অনলাইন ডেস্ক | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ৪:৩৮ অপরাহ্ণ
ছোট থেকেই নাচতে ভালবাসত মেয়েটি। ভালবাসত ড্রাম বাজাতে। দশম শ্রেণির কিশোরীর এমন শখ মোটেই অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এই মেয়েটি, শীতল জৈন কোনও সাধারণ পরিবারের মেয়ে নয়। তার মা একজন দেহপশারীনি। জন্ম থেকেই শীতল দেখেছে যৌনপল্লির বীভৎস পরিবেশ। সেই জায়গা থেকেই আজ সে যে জায়গায় পৌঁছে গেছে তা যেন সত্যিই এক রূপকথা।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্রে জানা যাচ্ছে, শীতলের জন্ম ও বেড়ে ওঠা মুম্বাইয়ের কুখ্যাত যৌনপল্লি কামাথিপুরায়। নিজের বাবার পরিচয় পর্যন্ত জানতে পারেনি সে। জন্ম থেকেই সামনে ঝুলছিল ভবিষ্যতের কঠোর লিখন। মায়ের পথেই হাঁটবে মেয়ে, এমনটাই ধরে নিয়েছিল সকলে।
কিন্তু, জীবনের মধ্যে যে অনিশ্চয়তা আর পদে পদে বিস্ময়ের উপাদান লুকিয়ে থাকে, তাকে অস্বীকার করবে কে। শীতলের ইচ্ছেপূরণে তার পাশে এসে দাঁড়ায় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। যেহেতু দশম শ্রেণি পাশ করা হয়নি, তাই ভারতের কোনও প্রতিষ্ঠানে ড্রাম শেখার সুযোগ হয়নি। কিন্তু ওই সংস্থার দৌলতে সুদূর মার্কিন মুলুকে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে শীতল। সেখানে ড্রামিং-এর কোর্স করেছে সে। শিখেছে ড্রাম বাজানো কেবল বিনোদন মাত্র নয়। তা আসলে এক প্রতিবাদেরও অস্ত্র। এই যন্ত্র দিয়েই নিজের আগামী দিনকে সুন্দর করে তুলতে চায় শীতল। পড়াশোনাও চালিয়ে যেতে চায় সে।
শীতল এখন থাকে যেখানে, সেখানে তার সঙ্গে থাকা বাকিরাও যৌনপল্লিরই কোনও না কোনও পরিবারের সন্তান। কিন্তু সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসার দৃঢ় প্রতিজ্ঞায় অটল তারা সকলেই।
আপাতত পুণের এক সঙ্গীত শেখানোর স্কুলে ইন্টার্নশিপ করছে শীতল। আগামী দিনের স্বপ্ন ভিড় করে আছে শীতলের দু’চোখে। যে রূপকথার সূচনা হয়েছে, তা পরিপূর্ণতা পাবে, সেই আশাতেই আপাতত বুক বেঁধেছে সে।