অনলাইন ডেস্ক | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ৯:৫১ পূর্বাহ্ণ
ভারতের পঞ্চকুলায় তাণ্ডবের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত গুরমিত রাম রহিমের ‘পালিতা কন্যা’ হানিপ্রীত ইনসানকে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিল দিল্লি হাইকোর্ট। সোমবার আইনজীবী মারফত আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন হানিপ্রীত। গতকাল তা খারিজ হয়ে গেছে। আদালতের বক্তব্য, গ্রেফতারি এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। তাই তাঁকে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই নেই। বিচারপতি সঙ্গীতা ধিংরা সেহগাল বলেছেন, ‘‘এখন একমাত্র আত্মসমর্পণ করাই হানিপ্রীতের পক্ষে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।’’
ধর্ষণের অভিযোগে ডেরা সচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত রাম রহিমের কারাদণ্ডের পর থেকেই খোঁজ নেই হানিপ্রীতের। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে হরিয়ানা পুলিশ। তাদেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, গতকাল গোপনে দিল্লি এসেছিলেন হানিপ্রীত। লাজপত নগরে এক আইনজীবীর বাড়ির সামনে লাগানো সিসিটিভি-র ফুটেজে বোরখা পরা এক মহিলার ছবি দেখা গেছে। তাঁর এক হাতে ব্যাগ ছিল। পুলিশ মনে করছে, আগাম জামিনের আবেদনে সই করার জন্যই দিল্লি এসেছিলেন হানিপ্রীত। সোমবার তিনি দেখা করেন তাঁর আইনজীবী প্রদীপকুমার আর্যের এক সহকারীর সঙ্গে। সেই তথ্যের উপরে ভিত্তি করে গত কাল সকাল সাতটা নাগাদ হানিপ্রীতের খোঁজে গ্রেটার কৈলাসের টু-এর একটি বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। প্রায় এক ঘণ্টা তল্লাসি চালিয়েও সেখানে হানিপ্রীতের খোঁজ মেলেনি। এক রক্ষী শুধু ছিলেন সেখানে। তিনি জানিয়েছেন, ওই বাংলো ডেরারই সম্পত্তি। পঞ্চকুলার পুলিশ প্রধান এএস চাওলা বলেছেন, ‘‘৩০ অক্টোবরের মধ্যে হানিপ্রীত আত্মসমর্পন না করলে তাঁকে ‘ঘোষিত অপরাধী’ ঘোষণা করা হবে।’’
হানিপ্রীতের আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে এ দিনের শুনানিতে তাঁর আইনজীবী জানান, হরিয়ানায় প্রাণসংশয়ের আশঙ্কা রয়েছে তাঁর মক্কেলের। তাই নিরাপত্তার আশ্বাস পেলে তবেই তিনি হরিয়ানায় ফিরে তদন্তে সহায়তা করতে পারবেন। এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়ার সময় যাতে তাঁকে গ্রেফতার না করা হয় তার জন্যই ট্রানজিট বেল (জামিন)-এর আবেদন জানিয়েছেন হানিপ্রীত। কিন্তু দিল্লি পুলিশের বক্তব্য, হানিপ্রীতের উচিত ছিল পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে যাওয়া। কারণ, এই আবেদন শোনার এখতিয়ার ওই আদালতেরই রয়েছে। ধর্ষণের মামলায় গুরমিত দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর পঞ্চকুলায় তাণ্ডবের ঘটনায় অভিযুক্ত ৪৩ জনকে খুঁজছে হরিয়ানা পুলিশ। গতকাল রাজস্থান থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে গুরমিত ও হানিপ্রীতের বিরুদ্ধে একের পর এক বোমা ফাটিয়ে চলেছেন অভিনেত্রী রাখি সাওয়ান্ত। রাখি জানিয়েছেন, অডিশনের জন্য তাঁকে হোটেলে ডেকেছিলেন হানিপ্রীত। গুরমিতের ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ করে দেওয়ার নাম করে এভাবেই মেয়েদের হোটেলে ডাকতেন তিনি। ‘বাবা-মেয়ে’ থাকতেন একই ঘরে। হোটেলের শৌচাগারে নানা জড়িবুটি দেখেছিলেন তিনি। রাখির বক্তব্য, নানা ‘কুকর্মের’ সময়ে তা ব্যবহার করত গুরমিত। রাখি এ-ও বলেছেন, ‘‘গুরমিতের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা দেখে হিংসা করতেন হানিপ্রীত। তাঁর ভয় ছিল, আমি ওর প্রেমিককে বিয়ে করে ওঁর সতীন হয়ে যাব।’’ স্বঘোষিত এই গুরুর কীর্তি নিয়ে ‘অব হোগা ইনসাফ’ নামে একটি ছবি বানাচ্ছেন রাখি। সেখানেই গুরমিতের জীবনের
নানা কেচ্ছার পর্দা তুলবেন তিনি। অভিনয় করবেন ‘পাপা’স এঞ্জেল’ হানিপ্রীতের চরিত্রেই।