যাচ্ছেন।( যেখানে আমাদের মধ্যে কোনো ডিভোর্স হয় নাই) সেই প্রেমিকাটিকে নায়িকা বানিয়ে শুনেছি তিনি নতুন সিনেমাও বানাতে যাচ্ছেন।
ইতিমধ্যে আবার তার নতুন নায়িকার কিছু অশ্লীল ছবি/ভিডিও কেউ একজন আমাকে একটা ফেক আইডি থেকে পাঠিয়ে জানিয়েছেন উনিও নাকি বিবাহিত!!এবং এই সমস্ত নোংরা জিনিসপত্র মিডিয়াতে ছড়িয়ে দিতে ফেইক আইডিধারী রীতিমত আমাকে অনুরোধ করেছেন! আমি ফেক আইডিধারীকে জানিয়ে দিয়েছি- ‘দু:খিত’!
(এদের কাছে প্রেম-ভালবাসা ভেংগে যাওয়া মানে ছবি/ ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া। উফফ কি জঘন্য পরিস্থিতি!
এনিওয়ে, প্রেমিকাটির/নতুন নায়িকারটির লুক এক সময়ের অতি জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা ‘ময়ুরী’র নিউ ভার্সন !এগুলা অবশ্য আমার নিজের কথা না..তার(পরিচালকটির) কিছু পাগলটাইপ ফ্যানেরা নিয়ম করে আমাকে এসব আপডেট দেয় ইনবক্সে। যদিও এইগুলা জানার আমার তেমন কোনোই আগ্রহ নেই!!
এই সমস্ত কারণে আমার ম্যাসেঞ্জার আনস্টল করে রাখতে হয়) ইভেন তার ফ্যানেরা আমাকে এগুলোও লিখে পাঠায় যে…. তাদের প্রিয় পরিচালকের ভাত পুড়ে যাচ্ছে, তাকে নিষিদ্ধ করা হইসে, সে হাসপাতালে ভর্তি ব্লা ব্লা….কিন্তু আমি কেনো তার পাশে নেই!? তাদেরকে আমি কিভাবে জানাই যে…সে নতুন যে বাসাটা ভাড়া নিসে সেটার ঠিকানা পর্যন্ত আমাকে দেওয়া হয় নাই। এগুলো খুব লজ্জার কথা, অপমানের কথা…!
যাইহোক, আপনাকে চিঠিটা লিখার মূল কারণে ফিরি আবার….বর্তমানে সে তার নিজের ফ্যামিলির সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ রাখছে না। তার মা- বাবা প্রায় প্রতিদিন আমাকে ফোন দেয়। আমার খোঁজ-খবর নেয়। অনেক কান্নাকাটি করে। আমার নিজের কথা বাদ দিলাম….যেহেতু আপনি আমাকে তার সুবাদেই ‘ছোটবোন’ বলে ডেকেছেন এমনকি ‘তুই’ সমোন্ধণও করেছেন কিছুদিন আগ পর্যন্ত…. সেই হিসেবে তাকে দয়া করে আমার হয়ে বলবেন যে ‘আমাকে তার ভালবাসার দরকার নাই যেহেতু আমি পুরনো হয়ে গেসি…..ঠিকাছে!
সে তার প্রেমিকা( বউও হতে পারে) নিয়ে সুখে থাকুক। কিন্তু সে যেনো তার নিজের বাবা-মা’ র একটু খোঁজ-খবর রাখে। তারা তো তাকে জন্ম দিয়েছেন। তারা খুব অসহায়। তারা চায় তাদের একমাত্র পুত্রসন্তান একজন ভাল মনোরোগ চিকিৎসক এর পরামর্শ নিক। সে সুস্থ ও স্বাভাবিক একটি জীবনযাপন করুক। সে তাদের একমাত্র পুত্রসন্তান। অন্তত এটা তার বোঝা উচিত….! আপনার ছোটবোন হিসেবে আপনার কাছে এটাই আমার প্রথম এবং একমাত্র দাবী।
আর আমি কিন্তু অনেক ভেবে-চিন্তেই আপনার কাছে কথাগুলা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি… কারণ বিগত ৩ বছরে আমি বুঝে গিয়েছি শুধুমাত্র ‘আপনি’ ছাড়া সে অন্য কারুর কথা শুনতে রাজি না। শুনবেও না। কারণ আমি তাকে খুব ভাল করে চিনি!
হাস্যকর হলেও সত্যি, ৪ মাস আগেও আমার সাথে যখন সে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলতো….. তখন সে সেইম আপনার টোনেই এবং আপনার মতন অঙ্গভঙ্গি করেই কথা বলতো। মনে হত, একজন জ্বলজ্যান্ত ‘শাকিব খান’ আমার সাথে সংসার করসে! মোটকথায়, সে আপনাকে ব্যক্তিমানুষ হিসেবে ‘গুরু’ মানে। এটা আমার গত ৩ বছরের অবজারভেশন।
বলাবাহুল্য আজ থেকে ৭-৮ বছর আগে সে ‘ ওয়াহিদ তারেক’ নামক একজন নির্মিতাকেও ‘গুরু’ মানতো। সে ছিল সেই নির্মিতার ফাস্ট এডি। আমার অভিনীত প্রথম টিভিসি ছিল সেই নির্মাতার নির্দেশনায়। তবে তাকে আমি এখনো গুরু মানি, অনেক শ্রদ্ধা করি। আমার প্রথম শিক্ষক বলে কথা! যাইহোক, ওই সময়টায় আবার এই মানুষটাই কিন্তু ‘ওয়াহিদ তারেক’ কে অনুকরণ করতো। আমি খুব হাসতাম তখন ওগুলো দেখে। এখন মনে হয়, ওই সময়টাই ছিল আমার স্বর্ণযুগ।
অনেক বাড়তি আলাপ করে ফেললাম বড়ভাই! আপনার হয়তো এত বড় চিঠি পড়ার সময় নাই…. কেউ হয়তো আপনাকে পড়ে শোনাবে…. জানি…!
