আজকের অগ্রবাণী ডেস্ক: | ১৮ জুন ২০১৭ | ৮:১৫ অপরাহ্ণ
রাজধানীর গুলশান এলকায় অভিযান চালিয়ে একটি বিলাসবহুল বিএমডব্লিউ গাড়ি জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের একটি টিম। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে প্রিভিলেজড পার্সন বা কূটনীতিক সুবিধায় আনা হয়েছিল এই গাড়িটি। আজ রোববার সকালে গুলশানের ১১৭ নম্বর রোডের ৯/সি বাসা থেকে কালো রঙা গাড়িটি জব্দ করা হয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষে (বিআরটিএ) যোগাযোগ করে প্রাথমিকভাবে গাড়িটির কাগজপত্র ভুয়া বলে জানা গেছে। গাড়িটির বর্তমান বাজারমূল্য আনুমানিক ১ কোটি টাকা। এই বিষয়ে তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও শুল্ক গোয়েন্দার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। গাড়িটির ব্যাপারে ইউএনডিপির মেজর শরিফ নামে একজন কর্মকর্তা অবগত আছেন বলেও শুল্ক গোয়েন্দার টিমের কাছে দাবি করেন সালমান কালাম। এমনকি তিনি গাড়িটি জব্দ করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেও তৎক্ষণাৎ ওই মেজর শরিফ নামের ব্যক্তিকে জানাচ্ছিলেন।
আজ সন্ধ্যায় বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান। তিনি বলেন, শুল্ক গোয়েন্দার চলমান চোরাচালান ও শুল্ক ফাঁকি প্রতিরোধে সকালে গুলশানে অভিযান চালিয়ে বিএমডব্লিউ গাড়িটি জব্দ করা হয়। গাড়িটির মালিক ইন্টারন্যাশনাল রিলোকেশন অ্যাসিসটেন্স সার্ভিসেস ও কালাম রিয়েল এস্টেট সার্ভিসেসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. সালমান কালাম।
গাড়িটি জব্দ করার সময় মালিক আমদানি বা ক্রয় সংক্রান্ত কোনো দলিল শুল্ক গোয়েন্দার তদন্ত দলকে দেখাতে পারেননি বলে জানান ড. মঈনুল খান। তিনি জানান, সালমান কালামের বক্তব্য অনুযায়ী তার ভাড়াটিয়া নেপালি নাগরিক সন্তোষ ধুঙ্গানা গাড়িটি ব্যবহার করতেন। ধুঙ্গানা জাতিসংঘের ইউএনডিপির নিরাপত্তা বিভাগের নিরাপত্তা পরামর্শক হিসেবে বাংলাদেশে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু তিনি গত ২০১৬ সালের প্রথমভাগে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।
শুল্ক গোয়েন্দার টিমটির বক্তব্য, গাড়িটিতে কূটনৈতিক সুবিধার অপব্যবহার করা হয়েছে। গাড়ির চেসিস নম্বর সংগ্রহ করে প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গাড়িটি বাংলাদেশে প্রিভিলেজড পার্সন কোটায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা হলেও পরবর্তীতে কাস্টমস আইনের বিধান অনুযায়ী সুষ্ঠুভাবে এটির নিষ্পত্তি না করে ধুঙ্গানা স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন। এছাড়া ধুঙ্গানা অবৈধভাবে গাড়িটির বর্তমান ব্যবহারকারী সালমান কালামের মতো নন-প্রিভিলেজড পার্সনর কাছে হস্তান্তর করে এর মাধ্যমে অনৈতিক আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন, যা শুল্ক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ওই টিম জানায়, শুল্ক গোয়েন্দার অভিযান চলতে থাকায় এই গাড়ি প্রায় ৬ মাস যাবত গুলশানের ওই বাসার গ্যারেজে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।