অনলাইন ডেস্ক: | ২২ জুলাই ২০১৭ | ১১:৩৮ অপরাহ্ণ
ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে চোখ উপড়ে ফেলার ঘটনাটিকে অসত্য দাবি করে ভুক্তভোগীর বাবা বলছেন, পুলিশের দাবি মেটাতে না পারায় তাঁর ছেলের চোখ উপড়ে ফেলেছেন পুলিশ সদস্যরা। গত ১৮ জুলাই মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। যুবকটি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে ছেলের পাশে থাকা বাবা জাকির হোসেন সাংবাদিকদের কাছে পুলিশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন।
ওই যুবকের নাম মো. শাহজালাল ওরফে শাহ। পুলিশ বলছে, শহরের গোয়ালখালী এলাকায় ছিনতাইকালে তিনি জনতার হাতে ধরা পড়েন। জনতা তাঁকে পিটুনি দিয়ে চোখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা করে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন শাহর চোখে আর দৃষ্টি ফিরে আসবে না বলে চিকিৎসকরা শনিবার অস্ত্রোপচার করে ক্ষতবিক্ষত চোখ দুটি ফেলে দেন।
পুলিশের দাবি, শাহ একজন চিহ্নিত অপরাধী। তাঁর বিরুদ্ধে খুলনা ও পিরোজপুরে ১৩টি মামলা রয়েছে; যার মধ্যে হত্যা, ডাকাতি, নারী নির্যাতন, মাদকসহ বিভিন্ন মামলাও আছে।
শাহর বাবা জাকির হোসেন দাবি করেন, ঝগড়া হওয়ায় শাহর স্ত্রী খুলনায় বাবার বাড়ি চলে আসেন। স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে শাহ খুলনায় শ্বশুরবাড়ি আসেন। তিনি বলেন, গত সোমবার রাতে মেয়ের দুধ কেনার জন্য খালিশপুর রেল বস্তি এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হওয়ার পরই পুলিশ তাঁকে ধরে খালিশপুর থানায় নিয়ে যায়। তিনি আরো জানান, শাহকে থানায় নিয়ে গেছে, এমন খবর পেয়ে তাঁর স্ত্রী রাহেলা বেগম সেখানে গেলে পুলিশ তাঁর কাছে এক লাখ টাকা দাবি করে। রাহেলা ২০ হাজার টাকা দিতে পারবেন জানালে তাঁকে থানা থেকে বের করে দেয় পুলিশ। এরপর শাহর মুক্তির শর্ত হিসেবে তাঁর কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু শাহ রাজি না হওয়ায় রাত দেড়টার দিকে তাঁকে বিশ্বরোডে নিয়ে দুই চোখ তুলে দেয় পুলিশ।
চোখ তুলে নেয়ার সময় খালিশপুর থানার ওসি নাসিম খান, উপপরিদর্শক রাসেল ও মামুন ছাড়াও তিন-চারজন কনস্টেবল উপস্থিত ছিলেন বলে জাকির হোসেন দাবি করেন।
এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে খালিশপুর থানার ওসি নাসিম খান বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুরাতন যশোর রোডের শুকুর আহমেদের স্ত্রী ও মেয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে করে এসে দুই ব্যক্তি তাঁদের ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। তাঁরা চিত্কার করলে স্থানীয় লোকজন গিয়ে শাহজালাল ওরফে শাহকে ধরে পিটুনি দেওয়ার পর দুই চোখ তুলে ফেলে। তবে শাহর সঙ্গী শুভ মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে শাহকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করায় বলে ওসি নাসিম দাবি করেন। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।