অনলাইন ডেস্ক | ২০ আগস্ট ২০১৭ | ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ
ভাড়াটে বাড়িওয়ালার সম্পর্কটা কেমন? কেউ বলেন শাশুড়ি-বউমার মতো। কারও বা মত বস আর অধস্তনের মতো। বলাই বাহুল্য এখানে বস অবশ্যই বাড়িওয়ালা। সময়ে সময়ে ভাড়াটেও বস হয়ে যায় ঠিকই। হয়তো ভাড়া দেয় না। কিংবা অন্য হুজ্জুতি করে। কিন্তু দিল্লিতে যে ঘটনা ঘটেছে, তা যেন সে সবকেও টপকে গেছে!
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, হতভাগ্য বাড়িওয়ালার নাম সচিন জৈন। তিনি ২০১৫ সালের জুলাইয়ে ৩০০ বর্গগজের একটি ফ্ল্যাট কেনেন। ‘গ্রেট কৈলাস ২’ নামের এক বিল্ডিংয়ে ছিল ফ্ল্যাটটি।
কেনার কিছু দিন পরেই তিনি ফ্ল্যাটটি ভাড়া দেন নরেন্দ্র সিংহ নামের এক ব্যক্তিকে। মাসিক ভাড়া ঠিক হয় ৬২,৫০০ টাকা। দু’বছরের চুক্তি। প্রথম
ক’দিন ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু ছ’মাস পর থেকেই ভাড়া পাওয়া বন্ধ হয়ে যায় সচিনের। কয়েক মাস ধরে এমন চলার পরে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নরেন্দ্রকে আদালতের নোটিশ পাঠানো হয়। এপ্রিলে সাকেত কোর্টে মামলা করা হয়। কিন্তু তাতেও কোনও পরিবর্তন লক্ষ করা যায়নি নরেন্দ্র’র পক্ষ থেকে।
অবশেষে অক্টোবরে আদালত নির্দেশ দেয় নরেন্দ্রকে, বকেয়া দশ মাসের ভাড়া মিটিয়ে দিতে। নরেন্দ্র অবশ্য এবার আর নতুন করে ঝামেলা পাকাননি। তিনি সব ভাড়া শোধ করে দেন। কিন্তু অনুরোধ করেন, তাঁকে যেন পুরো দু’বছরের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত থাকতে দেওয়া হয়। সচিন আপত্তি করেননি।
কিন্তু তখনও আসল চমকই যে বাকি। দু’বছর পরে অাগস্টে সচিন ওই সম্পত্তি বিক্রির বিজ্ঞাপন দিতেই ধরা পড়ে নরেন্দ্র’র চালাকি। সুভাষ অরোরা নামের এক ব্যক্তি সচিনকে ফোন করে বলেন, তিনি ওই সম্পত্তি এরই মধ্যে কিনে ফেলেছেন! এবং সেটা কিনেছেন নরেন্দ্র’র থেকে।
সচিন হতভম্ব হয়ে যান। সুভাষও। দেখা যায়, জাল কাগজপত্র বানিয়ে নরেন্দ্র কাজ হাসিল করেছেন। পুলিশ নরেন্দ্র’র নামে অভিযোগ দায়ের করেছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সম্পত্তি প্রকৃত কার কাছে ছিল। সচিন তাঁর কাছে থাকা সব কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। বলাই বাহুল্য, নরেন্দ্র কোনও কাগজ জমা দিতে পারেননি।
এই বিষয়ে অন্যান্য খবর
চমক অবশ্য তখনও বাকি ছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই বাড়িতেই থাকতেন নরেন্দ্র ও তাঁর ভাই। এর পর বাড়িটি তিনি বেচে দেন। পরে আবার সচিনের ভাড়াটে হয়ে ফিরে আসেন। হয়তো পুরোনো ঘরবাড়ির প্রতি টান থেকেই। কিন্তু এই সম্পত্তি যে এখন আর তাঁর নয়। সুতরাং নিতান্তই বেকায়দায় যে পড়েছেন তা স্পষ্ট।
তবে বিপদে পড়েও তিনি ভেঙে পড়েননি। উল্টো সচিনকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আপাতত পুলিশ তাঁকে খুঁজছে। ধরা পড়লেই, অন্য কোনও ঘর নয়, শ্রীঘরই আপাতত তাঁর ঠিকানা হতে চলেছে।