স্যরি….তাহলে আরেকটু বাড়তি কথা তবে বলেই ফেলি। আপনার কি মনে পরে বড়ভাই, রাত ২টার দিকে একদিন ফোনে আপনাকে খুব করে ঝেড়েছিলাম একটা বিশেষ কারণে….এইজন্য আপনি আমাকে ‘দজ্জাল’ বলেছিলেন রনির কাছে অবশ্য পরে শুনেছি! আমি কিন্তু ওসব কিছুটা মজা করেও বলেছিলাম! আমি আসলে তখন বুঝিনি আপনার সঙ্গে ওইভাবে কথা বলার রাইট আসলে কারুরই নাই। পারলে ক্ষমা করে দিয়েন আমাকে।
আর এখানেই চিঠির ইতি টানবো ।
একজন সুপারস্টার হিসেবে এমন সম্মান নিয়েই বেঁচে থাকুন, ব্যক্তিজীবনেও সাফল্য ও সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকুন…….সেইসাথে অনেক অনেক শুভকামনা রইল। (আপনার ব্যক্তিজীবন নিয়ে কিছু বলার ইচ্ছা নাই কারন ওটা আপনার ব্যক্তিজীবন! যদিও এর আগে অনেক কিছুই বলে ফেলেছি.. তবে সুপারস্টার হিসেবে
বিনীত
আপনার একসময়কার ছোটবোন ‘তমা’
(বি.দ্র. আশা করছি কথাগুলা লিখিতভাবে নিষিদ্ধ কিন্তু তলে তলে ‘রংবাজ’ সিনেমার পুরো কাজ চালিয়ে যাওয়া পরিচালক ‘শামীম আহমেদ রনি’ কে বুঝিয়ে বলবেন। কারণ আপনি নিজেই যেহেতু ‘রংবাজ’ সিনেমার প্রযোজক ( রনির মুখে শুনেছি) .. সেই হিসেবে ধরে নিচ্ছি আপনারা এখন একসঙ্গে কলকাতায় আছেন। …তার বাবা/মায়ের কান্না আমি আর নিতে পারছিনা…..আমাকে তারা কি সান্তনা দিবেন?…..উল্টো আমিই তাদের সান্তনা দিয়ে পেড়ে উঠতে পারছিনা!?!
বিশ্বাস করেন বড়ভাই!!)
তমার এ স্ট্যটাস দেওয়ার পর পরিচালক শামীম আহমেদ রনি ফেসবুকে তমার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে আরেকটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন গতকাল। সেটি হলো-
কাউকে ছোট করতে চাই না… কিন্তু যারা তাকে উৎসাহিত করছেন,সাপোর্ট দিচ্ছেন তাদের অনেকেই সত্যিকারের বাস্তবতা জানেন… পুরো সত্যিটাও জেনে যারা আংশিক সত্যিকে সাপোর্ট দিচ্ছেন তাদের সাথে একসময় সম্পর্ক ছিলো, ভাবতেই কেমন জেনো লাগছে… আরে ভাই, এতো কষ্ট করা লাগবে না আপনাদের… ক্যারিয়ার তো আমার শেষই প্রায়… কাজেই মেধাটা এবার অন্য কোথাও লাগান… আমার বেলায় আপনারা সাকসেস হইছেন…দয়া করে নোংরামীটা এবার বন্ধ করুন… আর কতো রে ভাই?
শুধু মনে রাখবেন, যা করবেন তার ফল অবশ্যই পাবেন… কোন না কোন ভাবে… আপনাদের মিডিয়া নিয়ে আপনারাই থাকেন… আমিই কুইট করলাম… তবু আমায় আমার মতো থাকতে দিন প্লিজ… অবশ্যই ফিল্মে আমি যে’কটা দিন ছিলাম দাপিয়ে বেড়াইছি, সেটা আমার যোগ্যতা দিয়েই… এবং অবশ্যই আপনারা সার্থক।
একটা নতুন মেকারের এই দাপিয়ে বেড়ানো আপনাদের সহ্য হয়নি বলেই আপনারা আমাকে “ডেড হর্স” ও বানিয়ে ফেলতে পারছেন… অভিনন্দন আপনাদের… এবং তাকেও অভিনন্দন যে আপনাদের লাটিম হয়ে ঘুড়ছে… জীবন তার আরো কফিময় হোক, দোয়া রইলো… (বিঃদ্রঃ – তার ভাষ্য অনুযায়ী ডিভোর্স টিভোর্স কিছুই হয় নাই, তবে আমার প্রশ্ন, বিবাহিত মেয়ের ফেইসবুকের রিলেশনশিপ স্টাটাস “সিঙ্গেল” দেওয়া কেন? প্রশ্নের উত্তর চাই না।ভালো থাকুক সবাই)