অনলাইন ডেস্ক: | ১৬ জুলাই ২০১৭ | ৮:৫৮ অপরাহ্ণ
আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোয় এয়ার কানাডার একটি উড়োজাহাজ নির্দিষ্ট রানওয়ের বদলে বিমানবন্দরের ট্যাক্সিওয়েতে অবতরণ করতে যাচ্ছিল। বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার সচেতন না হলে পাইলটের অসাবধানতার বড় মাশুল দিতে হতো বিমানটির আরোহীদের।
কানাডার টরন্টো থেকে সান ফ্রান্সিসকোয় আসা এ বিমানে ক্রুসহ মোট ১৪০ জন আরোহী ছিলেন। বিমানটির পাইলটের এ অদ্ভুত আচরণ নিয়ে এখন কানাডা ও আমেরিকায় আলাদা তদন্ত চলছে।
টরন্টো থেকে ছেড়ে আসা এয়ার কানাডার ফ্লাইটটিকে সান ফ্রান্সিসকো বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবতরণের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এসি ৭৫৯ নম্বরের এ ফ্লাইটটি পাইলটের অসাবধানতায় ট্যাক্সিওয়ে দিয়ে অবতরণের চেষ্টা করে। সে সময় ট্যাক্সিওয়েতে ৪ টি যাত্রীবাহী বিমান উড্ডয়নের অপেক্ষায় ছিল। বিষয়টি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের নজরে এলে তিনি পাইলটকে আবারও উড্ডয়নের নির্দেশ দেন। পরে অবশ্য এয়ারবাস ৩২০ মডেলের বিমানটি রানওয়েতেই নিরাপদে অবতরণ করে। ঘটনাটি গেলো ৭ জুলাই।
বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে আমেরিকার ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)। শুক্রবারের এ ঘটনাটিকে অত্যন্ত বিরল বলছে সংস্থাটি। অপেক্ষমাণ বিমানগুলোর সঙ্গে এয়ার কানাডার বিমানটির দূরত্ব ছিলো মাত্র ৪০ মিটার (৯৮ ফুট)।
এদিকে এ বিষয়ে আলাদ একটি তদন্ত করছে এয়ার কানাডাও। প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র পিটার ফিটজপ্যাট্রিক বলেন, টরন্টো থেকে ছেড়ে যাওয়া বিমানটিতে ক্রুসহ মোট ১৪০ জন আরোহী ছিলেন। তবে অপেক্ষমাণ বিমানগুলোয় ঠিক কতজন ছিলেন, তা সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি। এসি ৭৫৯ অবতরণের সময় বড় ধরনের ভুল হয়েছিল। পরে এটি নিরাপদে অবতরণ করে। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন।
অন্যদিকে শুক্রবার অবতরণের সময় বিমানটির পাইলট ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের মধ্যে হওয়া সবশেষ আলাপচারিতা প্রকাশিত হয়েছে। এতে পাইলটকে বলতে শোনা গেছে, রানওয়েতে আলো রয়েছে। প্রত্যুত্তরে নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়, সেখানে অন্য কোনো বিমান নেই। পরে নিয়ন্ত্রণকক্ষ বিপদ আঁচ করে পাইলটকে আবার অবতরণের চেষ্টা করতে বলে।
এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যম মার্কারি নিউজকে এরো কনসাল্টিং এক্সপার্টসের প্রধান নির্বাহী ও ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন রস আইমার বলেন, এটি এড়ানো না গেলে এভিয়েশন খাতের ইতিহাসেই সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা হতে পারত এটি।
তিনি আরো বলেন, শুধু ভাবুন যে একটি যাত্রীবাহী বিমান উড্ডয়নের অপেক্ষায় থাকা অন্য ৪ টি যাত্রীবোঝাই বিমানের মধ্যে সংঘর্ষ হচ্ছে। এর প্রতিটিই বোঝাই হয়ে রয়েছে জ্বালানিতে। তাহলেই সম্ভাব্য দুর্ঘটনার মাত্রা সম্পর্কে সহজেই অনুমান করা যায়।
এভিয়েশন খাতে সবচে’ বড় বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৭৭ সালে। স্পেনের ক্যানেরি আইল্যান্ডসের লস রোডেওস বিমানবন্দরের রানওয়েতে দুই বামনের মধ্যে ঘটা সংঘর্ষে সে সময় নিহত হন ৫৮৩ জন।