অগ্রবাণী ডেস্ক | ২৪ মে ২০১৭ | ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ
ঘটনাস্থল রাজধানীর ধানমণ্ডি থানা এলাকার ছায়ানটের সামনের রাস্তা। সেই রাস্তা ধরে যাচ্ছিল চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া একটি মেয়ে। হঠাৎ সাদা রঙের একটি গাড়ি তাকে ধাক্কা দেয়। এর পরপরই আশপাশের লোকজন গাড়িটিকে আটক করে। এর পরই দেখা যায়, গাড়িটির চালকের আসনে বসা ছিল ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া এক কিশোর। তার পাশেই বসা চালক। সেই চালকের উদাসীনতায় ঘটে এই দুর্ঘটনা।
ধানমণ্ডি থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পর পুলিশ গাড়ির চালক ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরসহ গাড়িটি থানায় নিয়ে যায়। দুর্ঘটনার শিকার মেয়েটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।
পুলিশের ভাষ্য, মেয়ের বাবা অভিযোগ না করায় কিশোর ও গাড়ির চালককে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর ট্রাফিক আইনে মামলা দায়ের করে গাড়ির মালিকের কাছে থেকে জরিমানা আদায় করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ জানান, আহত মেয়ের বাবা অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আর ছেলে যেহেতু অপ্রাপ্ত বয়সের, সে কারণে মোটরযান আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে। এরপর ওই ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ওসি আরো বলেন, ‘মেয়ের বাবা আর ছেলের বাবা নাকি বন্ধু। তাঁরা পূর্বের পরিচিত। আমরা তাঁদের থানায় নিয়ে এসে বলেছিলাম যে মামলা দেন। কিন্তু মেয়ের বাবা তা করেন নাই।’
মেয়ের বাবার পেশা কী তা জানতে চাইলে ওসি বলেন, সেটা তাঁর জানা নেই। তবে ছেলের বাবা গার্মেন্টসের ব্যবসা করেন।
ঘটনার সময় গাড়ির চালক ভেতরে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে ওসি বলেন, মোটরযান আইনে মামলা দিয়ে জরিমানা নিয়ে চালককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস
ঘটনা সম্পর্কে আজ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন রাফিউজ্জামান সিফাত নামের এক ব্যক্তি। সেই স্ট্যাটাসে ব্যাপক লাইক ও কমেন্ট পড়েছে। ওই স্ট্যাটাসে সিফাত বলেন, “আজ সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে ছায়ানটের সামনে একটি গাড়ি ছোট এক বাচ্চা মেয়েকে চাপা দিয়ে প্রায় ১০ হাত দূরে পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়।’
‘গাড়ি চালাচ্ছিল ক্লাস ফোরে পড়ুয়া এই ছেলেটি! সে ACADEMIA-র ছাত্র। ড্রাইভার তিন নম্বর ছবিতে, সে পাশে বসে ছিল। আলালের ঘরের দুলাল শখ করেছে গাড়ি চালাবে।
স্কুলে যাওয়ার আগে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে একটু চিল (আনন্দ) না করলে পড়াশোনা মাথায় ঢুকে না। বড়লোক বাপের ছেলের হুকুম, ড্রাইভার ক্লাস ফোরের এই ছেলের হাতে স্টিয়ারিং তুলে দেয়। ছেলেটি চাপা দেয় বাচ্চা মেয়েটিকে।
‘বাচ্চা মেয়েটির শেষ অবস্থা জানা নেই। ধানমণ্ডি থানার ওসি এসে তাদের নিয়ে গেছে। প্রাথমিক অবস্থায় ছেলেটি বলছিল, তার বাবা বিদেশ। আসলে মিথ্যা, ছেলেটির বাবা দেশেই আছে। ছেলেটি নাকি বারবার বলছিল, ‘আমাকে থানায় নিয়ে যান, সেখানেই ব্যবস্থা করব।’
‘অবস্থা তো অবশ্যই হবে। বড়লোক বাবার ছেলে, ম্যানেজ হয়ে যাবে। বড়লোক বাপের জোয়ান পোলা বনানী রেপ কেসের আসামি সাফাত একটু আধটু রেপ টেপ করে, তেমনি ক্লাস ফোরের ছেলে স্কুলে যাওয়ার আগে গাড়ি ড্রাইভ করে মানুষ চাপা দিয়ে একটু চিল টিল করে!
‘হায়রে আমার সোনার বাংলাদেশ। দায়টা আমাদের, দায় আমাদের বড়লোক নামধারী অভিভাবকদের।
‘সন্তান জন্ম দিলেই বাবা-মা হয় না, মানুষও করতে হয়।”