বনানী বিশ্বাস | ২২ মে ২০১৭ | ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ
বছর কুড়ি পর তক্ষকের ডাকে বেশ ভোরে ঘুম ভাঙ্গল আজ। বাড়ির পিছনটায় গিয়ে দেখি এ কী উপন্যাসিক জায়গায় এসেছি আমি! খালি পায়ে পাহাড়ি আঁকা বাঁকা পথ বেঁয়ে নামতে শুরু করলে সৌন্দর্যের সমারহে হুমড়ি খেয়ে পড়বার দশা! মনে হল সৃষ্টি যেন মুখ বাড়িয়ে কথা কইতে চাইছে! বেশ খানিকটা দূর নামতেই পা গেল আটকে! গাছেরা পাতা বিছিয়ে রেখেছে যেন আমারই আসবার অপেক্ষায়! পাহাড়ি পানের লতাটি সুপারি গাছটিকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁয়ে চলেছে বহুদুর! পাহাড়ি পান ঝাঁঝাল হলেও সুপারি বেশ গাবের মত। যা মাদকতা-বাবা!
পুবদিকের জঙ্গলঘেরা আধ পাহাড়ের গোঁড়ায় বাসমতি ধানের ভুঁইয়ের দোলা লাগে মনে। হাত বাড়িয়ে পাহাড়ের সমস্ত সৌন্দর্য গায়ে মাখতে মাখতে রবি ঠাকুরের লাবণ্য আর সমরেশের জয়িতা এসে ভুতের মত ঘাড়ে চাপল তখন! এই জঙ্গলে এমন ভোরে আমি কী আমিতকে খুঁজতে বেরিয়েছি নাকি সমরেসের সেই পাহাড়ি যুবককে! যে কিনা জয়িতার আনুরা মায়ের কারণ! এ ঘোর ভাঙবার আগেই তামলিমন চেঁচিয়ে ডাকল-‘দিদি, এত দূরে যেও না, জোঁক আছে জঙ্গলে!’
জোঁকের নাম না বলে নেকড়ে বা চিতার নাম বললেও বুঝি এত বিচলিত হয়ে উপরে উঠতাম না!
বেরেঙ্গা পুঞ্জি, বড়লেখা, সিলেট
লেখকের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত