
ডেস্ক রিপোর্ট | বুধবার, ০৭ জুলাই ২০২১ | প্রিন্ট
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। দলে ফিরেছেন সাকিব। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে খেলা মাঠে গড়ালো বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায়। ইনজুরির কারণে একাদশে নেই অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল। এছাড়া বাদ পড়েছেন তাইজুল ইসলাম এবং আবু জায়েদ রাহী। ফিরেছেন সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং সাদমান ইসলাম।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের পেসার ব্লেসিং মুজাবারানির করা প্রথম ওভারেই ফিরে গেছেন ওপেনিং ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান। ওভারের পঞ্চম বলে অফ স্টাম্পের বল মূহুর্তেই তার রক্ষণ ভেদ করে। ম্যাচের পঞ্চম ওভারে সেই মুজাবারানির শিকার নাজমুল হোসেন শান্ত। ডানহাতি পেসারের ডিফেন্স করতে গিয়ে তৃতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন ২ রান করা শান্ত।
৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে হারের টেস্টের শুরুতেই বিপদে পড়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে মুশফিককে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ছিল সাদমান। কিন্তু ধৈর্য্যের পরীক্ষায় ফের ব্যর্থ হলেন সাদমান। মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস বড় করার আশা জাগিয়েও আত্নাহুতি দিলেন টাইগার এই ওপেনার। একুশতম ওভারের প্রথম বলে এনগারাভার বলে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরলেন সাদমান। ফেরার আগে ৬৪ বল মোকাবেলা করে চার বাউন্ডারিতে ২৩ রান তুলেছেন তিনি। মুমিনুল ও সাদমানের জুটিতে এসেছিল ৬০ রান।
দলের বিপর্যয়ে ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন মুমিনুল হক। সেখান থেকে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৪তম হাফসেঞ্চুরি পূরণ করলেন। চতুর্থ উইকেট জুটিতে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৩৮ রানের পার্টনারশিপ গড়ে অবিচ্ছিন্ন রয়েছেন অধিনায়ক। একইসঙ্গে দলীয় শতক পেরিয়েছে বাংলাদেশ। দলীয় শতকের পরই বাংলাদেশ শিবিরে ফের ব্যাটিং বিপর্যয়। পরপর দুই ওভারে মুশফিক-সাকিবকে হারালো বাংলাদেশ। মুজাবারানির তৃতীয় শিকারে এলবি হয়ে মাঠ ছাড়েন ১১ রান করা মুশফিক। আর ৩০তম ওভারের তৃতীয় বলে ব্যক্তিগত ৩ রানে থাকা সাকিবকে রেগিস চাকাভার ক্যাচে ফেরান ভিক্টর নিয়াচি।
৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ দল যখন চাপে, তখন থেকেই বুক চিতিয়ে লড়াই করে গেছেন অধিনায়ক মুমিনুল। জিম্বাবুয়ের মাটিতে মুমিনুলের ব্যাটে শতক দেখতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই আশায় গুড়েবালি দিয়ে ব্যক্তিগত ৭০ রানেই সাজঘরে ফিরলেন মুমিনুল। ভিক্টর নিয়াচির বলে মায়ের্সের তালুবন্দী হয়ে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক।
মুমিনুলের বিদায়ে ৬ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। ক্রিজে লিটন দাসকে সঙ্গ দিচ্ছে ১৬ মাস পর দলে ফেরা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩৬ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৩২ রান।
২০১৩ সালে সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফরে একটি ম্যাচ জিতলেও দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ড্র করেছিল তামিম-সাকিবরা। ৮ বছর পর জিম্বাবুয়ের মাটিতে আরেকটি টেস্ট খেলতে যাচ্ছে মুমিনুল বাহিনী। একাদশে স্থান হয়নি পেসার তাসকিন আহমেদের। ১৬ মাস পর ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এদিকে হাঁটুর ইনজুরির কারণে তামিমকে ছাড়াই মাঠে নামছে বাংলাদেশ। তার জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন সাদমান ইসলাম।
