অনলাইন ডেস্ক: | ২০ জুলাই ২০১৭ | ৬:০৫ অপরাহ্ণ
ভারতের বৃহত্তম প্রদেশ উত্তর প্রদেশে ‘বাংলাদেশি খেদাও’ অভিযান শুরু করেছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। উত্তর প্রদেশের নয়ডার একটি আবাসিক এলাকায় পরিচারিকা নিয়ে গোলমালের জেরে ‘বাংলাদেশি খেদাও’ অভিযানে নেমেছে যোগী সরকার।
এতে পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার থেকে নয়ডায় কাজ করতে যাওয়া প্রায় ৪০টি পরিবার প্রবল বৃষ্টির মধ্যে পথে এসে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ। সংখ্যালঘু ও বাংলাভাষী হওয়ায় তাদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, এই খেদাও অভিযানে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী মহেশ শর্মা পুরোপুরি মদদ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ।
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। নয়ডার একটি আবাসনের বাসিন্দা মিতুল শেট্টির বিরুদ্ধে তার পরিচারিকা জোহরা বিবিকে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে। পরের দিন সকালে জোহরার স্বামী তার স্ত্রীর খোঁজে আত্মীয় ও পড়শিদের নিয়ে এসে ভিতরে ঢুকতে চান। এতে আবাসনের নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। অভিযোগ জানায় দু’পক্ষই।
শেট্টিরা জোহরার নামে দশ হাজার টাকা চুরি ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ দায়ের করে। ইতিমধ্যেই ওই কাণ্ডে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জোহরার অভিযোগ, তাকে সারারাত আটকে রেখে মারধরও করা হয়। সকালে সুযোগ বুঝে পালিয়ে যান তিনি।
জোহরার অভিযোগের সত্যতা মানতে রাজি নয় উত্তরপ্রদেশ তথা কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি।
তাদের দাবি, শুধু শেট্টি পরিবারের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। প্রয়োজনে শেট্টি পরিবারের হয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ মহেশ শর্মা।
তার দাবি, ‘এরা সকলেই কোথাকার তা ভাল করেই জানা আছে। কারণ আমি নিজেও নয়ডাতেই থাকি।’
মহেশের দাবি, হামলাকারীরা যাতে অন্তত এক বছর জামিন না পায় তার ব্যবস্থা করবেন তিনি।
ওই আবাসনে ফ্ল্যাট রয়েছে প্রায় দু’হাজার। কাজ করেন প্রায় ছ’শো পরিচারিকা। ঘটনার পরে ঢোকা বারণ হয়ে গিয়েছে অর্ধেকের বেশি পরিচারিকার। ভেঙে দেওয়া হয়েছে তাদের ঝুপড়ি, খাবার দোকান।
খেটে খাওয়া মানুষগুলির দাবি, তারা কুচবিহারের বাসিন্দা। ভোটার কার্ডও রয়েছে তাদের। তাতে অবশ্য মন গলেনি প্রশাসনের।
সমাজকর্মীদের মতো বাংলা ভাষাভাষি সেসব পরিচারিকা ও তাদের পরিবারকে তাড়ানোই এখন লক্ষ্য বিজেপি সরকারের।
বিজেপির স্থানীয় সাংসদ মহেশ শর্মা হুমকি দেন, ‘যারা এতে সাম্প্রদায়িকতার রং লাগানোর চেষ্টা করছেন তাদের আমাদের সংগঠনের সদস্যরাই দেখে নেবে।’
মদনলাল খুরানা যখন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন এভাবে বাংলাদেশি তাড়াও অভিযানে নেমেছিল বিজেপি সরকার। বাংলাদেশি অভিযোগে বহু লোকের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছিল। সেই ভয় আবার ফিরে আসছে খেটে খাওয়া বাঙালি পরিবারগুলির ভিতরে।