আজকের অগ্রবাণী ডেস্ক | ০৭ আগস্ট ২০১৭ | ১০:০২ পূর্বাহ্ণ
যেসব নারীরা নিঃসঙ্গ জীবন-যাপন করতেন কিংবা পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন, সেসব নারীদেরই টার্গেট করতেন ভণ্ডপীর আহসান হাবীব পিয়ার। নিঃসঙ্গতার সুযোগ নিয়ে অথবা সমস্যা সমাধানের আশ্বাসে তাদের সঙ্গে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। সেসব সম্পর্কের ভিডিও গোপনে ধারণ করে অন্তত শতাধিক নারীকে ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় করেছেন তিনি। তাহমিনা ও মিতা নামের দুই নারীকে ফাঁদে ফেলে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথাও স্বীকার করেছেন কথিত পীর পিয়ার।
জ্বিন-ভূত তাড়ানোর নাম করে পর্নো ভিডিও ধারণকারী ভণ্ডপীর আহসান হাবিব পিয়ারকে গত ১ আগস্ট রাজধানীর খিলগাঁও থেকে গ্রেফতার করে সিটিটিসির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ। দুই দিনের রিমান্ড শেষে শনিবার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে নিজের এমন কর্মকাণ্ডের কথা জানান পিয়ার। পিয়ারের স্বীকারোক্তির বিষয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, পিয়ার নিঃসঙ্গ নারীদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। এরপর তাদের সঙ্গে ভিডিও চ্যাটিং শুরু করতেন।
একপর্যায়ে তাদের বাসায় ডেকে এনে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করতেন এবং গোপনে সেসব ভিডিও ধারণ করে রাখতেন। সেসব ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ওই নারীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন। এছাড়া, পারিবারিক জীবনে যেসব নারীরা বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে একইভাবে ফাঁদে ফেলতেন।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, সুন্দর চেহারা এবং ইসলামী জ্ঞানকে অপব্যবহার করে অসংখ্য মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে ভণ্ডপীর পিয়ার। বিভিন্ন অসহায় মানুষকে নামমাত্র সাহায্য করার ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করে নিজের ব্যাংক ও বিকাশ নম্বরে মোটা অংকের টাকাও আত্মসাৎ করেছেন তিনি। প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত তার ইসলামী ব্যাংকের একাউন্টের কথা সে আগে জানালেও নতুন করে জনতা ব্যাংকের আরেকটি একাউন্টের কথা জানা গেছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে সিটিটিসির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নাজমুল ইসলাম বলেন, ভণ্ডপীর পিয়ার অসংখ্য নারীর সঙ্গে শারিরীক সম্পর্কের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তার প্রতারণার আরেকটি মাধ্যম ছিলো এএইচপি নামের অনলাইন টেলিভিশন। সেখানে বিভিন্ন ভিডিও আপলোড করে প্রতারণা করেছেন। দেশের প্রচলিত আইনের বাইরে টেলিভিশন চালানোর দায়ে তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করা হবে।