অনলাইন ডেস্ক | ০৩ নভেম্বর ২০১৭ | ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ
ভারতের চন্ডীগড়ে নিজেদের ১০ বছর বয়সী ভাগ্নীকে ধর্ষণের দায়ে দুই মামাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। মামাদের দ্বারা নির্যাতিতা ওই শিশুটি গত অাগস্ট মাসে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছে।
তার আগের কয়েক সপ্তাহ ধরে এই ঘটনাটি ভারতের সংবাদমাধ্যমে শিরোনামে উঠে এসেছিল, যখন ওই শিশুটির পরিবার তার গর্ভপাতের আবেদন নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের কাছে হাজির হয়েছিল।
সুপ্রীম কোর্টও যেমন গর্ভপাতের আবেদন খারিজ করেছিল, তার আগে পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্ট এবং চন্ডীগড়ের আদালতও শিশুটির পরিবারের সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।
ভারতের আইন অনুযায়ী গর্ভসঞ্চারের ২০ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত করানো যায়। কিন্তু যখন এই শিশুটির পেটে সন্তান আছে বলে বোঝা যায়, ততদিনে সেই সময় পেরিয়ে গেছে।
এই দেরীর কারণ হিসাবে তার পরিবার বলেছিল, শিশুটি যেহেতু বুঝতেই পারে নি যে তার সঙ্গে কী অত্যাচার হয়েছে, সে নিজের বাবা-মাকে জানাতেও পারে নি বিষয়টি। পেটে ব্যথা শুরু হওয়ার পরে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তার বাবা-মা জানতে পারেন যে তাদের ১০ বছর বয়সী মেয়ে গর্ভধারণ করেছে।
তারপরেই তার এক মামাকে গ্রেপ্তার করা হয় ধর্ষণের দায়ে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সর্বোচ্চ চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে নির্যাতিতা ওই শিশুটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। সে নিজে যেমন জানেই না যে সে মা হয়েছে, তেমনই তার বাবা-মা-ও ওই সদ্যজাতের মুখও দেখেননি।
কিন্তু পুলিশ ওই সদ্যজাতের ডিএনএ সংগ্রহ করে তা মিলিয়ে দেখতে যায় আগেই ধৃত নির্যাতিতার মামার সঙ্গে। তখন ডিএনএ না মেলায় প্রশ্ন ওঠে যে তাহলে কে ধর্ষণ করেছিল ওই শিশুটিকে!
ওই নির্যাতিতাকে দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করে জানা যায় বছর চল্লিশের বড় মামা ছাড়া তার ছোট মামার নামও।
সদ্যজাতর ডিএনএ মিলে যায় নির্যাতিতার ছোট মামার সঙ্গে। তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
গত মঙ্গলবার ওই দুজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল চন্ডীগড়েরর একটি ফাস্ট ট্র্যাক আদালত।
কারাদণ্ডের আদেশ ছাড়াও ওই দুই ভাইয়ের প্রত্যেককে তিন লক্ষ টাকা করে দিতে হবে নির্যাতিতা শিশুটিকে।
দোষীদের আইনজীবীরা আদালতের কাছে শাস্তি কমানোর আর্জি জানিয়ে বলেছিলেন এরা দুজনেই পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস, তাদের ছোট ছোট শিশুও আছে।
কিন্তু সরকারি আইনজীবীরা বলেন দোষী দুজনে তাদের নিজের বোন এবং বোনঝির বিশ্বাসভঙ্গ করে ওই জঘন্য অপরাধ ঘটিয়েছে। কোনও ছাড় দেওয়া উচিত নয়।