অনলাইন ডেস্ক | ০৭ এপ্রিল ২০১৭ | ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার টি-টোয়েন্টি ম্যাচ চলাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের পাঁচ কর্মী আহত হয়। সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর করা হয় হলের টিভি রুম ও তিনটি কক্ষ।
হল শাখা ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, সমাজকল্যাণ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আফজল টিভি রুমে খেলা দেখার সময় রেডিওতে খেলা শুনছিলেন। এ সময় আফজল টিভিতে দেখানোর আগেই রেডিওতে শুনে স্কোর বলে দিচ্ছিলেন। এতে টিভিরুমে হল ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের সমর্থকরা স্কোর বলতে তাকে নিষেধ করে। এতে দুই পক্ষ বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে গেলে মারামারি শুরু হয়। এ সময় তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শোডাউন দেয়। ভাঙচুর করা হয় হলের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান তুষারের নিয়ন্ত্রণে থাকা ৪২১, ৩০৪ ও ৩০৬ নম্বর কক্ষ এবং টিভি রুম। ৪২১ নম্বর কক্ষ থেকে ফয়সাল নামে এক শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ ছিনতাই হয়।
সংঘর্ষে আহত হন দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাইফুল, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের রাজিব, সমাজ কল্যাণ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের আপেল ও দ্বিতীয় বর্ষের আফজাল এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আফছার। এদের মধ্যে সাইফুল গুরুতর আহত হয়েছেন। তার নাক ফেটে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়েছে।
আহতদের শুরুতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, হামলায় নেতৃত্ব দেন বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রাজু আহমেদ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সাজু ও রকিব হাসান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের রাশেদ রাজন, হলের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মনজুর আহমেদ রানা। এদের সবাই হল ছাত্রলীগের সভাপতি হাফিজুর রহমানের অনুসারী।
হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান তুষার বলেন, অসুস্থতার কারণে আমি এখন চট্টগ্রামে অবস্থান করছি। বাংলাদেশের বিজয়ের ক্ষণে যারা হামলা চালিয়েছে তারা ছাত্রলীগের আদর্শে বিশ্বাস করে না।
জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মারামারির বিষয়টি আমি শুনেছি। এতে কয়েকজন আহত এবং একটি ল্যাপটপ চুরি হয়েছে বলেও শুনেছি। হল শাখা সাধারণ সম্পাদক এখন ঢাকার বাইরে। তিনি ক্যাম্পাসে ফিরলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, আমার জানামতে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে ঘটনার সময়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আফতাব উদ্দিন বিতর্কিত ভূমিকা পালন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সংঘর্ষ শুরুর অনেক পর তিনি হলে প্রবেশ করেছেন। হলে প্রবেশের পর তিনি সংঘর্ষস্থলে না গিয়ে নিজ কক্ষে ঢুকেছেন। ফলে সংঘর্ষ থামার পরিবর্তে আরও বিলম্বিত হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আফতাব উদ্দিন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।