দীর্ঘ ২১ বছর আগে ক্রিকেটের এই অভিজাত ফর্মেটের সদস্য হলেও এখনো বাংলাদেশ দল দুর্বল রয়ে গেছে। তারপরও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টাইগাররা সব সময়ই নিজেদের সেরাটা দিয়ে এসেছে। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের বেশিরভাগ সাফল্যই এসেছে ২০১৩ সালের পর। একই বছরের পর থেকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সব টেস্ট ম্যাচই বাংলাদেশে খেলেছে নিজ মাঠে। ২০১৩ সাল থেকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ছয় টেস্ট খেলে পাঁচটিতে জিতেছে টাইগাররা। মাত্র একটি ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। তবে সাফল্যের তুলনায় ব্যর্থতা তেমনটা চোখে পড়েনা।
সব মিলিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এ পর্যন্ত ১৭ টেস্টে সাতটি জয় পেয়েছে বাংলাদেশ, যার ছয়টি এসেছে নিজ মাটিতে। পাঁচটি জয় এসেছে ২০১৩ সালের পর। বাংলাদেশ দলের প্রথম জয় এসেছে ২০০৫ সালে এবং এটাই ছিল বাংলাদেশ দলের প্রথম টেস্ট জয়। জিম্বাবুয়ের মাটিতে বাংলাদেশ দল একটি মাত্র টেস্টে জয় পেয়েছে ২০১৩ সালে। যা ছিল বাংলাদেশ দলের সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফর। সফরে বাংলাদেশ ফেবারিট হিসেবে মাঠে নামলেও দুই টেস্টের সিরিজ ১-১ ব্যবধানে শেষ করে টাইগাররা।
বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়েও সাতটি টেস্ট জিতেছে এবং তার মধ্যে পাঁচটিই নিজেদের মাটিতে। বাংলাদেশর মাটিতে তারা ২০০১ ও ২০১৮ সালে দুটি টেস্ট জিতেছে। বাকি তিন ম্যাচ শেষ হয়েছে ড্রতে।
তবে বর্তমান সময়ে জিম্বাবুয়ে থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। ২০১১ সালের পর থেকে নিয়মিত টেস্ট ক্রিকেট না খেলায় জিম্বাবুয়ে থেকে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। পাঁচ বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসনের পর ২০১১ সালে পুনরায় টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে আসার পর জিম্বাবুয়ে মাত্র ৩১টি টেস্ট খেলেছে। পক্ষান্তরে এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ খেলেছে ৫৫টি টেস্ট।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের সম্ভাবনা নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল বলেন, ‘প্রস্তুতি খুব ভালো হয়েছে। দুদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাটসম্যান-বোলাররা সবাই ভালো করেছে। আমরা টেস্ট ম্যাচেও ভালো কিছু করার আশা করছি। আর শুধু জিম্বাবুয়েতে না, যে কোনো দেশেই অ্যাওয়ে ম্যাচ চ্যালেঞ্জিং হয়। পাঁচদিন ভালো ক্রিকেট খেললে অবশ্যই ফল আমাদের দিকে আসবে।’
বাংলাদেশ একাদশ:
মুমিনুল হক , সাদমান ইসলাম, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন কুমার দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেন চৌধুরী।
জিম্বাবুয়ে একাদশ:
রেগিস চাকাভা, রয় কাইয়া, তাকুজওয়ানাশে কাইতানো, টিমিসেন মারুমা, ব্লেসিং মুজারাবানি, ডিওন মায়ের্স, রিচার্ড এনগারাভা, ভিক্টর নিয়াচি, মিল্টন শুম্বা, ব্রেন্ডন টেলর, ডোনাল্ড তিরিপানো।
Posted ৬:৪৮ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৭ জুলাই ২০২১
ajkerograbani.com | shalauddin Razzak
.
.
Archive Calendar