অগ্রবাণী ডেস্ক | ০১ জুলাই ২০১৭ | ২:২১ অপরাহ্ণ
দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূলের জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের প্রয়োজন বলে মনে করে বিএনপি।
আজ শনিবার সকালে গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার এক বছর উপলক্ষে জঙ্গিদের হাতে নিহত দেশি-বিদেশিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে এ তাগিদ দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতি অসাম্প্রদায়িক। হলি আর্টিজানে হামলার সেই ঐতিহ্যের ওপর একটি কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। দেশি-বিদেশের এতগুলো মানুষকে হত্যা করে জঙ্গিরা কলঙ্কের তিলক এঁকে দিয়েছে। একে মোকাবিলা করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে, এটাই আমাদের প্রত্যয়।’
জঙ্গিবাদ নির্মূলে সমন্বিত উদ্যোগে কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, উগ্রবাদের যে নেটওয়ার্ক আমাদের ওপর চেপে বসেছে তা নির্মূলে সরকারের পক্ষ থেকেই এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। কিন্তু আমরা সে ধরনের কিছু দেখছি না। এটা কোনো একক ব্যক্তি বা সংগঠনের বিষয় নয়, সমগ্র জাতির বিষয়।
‘যখনি বলা হয় জঙ্গিবাদ নির্মূল হচ্ছে, তারপরই দেখা যায় কোথাও না কোথাও আবার জঙ্গিবাদ থাবা দিচ্ছে। ফলে রহস্য থেকে যাচ্ছে। আমরা চাই, এ নিয়ে সব ধরনের রহস্যের সমাধান হোক, যাতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর না ঘটে’, যোগ করেন রিজভী।
এর আগে বিএনপির একটি দল হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় নিহতদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
আজ সকাল থেকে রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর রোডের এ রেস্তোরাঁয় নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বিদেশি কূটনীতিক, উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, নিহতদের পরিবারের স্বজনসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ উপলক্ষে আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চার ঘণ্টার জন্য হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ সবার জন্য উন্মুক্ত রাখার কথা রয়েছে।
সকাল ৮টার কিছু পরে প্রথমে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন, জাপানের রাষ্টদূত মাশাতো ওয়ানাতাবে এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি মিকিও হাতাডেয়া। তাঁরা শ্রদ্ধাস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে অল্প সময় নিয়ে হলি আর্টিজান ত্যাগ করেন।
তারপরই রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুল হাতে শ্রদ্ধা জানাতে আসে হলি আর্টিজানে।
বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার সর্ববৃহৎ এ ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ১ জুলাই। সেদিন ছিল শুক্রবার। রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর রোডের এ রেস্তোরাঁয় পাঁচজনের একটি জঙ্গিদল অতর্কিত হামলা চালায়। রেস্তোরাঁয় থাকা ২০ জন বিদেশি নাগরিকসহ ৩০-৩৫ জনকে জিম্মি করে রাখে এবং রাতভর হত্যাযজ্ঞ চালায়।
পরের দিন শনিবার সকালে রেস্তোরাঁয় জিম্মিদের উদ্ধারে কমান্ডো অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী। তবে এর আগে শুক্রবার রাতেই জঙ্গিদের সঙ্গে গোলাগুলিতে ডিবির সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন খান নিহত হন। অভিযান শেষে যৌথ বাহিনী বিদেশি নাগরিকসহ মোট ১৩ জনকে জীবিত এবং মোট ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত ২০ জনের মধ্যে দুজন বাংলাদেশি, একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান, নয়জন ইতালিয়ান, সাতজন জাপানি ও একজন ভারতীয় নাগরিক ছিলেন।