আজকের অগ্রবাণী ডেস্ক | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ৯:৫৪ অপরাহ্ণ
এলাকায় ইয়াবা ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় রাজধানীর আদাবরে ছাত্রলীগ নেতা মশিউর রহমান মশুকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার বাবা এবং সংগঠনটির এক নেতা।
মশুর বাবা জুলহাস মিয়া এবং আদাবর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদের ভাষ্য, লেদু হাসান ও তার সহযোগীদের ইয়াবা ব্যবসায় বাধা দেওয়াতেই খুন হতে হয়েছে মশুকে।
রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শেখেরটেক ১০ নম্বর সড়কে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয় মশুকে। স্থানীয়রা জানান, রাতে মোটর সাইকেলে করে যাওয়ার পথে কয়েকজন রড ও লাঠি নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মশুকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মশুর বাবা জুলহাস মিয়া সোমবার একটি করে মামলা করেছেন। সেখানে লেদু হাসান, মোল্লা স্বপন, সেলিম, সাগরসহ আটজনকে আসামি করা হয়েছে বলে আদাবর থানার এসআই হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন।
মোল্লা স্বপন এর আগে মশুর বিরুদ্ধে মারামারির অভিযোগে একটি মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় মশু জামিনে ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার বাবা।
আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে আদাবর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন।
একদিন আগে হত্যার হুমকি
মশুর বাবা জুলহাস মিয়া জানান, সেলিমের মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় লেদু হাসান তার ছেলেকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, “গত শনিবার শেখেরটেকে সেলিমের বাসা থেকে লেদু বের হওয়ার সময় মশুর সাথে দেখা হয়। এসময় সেলিমের কাজে বাধা না দিতে মশুকে সতর্ক করে লেদু।
“তাদের মধ্যে এই গণ্ডগোল মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলে লেদুর এক পরিচিত লোক রোববার মশুকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে।”
লেদু থানা যুবদলের আহ্বায়ক দাবি করে থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদ বলেন, “লেদু হাসান, সেলিম, সাগর, মোল্লা স্বপনসহ এলাকার কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে। লেদুর বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ তার লোকজনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মাদক মামলা রয়েছে। পুলিশ বেশ কয়েকবার তাদের গ্রেপ্তারও করেছিল।
“এদের ইয়াবা ব্যবসায় সব সময় বাধা দিত মশু। কখনো সরাসরি, কখনো পুলিশকে তথ্য দিয়ে।”
গত শনিবার লেদুর কাছ থেকে মশুর হুমকি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে রিয়াজ বলেন, “দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং মশুকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হলে মশুও তাকে জানিয়ে দেয়, দিন পাল্টেছে সহজে মেরে ফেলা যায়না।”
রোববার হত্যাকাণ্ডের পর মশু আদাবর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন বলে জানা যায়।
তবে সোমবার থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদ জানান, তার কমিটির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন মশু।
মশুকে আদাবর থানা ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক বলা হলেও বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আদাবর এলাকার বাসিন্দা গাজী ইমরান মাহমুদ দুলাল।
তিনি বলেন, “২০১১ সালে আদাবর থানা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে কিনা সেটা জানা নেই।”
আর রাজনীতিতে ছেলের জড়িত থাকার কথা জানলেও কোন দলে, কী পদে মশু ছিলেন, তা জানতেন না বলে দাবি করেছেন জুলহাস।
তার ভাষ্য, চার বছর আগে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশলে ডিপ্লোমা পাস করে বের হলেও কোনো কাজ করতেন না মশু।
“আমার ছেলে রাজনীতি করত, তবে কোন দলে বা কোন পদে ছিল জানা নেই।”