আজকের অগ্রবাণী ডেস্ক | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ
হজের সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ। এবার নিজ নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার পালা। তবে যেসব হাজি এখনও মদিনায় যাননি, তারা পালাক্রমে মদিনা মোনাওয়ারা যাবেন।
সেখান থেকে কেউ মদিনা এয়ারপোট হয়ে সৌদি আরব ত্যাগ করবেন, অনেককেই আবার সড়কপথে মদিনা থেকে জেদ্দা হয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাবেন।
বিদায়ি তাওয়াফ করা ওয়াজিব। হজরত রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘হাজিরা বায়তুল্লাহর সঙ্গে শেষ সাক্ষাত না করে যেন ফিরে না আসে।’-সহিহ মুসলিম
তাই মক্কা ত্যাগ করার আগে সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) সারাদিন হারাম শরিফে প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে। হাজিরা বিদায়ি তাওয়াফ করছেন, কেউ নফল তাওয়াফ করছেন। সকাল থেকে গভীর রাত অবধি তাওয়াফের জায়গাগুলো লোকে লোকারণ্য ছিলো। হাজিরা নিচতলা, দোতলা, তিনতলা ও মসজিদে হারামের ছাদে তাওয়াফ করেছেন।
মিকাতের বাইরে যেসব হাজিরা এসেছেন, তাদের জন্য মক্কা মোকাররমা ত্যাগ করার সময় বিদায়ি তাওয়াফ করা ওয়াজিব। আর যারা মক্কা এলাকার ভেতরে থাকেন, তাদের জন্য বিদায়ি তাওয়াফ মোস্তাহাব।
ফরজ তাওয়াফ করার পর কেউ যদি নফল তাওয়াফ করে থাকেন, তাহলেও তার বিদায়ি তাওয়াফ আদায় হয়ে যাবে। তবে বিদায়ি তাওয়াফ আলাদাভাবে করে নেওয়াই ভালো।
বিদায়ি তাওয়াফে কোনো রমল, ইজতেবা ও সায়ি নেই। শুধু কাবাকে সাত চক্করে তাওয়াফ করে ও দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজ শেষে খুব অনুনয়-বিনয় করে চোখের পানি ছেড়ে দোয়া করতে হয়।
বিদায়ি তাওয়াফের ভিড়, মসজিদে হারামের ছাদ থেকে তোলা মসজিদের হারামে সারাদিন দেখা গেছে, পরিচিতরা একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছেন। সবার চোখে বিরহের অশ্রু। আপনজনকে হারানোর ব্যথা মনে নিয়ে কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে মোনাজাত করছেন।
বাংলাদেশের মাদারীপুর থেকে হজ করতে আসা মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমার ফিরতি ফ্লাইট বুধবার, জানা নেই জীবনে কোনো দিন আর আসতে পারবো কিনা, তাই যতক্ষণ মক্কায় আছি এই সময়টুকু মসজিদে হারামেই কাটিয়ে দিতে চাই।’
মানুনুর রশিদের মতো অনেকই আছেন, যারা নিজ নিজ দেশে চলে যাবেন তারা সোমবার বিদায়ি তাওয়াফ, নফল তাওয়াফ ও মসজিদে হারামে নামাজ আদায় করে সময় কাটিয়েছেন।
বিদায়ি তাওয়াফের ভিড়, মসজিদে হারামের ছাদ থেকে তোলা। কেউ বিশেষ সময়ের কারণে বিদায়ি তাওয়াফ করতে না পারলেও কোনো ক্ষতি নেই। তার ওপর দম ওয়াজিব হবে না।
তাওয়াফে জিয়ারত (ফরজ তাওয়াফ) আদায়ের পর থেকে যে কোনো সময় বিদায়ি তাওয়াফ করা যায়। তবে উত্তম হলো- দেশে ফেরার আগে বিদায়ি তাওয়াফ করা।
হজরত উমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) একবার বিদায়ি তাওয়াফ করে এক অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যান। এরপর তিনি আবার বিদায়ি তাওয়াফ আদায় করেন।