অনলাইন ডেস্ক | ৩১ মে ২০১৭ | ৯:২৫ অপরাহ্ণ
মন্ত্রীদেরও যে অসত্য কথা বলতে হয়, তা স্বীকার করেছেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
সচিবালয়ে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের কর্মসূচি জানাতে এসে তিনি বলেন, “আই অ্যাম প্রাউড, আমি যখনই যে মন্ত্রণালয়ে ছিলাম, আই হ্যাভ বিন অ্যাবল টু ওয়ার্ক উইথ এ ভেরি ব্রিলিয়্যান্ট পিপল। মন্ত্রী-মিনিস্টার একজন থাকে বাবা, শুইনা রাইখো।”
কথা বলতে বলতে মন্ত্রীর চোখ পড়ে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে চোখ বোলাতে থাকা একজন সাংবাদিকের উপর।
তাকে উদ্দেশ করে মঞ্জু বলেন, “ওই কাগজ পড় ক্যান তুমি? আমার কথা শোনো, ওইটা তো মিছা কথা সব।”
এরপর খিলখিলিয়ে হেসে ওঠেন মঞ্জু।
হাসি থামিয়ে বলেন, “মন্ত্রী-মিনিস্টার হল তোমাদের কাছে মিছা কথা বলার জন্য।
“শুধু বাংলাদেশ না, পৃথিবীর সমস্ত দেশই চালায় আমলারা। যত ব্রিলিয়্যান্ট লোক আসবে, জ্ঞানী লোক আসবে, গুণী লোক আসবে এবং তাদের চাকরি-বাকরির নিশ্চয়তা দেওয়া হবে, মান-সম্মান দেওয়া হবে, সেই দেশ তত বেশি উন্নত হবে।”
মন্ত্রী বলেন, “এখানে (মন্ত্রণালয়ে) দুজন অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি আছেন, একজনকে তো আমি সমীহ করে কথাবার্তা বলি। কারণ আমরা তো পত্রিকার লোক, বেয়াদব। আমাদের চাইতে নলেজেবল লোক পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে নাই, এটা আমাদের পজিশন।
“এই মন্ত্রণালয়ের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি মহসিন সাহেবকে আমি সমীহ করে কথা বলি, আমার যেন কেন মনে হয় উনি আমার চাইতে বেশি জানেন। যদিও আমি মনে করি উনি জানেন না, কিন্তু মনে হয় বেশি জানেন।”
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে পরিচয়পর্বে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ইসতিয়াক আহমদেরও বেশ প্রশংসা করেন মন্ত্রী।
কিছুদিন আগে সুন্দরবনে আগুন লাগার প্রসঙ্গে দৈনিক ইত্তেফাকের মালিক মঞ্জু বলেন, “সুন্দরবনের ঘাসে আগুন লাগছে। … আমরা কী লিখেছি- সুন্দরবনের গাছে আগুন লেগেছে।”
জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান মঞ্জু শেখ হাসিনার সরকারে একবার যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর এখন পরিবেশমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন।
নিজের মন্ত্রণালয়ের সফলতা নিয়ে মঞ্জু বলেন, “অ্যাচিভ করতে পারছি কি করতে পারিনি দ্যাটস নট ইম্পরট্যান্ট। ইম্পরট্যান্ট হল ইমেজ অব দিস মিনিস্ট্রি হ্যাজ ইনক্রিজড। একেবারে পাহাড় সমান হয়ে গেছে তা নয়, কিন্তু কিছু লোকে একটু সম্ভ্রম করে আমাদেরকে।
“আগামীতে আমরা যে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করতে যাচ্ছি, পৃথিবীর কোনো সরকার এটা করে না। ইট ইজ ডিপার্টমেন্টাল ম্যাটার। কেন আমাদের দেশের সরকার প্রধান করেন? টু গিভ দ্য ইম্ফেসিস। পয়সা দেওয়ার চাইতে তার প্রেজেন্সটা ইম্পরট্যান্ট।”
বিশ্ব পরিবেশ দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিতির জন্য প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য মন্তব্য করে মঞ্জু বলেন, “এটা আমি চামচাগিরি করার জন্য বলতেছি না, দালালি করার জন্যও বলতেছি না।”
“আমার জীবনে দালালি করার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করি না। আই হ্যাভ বিন গিভেন গড মোর দ্যান আই ডিজার্ভ,” বলেন তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার এই ছেলে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবসে কর্মসূচি
অন্য বারের মতো বাংলাদেশে এবারও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ৬ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হবে।
পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি প্রতিবছর বিশ্ব পরিবেশ দিবেসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে থাকে। এ বছর প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে- কানেটিং পিপল টু নেচার। যার ভাবানুবাদ করা হয়েছে- প্রাণের স্পন্দনে, প্রকৃতির বন্ধনে। এবার পরিবেশ দিবসে স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে- আই অ্যাম উইথ নেচার। যার বাংলা ভাবানুবাদ- আমি প্রকৃতির, প্রকৃতি আমার।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ৪ জুন সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিবেশ ও বৃক্ষমেলারও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পরিবেশ পদক, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অবদান রাখার জন্য ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’, ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার’ এবং সামাজিক বনায়নে সুবিধাভোগীদের মধ্যে চেক বিতরণ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে পরিবেশ উন্নয়নে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রমের চিত্রও তুলে ধরা হয়।