ডেস্ক | ১৭ মার্চ ২০২০ | ৭:৩১ অপরাহ্ণ
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির শুরুর পর থেকে ঝাঁজ কমা শুরু হয়েছে এই নিত্যপণ্যটির। রোববার (১৪ মার্চ) হিলি দিয়ে পেঁয়াজের প্রথম চালান আসার খবরে পাইকারি-খুচরা বাজারে কেজি প্রতি দুই থেকে তিন টাকা দাম কমেছে। কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পেরে সাধারণত ক্রেতারা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন।
রাজধানীর শ্যামবাজারে দেখা গেছে, সোমবার ও মঙ্গলবার প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩২ টাকায়। গত সপ্তাহে যার দাম ছিল ৩৩-৩৫ টাকা। এদিকে, কারওয়ানবাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ টাকায়। গত সপ্তাহে ৪৩-৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর উভয় বাজারেই আমদানি (মিয়ানমার-মিসর-তুরস্ক থেকে আমদানি) পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। গত সপ্তাহেও একই দামে বিক্রি হয়েছে আমদানি পেঁয়াজ।
জানতে চাইলে শ্যামবাজারের ‘পেঁয়াজ-রসুন আমদানিকারক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক ও মেসার্স রাজবাড়ি ভান্ডারের মালিক হাজী মো. মাজেদ বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তাই দামও অনেক কমেছে। এতে ক্রেতারাও স্বস্তিবোধ করছেন। হঠাৎ শোনা যাচ্ছে, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। এতে দেশি পেঁয়াজের দামের ওপর প্রভাব পড়েছে। দুদিনের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজির দাম ৩ টাকা থেকে ৫ টাকা কমে এসেছে।’
হাজী মো. মাজেদ আরও বলেন, ‘এখন কৃষকপর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা রাখা হচ্ছে। এতে কৃষক কিছুটা লাভবান হচ্ছেন। দেশি পেঁয়াজের চেয়ে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কম হলে কৃষক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এবার তারা ক্ষতিগ্রস্ত হলে আগামী বছর পেঁয়াজ কমে যেতে পারে। এরফলে আমদানির ওপর নির্ভরশীল হতে হবে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকায় ঠেকতে পারে। ’
রাজধানীর কাওরান বাজারেও ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শনিবারও প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সোমবার-মঙ্গলবার একই পেঁয়াজ ২ টাকা থেকে ৩ টাকা কমে ৪২-৪৩ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
কাওরান বাজারের ইসলাম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো.শাজাহান বলেন, ‘বাজারে এখন আর পেঁয়াজ সরবরাহের কোনও সমস্যা নেই। বাজারে প্রতিদিনই সরবরাহ বাড়ছে। ফলে দামও কমছে। যতদিন এ অবস্থা বিরাজ করবে, ততদিন দাম কিছুটা ওঠানামা করবে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে এলে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা বিক্রি করেছি। এখন ৪০ থেকে ৪২ টাকা বিক্রি হচ্ছে।’
কাওরান বাজারের বাইরে ফুটপাথে বসে পেঁয়াজ বিক্রি করেন মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া। তিনি বলেন, ‘এখন ভারতীয় পেঁয়াজের চেয়ে দেশি পেঁয়াজ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ক্রেতারা দেশি পেঁয়াজই কিনছেন। আমরা এক পাল্লা (৫ কেজি) ১৮০ টাকায় কিনছি। অর্থাৎ প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ছে ৩৬ টাকা। প্রতি কেজিতে ২ টাকা খরচ পড়ে। বিক্রি করছি ৪০ টাকায়। তবে, আকারে ছোট পেঁয়াজের দাম একটু কম। ’
ভারত সরকার গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার পর গত রোববার দেশটি থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। এ সংবাদের পর পরই দেশি পেঁয়াজের দাম কমতে থাকে।