অনলাইন ডেস্ক | ১৬ আগস্ট ২০১৭ | ৯:৫২ অপরাহ্ণ
গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মহনননের পথ বেছে নিয়েছিল কেরলের বাসিন্দা ষোলো বছরের মনোজ সি মানু। খেলার ঘোরে সে যে মৃত্যুর কাছে পৌঁছে গিয়েছে তা মা-কে জানায় মনোজ। বলে, ‘আমি মারা গেলে তুমি কি দুঃখ পাবে মা?’
‘‘মা, আমি খেলার একেবারে শেষ স্টেজে আছি। এ বার কেবল কাউকে খুন করতে হবে। অথবা নিজেকেই শেষ করে দিতে হবে।’’
ছেলের এমন কথা শুনে বুক কেঁপে উঠেছিল মায়ের। তৎক্ষণাৎ এমন সর্বনেশে খেলা থেকে বেরিয়ে আসতে বলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রক্ষা করতে পারেননি ছেলেকে। নিজের প্রাণ খুইয়ে তাকে খেসারত দিতে হয়েছিল অনলাইনের মারণখেলায় মেতে ওঠার।
গত ২৬ জুলাই গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মহনননের পথ বেছে নিয়েছিল কেরলের বাসিন্দা ষোলো বছরের মনোজ সি মানু। তিরুবনন্তপুরমের কাছে ভিলাপিলাসালা নামের এক অঞ্চলে থাকত মনোজ। এক মালয়ালম টিভি চ্যানেলের সামনে ছেলের মৃত্যু নিয়ে মুখ খোলেন মনোজের মা। জানান, গত নভেম্বর থেকে এই খেলা খেলতে শুরু করেছিল তাঁর ছেলে। ক্রমে নানা অদ্ভুত খেলায় মেতে ওঠে সে। নিজেকে আঘাত করে শরীরে কাটাছেঁড়া করতে থাকে। নিজের হাত কেটে লিখতে থাকে ‘এবিআই’। এই আদ্যক্ষর কিসের সংক্ষিপ্ত রূপ, তা অবশ্য জানা যায়নি।
মৃত্যুর দু’সপ্তাহ আগে সে প্রচুর ভূতের ছবি দেখেছিল বলে জানা গেছে। অবশেষে নিজের প্রাণ দিয়ে এমন এক মারণখেলায় নাম লেখানোর মূল্য চোকাতে হল তাকে। তার বাবা-মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে পুলিশ বুধবার মনোজের বাড়িতে গিয়েছিল বলে জানা যায়।
কেবল মনোজ নয়, কেরলের আর এক ২২ বছর বয়সী তরুণ সাওয়ান্তের আত্মহত্যার পরেও তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই তরুণও ‘ব্লু হোয়েল’-এর শিকার। কান্নুরের বাসিন্দা সাওয়ন্তকে মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ আগে নিজের হাত-পা কাটার মতো অদ্ভুত সব ‘টাস্ক’ করতে দেখা গিয়েছিল বলে জানা যায়।
স্বাভাবিক ভাবেই এ ভাবে সারা দেশ জুড়ে একের পর এক মৃত্যু খবর মিলছে। ভয়ানক এই অনলাইন গেম যাতে আর কারও প্রাণ না কাড়তে পারে, সে ব্যাপারে নড়েচড়ে বসেচে প্রশাসন। কড়া নজর রাখা হচ্ছে, যাতে কোনও সোশ্যাল সাইট বা অন্যত্র এই গেমের লিঙ্ক কেউ শেয়ার না করতে পারে। কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী মানেকা গাঁধী টুইটারে সমস্ত শিশু-কিশোরদের বাবা-মাকে এ ব্যাপারে বিশেষ নজর দিতে আবেদন করেছেন। তাদের মোবাইল বা কম্পিউটারের দিকে খেয়াল রাখতে অনুরোধ করেছেন মানেকা।