অনলাইন ডেস্ক | ২১ জুলাই ২০১৭ | ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ
দু’জনের একই নাম। দেখতে কারো চেয়ে কেউ কম নয়। দু’জনের একজন বাংলাদেশের। অন্যজন ভারতের। একজন বড়মাপের নেত্রী আর অন্যজন ছোটমাপের। একজন জেলে এবং অন্যজনকে তলব করেছে পুলিশ। পুলিশের খাতায় দুই সুন্দরীর নাম।
তবে ছোটমাপের নেত্রী বরিশাল নগরীর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইসরাত আমান রূপাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইয়াবা বহনে রাজি না হওয়ায় মান্না পাহাড়ি নামে এক সাপুড়েকে নির্মমভাবে কোপানোর ঘটনায় বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ২টার দিকে নগরীর নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে বুধবার রাত ৯টার দিকে কোতোয়ালি মডেল থানায় আহত সাপুড়ে মান্না পাহাড়ির স্ত্রী কাজল বেগম বাদী হয়ে ইসরাত আমান রূপাসহ ছয় যুবলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আহত মান্না পাহাড়ি শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মামলায় নগরীর সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর (১৬, ১৭ ও ১৮) ইসরাত আমান রূপাকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।
অন্য আসামিরা হলেন নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়া সড়কে স্থানীয় যুবলীগ কর্মী তরিকুল ইসলাম রাজা, সরজিৎ চন্দ্র রায় ওরফে সবুজ, ফিরোজ, মাসুদ মোল্লা ও রফিকুল ইসলাম বাদশা।
মান্নার স্ত্রী কাজল বেগম জানান, কয়েক মাস আগে মান্নাকে সাপের বাক্সে কক্সবাজার থেকে ইয়াবা বহনের প্রস্তাব দেন যুবলীগ কর্মী রাজা ও কাউন্সিলর রূপা। এতে রাজি না হওয়ায় তাকে হুমকি দেন রাজা ও রূপা। ওই সময় মান্না কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত সোমবার রাতে রূপার নির্দেশে রাজা ও তার সহযোগীরা মান্নার ওপর হামলা চালায়।
এ সময় যুবলীগ কর্মী রাজার নেতৃত্বে বাদশা, ফিরোজ, মাসুদ, সবুজ, নাসিরসহ কয়েকজন ধারাল অস্ত্র নিয়ে মান্না পাহাড়ির শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্মমভাবে কুপিয়ে জখম করে। তাকে মৃত ভেবে হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন ভয়ে উদ্ধার করতে যায়নি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মান্নাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কোতোয়ালি মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই সত্য রঞ্জন খাসকেল কাউন্সিলর রূপাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. রেজাউল ইসলাম শাহ’র নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কাউন্সিলর ইসরাত আমান রূপার বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে শিশু পাচারকাজে ভারতের বিজেপির শীর্ষ নেত্রী সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে তলব করেছে সিআইডি। রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কেও তলব করেছে। আগামী ২৭ ও ২৯ জুলাই দু’জনকে ভবানী ভবনে হাজির হতে বলা হয়েছে। পাচার চক্রে উত্তরবঙ্গে বিজেপি নেত্রী জুহি চৌধুরীকে সিআইডি জালে তুলেছিল। জুহিকে জেরা করে দু’জনের নাম পাওয়া যায়। তবে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব আইনি পথে এর মোকাবেলা করতে চায়।
সংবাদ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুহিকে গ্রেপ্তারের পর সিআইডি বুঝেছিল চক্রের এটা শুধু হিমশৈল। এর জাল দিল্লি পর্যন্ত ছড়িয়ে। সূত্রের খবর, ওই বিজেপি নেত্রীর মোবাইল কল লিস্ট পরীক্ষা করে বিজেপির এক সর্বভারতীয় নেতা ও এক সাংসদের নাম জানতে পারে সিআইডি। চক্রের সঙ্গে নাম জড়ায় কেন্দ্রীয় এক কারা আধিকারিকের।
তদন্তকারীদের দাবি, আধিকারিক এবং নেতা-নেত্রীদের ব্যবহার করে জলপাইগুড়ি হোমের যাবতীয় বেনিয়ম চাপা দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল। ওই নেত্রীকে জেরার পর বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ও কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নাম সিআইডি অফিসাররা জানতে পারেন। এরপরই দু’জনেক জিজ্ঞাসাবাদের তোড়জোড় শুরু হয়।
সেই সূত্রে বৃহস্পতিবার তাদের তলব করা হয়। আগামী ২৭ ও ২৯ জুলাই রূপা ও কৈলাসকে ভবানী ভবনে যেতে হবে। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের দুই বিজেপি নেতাকেও সিআইডি ওইদিন তলব করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠানো হলেও রূপা বা কৈলাস ভবানী ভবনে যাবেন কি-না তা জানা যায়নি।
এ ঘটনায় রাজ্য প্রশাসনের প্রতিহিংসা দেখছে বিজেপি। দলের বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, দুই নেতা-নেত্রীর নামে কোনও প্রমাণ পায়নি সিআইডি। তবুও তাদের ডাকা হয়েছে। আইনি পথে এর মোকাবেলা করা হবে।
জুহির পাশে প্রকাশ্যে দাঁড়িয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। সিআইডির তদন্তের সময় জুহির অজ্ঞাতবাস নিয়ে দিলীপ জানিয়েছিলেন লুকিয়ে ঠিকই করেছেন জুহি। একধাপ এগিয়ে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, জুহি চক্রান্তের শিকার। জুহির প্রতি দলের শীর্ষ নেতৃত্বর এ মনোভাবই সিআইডি খতিয়ে দেখছে। তার জন্য এ তলব বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ||
৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ |
১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ |
২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ |
২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |