এম, এ, রউফ খান রিপন, খুলনা থেকে: | ২৭ জুলাই ২০১৭ | ২:৫২ অপরাহ্ণ
ছবিটি গত রবিবার ৩ টায় দৌলতপুর ওজোপাডিকো অফিস থেকে তোলা
খুলনা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিঃ (ওজোপাডিকোলিঃ) এর প্রিপেইড বৈদ্যুতিক মিটারে টাকা রিচার্জ করাতে সাধারন গ্রাহক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন । ডিজিটালাইজেশন এর অংশ হিসেবে খুলনায় বেশ কিছু এলাকায় পরীক্ষামূলক ভাবে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিঃ বৈদ্যুতিক প্রিপেইড মিটার স্থাপন করেছে । উদ্দেশ্য একটাই গ্রাহক পর্যায়ে আধুনিক সেবা প্রদান।
আর ওজোপাডিকোর এই আধুনিক সেবা প্রদানে সাধারণ গ্রাহক নানামুখী হয়রানি সহ ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন। আগে একজন গ্রাহক নিজ মোবাইল অথবা বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের বিল-পে এর মাধ্যমে বাড়িতে বসেই বিদ্যুৎ বিল প্রদান করতেন। কিন্তু এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে প্রিপেইড কার্ড সংগ্রহ করছেন গ্রাহক। এ যেন ঈদের আগে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ !
প্রিয় পাঠক আমাদের ক্যামেরায় ধারণকৃত ছবিতে অনুমান করা যায় খুলনার গ্রাহক ভোগান্তির বর্তমান অবস্থা। ট্রেনের টিকিট যাত্রীরা ছায়াময় ছাদের নিচে সুন্দর একটি পরিবেশের মধ্যে সংগ্রহ করে। কিন্তু ওজোপাডিকোলিঃ এর গ্রাহকেরা প্রিপেইড রিচার্জ কার্ড সংগ্রহ করছে খোলা আকাশের নিচে।
যাহা আপনারা বৈকালী জংশন মোড়ে দেখতে পাবেন। যদিও ওজোপাডিকোলিঃ বেশ কিছু ব্যাংককে প্রিপেইড মিটার রিচার্জ কার্ড লোড করার অনুমতি দিয়েছে । সেই সকল ব্যাংকের সার্ভিস দেওয়ার সময় সকাল ১০. ৩০ মিনিট থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। কোন ভাবেই দুপুর ১টার পর শত অনুরোধ করেও ব্যাংক থেকে সার্ভিস পায়না গ্রাহক । তাই গ্রাহকদের সকাল সকাল ব্যাংকে সিরিয়াল না দিলে সেই দিন আর রিচার্জ কার্ড ক্রয় করা সম্ভব নয়। আর ওই দিকে বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের মানুষগুলোর অবস্থা কেরোসিন। বিদ্যুৎ বিহীন একটি বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের কি অবস্থা হয় সেটা ব্যাখ্যা নাই বা দিলাম। তাই শত কষ্ট করে হলেও কার্ড কিনতেই হবে। তবে ওজোপাডিকোলিঃ অফিস থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রিপেইড মিটারের রিচার্জ কার্ড বিক্রয় করা হয়। ৪টার পর গ্রাহকেরা কার্ড সংগ্রহ করতে গেলে কাউন্টার থেকে বলা হয় সার্ভার বন্ধ। চাকরিজীবীদের জন্য কার্ড সংগ্রহ করা আরো বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ লাইনে দাঁড়িয়ে ঠেলাঠেলি করে রিচার্জ কার্ড সংগ্রহ করতে সময় লেগে যায় ২ থেকে ৩ ঘন্টা। এত দীর্ঘ সময় অফিস কামাই দেওয়া সম্ভব নয় তাই সেই দিন অফিস থেকে ছুটি নেওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়ে । আবার শুক্রবার ও শনিবার বন্ধের দিন ওজোপাডিকো অফিস ও ব্যাংক থেকে কার্ড রিচার্জ সার্ভিস দেওয়া হয় না। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা।
এতো গেল রিচার্জ কার্ড ক্রয়, এবার আসি ক্রয়কৃত রিচার্জ কার্ড ফিজিক্যালি মিটারে লোড করা প্রসঙ্গে। বেশির ভাগ বয়স্ক লোকের পক্ষে মিটারে টাকা চার্জ করা দুরুহ ব্যাপার। শুধু বয়স্ক নয় বিশ ডিজিটের কোড নম্বর মিটারের প্রবেশ করা যে কারো পক্ষে দুরুহ। তাই গ্রাহকদের অভিমত বাসা বাড়িতে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের পূর্বে গ্রাহকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে গ্রাহকদের হয়রানি অনেক অংশে কমে যেত।
আগে প্রতি মাসে এক বারই বিদুৎ বিলের সাথে সার্ভিস চার্জ, ডিমান্ড চার্জ নেওয়া হতো। কিন্তু এখন মাসে যতবারই প্রিপেইড কার্ড রিচার্জ করা হয় প্রতি বারই সার্ভিস চার্জ, ডিমান্ড চার্জ নেওয়া হয়। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ গ্রাহক। অনেক গ্রাহকের অভিযোগ পূর্বের তুলনায় বর্তমান প্রিপেইড মিটারে টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।
তাই খুলনার বেশীরভাগ গ্রাহকরা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিঃ এর বৈদ্যুতিক মিটার ডিজিটাল ( প্রিপেইড) কিন্তু সার্ভিস এনালগ এটি কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছে না গ্রাহকেরা।