অনলাইন ডেস্ক | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ৪:৪১ অপরাহ্ণ
মানবিক দিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি। আন্তর্জাতিক সংস্থাদের বলবো তারা যেন রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি চাপ প্রয়োগ করে। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন শেষে এক সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমরা শান্তি চাই, তবে কোনো অন্যায় আমার মেনে নিতে পারি না। মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে।
তিনি বলেছেন, আমরা মিয়ানমার সরকারের কাছে অনুরোধ করবো, তারা যেন নিরীহ মানুষের ওপর নির্যাতন বন্ধ করে। তারা যেন প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে। এক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা সাহায্য করব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। মানবতার খাতিরে এই দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। যতদিন মিয়ানমার সরকার তাদের ফিরিয়ে নিয়ে না যাবে, ততদিন আশ্রয়ের ব্যবস্থা করব।
এ সময় নারী ও শিশুদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠলে চোখ ভিজে ওঠে শেখ হাসিনার। তার সঙ্গে থাকা ছোট বোন শেখ রেহানাকেও চোখ মুছতে দেখা যায়।
তিনি বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে ত্রাণ না দিয়ে, ত্রাণ যেন স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে দেয়া হয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
পরে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখতে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি ১৯০৯ ফ্লাইটটি অবতরণ করে কক্সবাজার বিমানবন্দরে।
এসময় বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বিমানবন্দরে অবতরণের পর সেখান থেকে সড়কপথে উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পের পথে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, পূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, হুইপ ইকবালুর রহিম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম, মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন।
গেলো ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুলিশ পোস্টে হামলা চালায় সে দেশের একটি বিদ্রোহী গ্রুপ। এতে ১২ পুলিশ সদস্যসহ বহু রোহিঙ্গা হতাহত হয়। এ ঘটনায় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সাধারণ মানুষের ওপর হত্যা, ধর্ষণ, বাড়িঘরে আগুনসহ নানা নির্যাতন চালাচ্ছে। প্রতিদিন বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে হাজারো রোহিঙ্গা। জাতিসংঘের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।