আসিফ হাসান কাজল | ২০ অক্টোবর ২০১৭ | ৫:৩৩ অপরাহ্ণ
সাগরে নিম্নচাপ এর ফলে গত রাত থেকেই টানা বর্ষন চলছে মাগুরা জুড়ে। আজ শুক্রবার সরকারী ছূটির দিন। সকাল থেকেই কখনো মাঝারী, কখনো ভারী বর্ষন বিরামহীন ভাবে চলছে। নিজের খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ীর বাইরে যাচ্ছে সাধারন মানুষ।
শহরের এক কোনে বাল্য বিবাহ হচ্ছে! দুপুর ৩ টা ঘড়ির সময় গোপন সংবাদ এসেছে মুঠোফোনে। কি বর্ষা কি মেঘ ছুটে তো যেতেই হবে… এই উপজেলার নির্বাহী অফিসার তিনি। দায়িত্ববান এক মানুষ হিসাবে বর্ষাবাদল উপেক্ষা করে পৌছে গেলেন ঘটনা স্থলে রোধ করলেন এক বাল্যবিবাহ। মেয়েটির বয়স ১৩ বছর নিজনান্দুয়ালি কাজল হোসেন এর মেয়ে লাকী খাতুন। ছেলেটির নাম আলামিন বয়স ১৪ বছর। কামাড়বাড়ী নায়েব আলীর ছেলে এই আলামীন।
এত অল্প বয়স থাকায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা শাস্তি দেওয়া ঠিক বিধি সম্মত মনে হয়নি বলে জানান, মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সুফিয়ান।
সে কারনে এলাকার স্থানীয় ও ছেলে মেয়ে উভয়ের অভিভাবক এর সম্মতিতে এই বিবাহ হতে তারা বিরত হয়েছেন। এ সময় প্রচুর উৎসুক জনতা ভিড় জমায়, তখন সকলের মাঝে জন সচেতনামুলক ও বাল্য বিবাহের বিভিন্ন খারাপ দিক জনগনের মাঝে তুলে ধরা হয়।
সকাল ১১ টা, সোহরাব হোসেনের ছেলে রমজান (১৭) হাজরাপুর ইউনিয়ন থেকে বিবাহ করতে চলেছেন। পাশের ইউনিয়ন হাজিপুরের আব্দুল জলিল মন্টুর মেয়ে ডলি খাতুন এর সাথে আগেই বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল বলে জানা যায়।
আজ ছিল কনে ঘরে তোলার দিন ও আনুষ্ঠানিকতা। কিন্তু বাল্য বিবাহ বলে কথা!
খবর পেয়েই মাগুরা সদর ইউএনও। আবু সুফিয়ান হাজীপুর ফাঁড়ি পুলিশ পাঠিয়ে এবং সেখানে চেয়ারম্যান ও নিজে উপস্থিত হয়ে ভাঙা হয়। ওখানে আগেই চুরি করে বিবাহ দেয়া হয়। আজ উঠানোর জন্য বর পক্ষ এসেছিল বলে জানায় স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে গিয়েছিলেন কিন্তু ততক্ষনে বরপক্ষ ও বিয়ের অতিথিগণ বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানা যায়।
এই প্রসঙ্গে বাল্য বিবাহ করতে আসা জামাই রমজান এর সাথে কথা হয়, তিনি জানান, ভাই আমার আজ বিয়ে হবার কথা ছিল কিন্তু হয়নাই। জীবনে তার বিয়ে করার আর ইচ্ছাও নেই বলে জানান, তবে তার বয়স শুনতেই সে নিজ বয়স না বলে ফোন কেটে দেন।
মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সুফিয়ানের কর্মতৎপরতাই জোড়া বাল্য বিবাহ বন্ধ হওয়ায় কৃতজ্ঞতা ও সাধুবাদ জানিয়েছেন উক্ত এলাকাবাসী।
এমন কর্মতৎপরতা প্রসঙ্গে আবু সুফিয়ান বলেন এমন তৎপরতা অব্যাহত থাকবে, আগামী দিনে যেন কেউ বাল্যবিবাহ করতে সাহস না পাই। সদর উপজেলা হোক বাল্য বিবাহ মুক্ত এমন আশাবাদ তিনি ব্যাক্ত করেন।