অনলাইন ডেস্ক | ১১ এপ্রিল ২০১৭ | ৪:৩৫ অপরাহ্ণ
নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা ‘মুফতি’ আব্দুল হান্নান ও জঙ্গি শরীফ শাহেদুল আলম বিপুলের সঙ্গে দেখা করতে তাদের স্বজনদের ডেকেছে কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষ। আজ মঙ্গলবার ডাকা হলেও সাক্ষাতের নির্দিষ্ট কোনো সময় দেওয়া হয়নি।
এর আগে গতকাল সোমবার রাষ্ট্রপতির কাছে এই দুই জঙ্গির করা প্রাণভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুর সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠি কারাগারে পৌঁছায়।
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে ফাঁসি কার্যকরের অপেক্ষায় থাকা ‘মুফতি’ হান্নান ও বিপুলকে রাখা হয়েছে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে। সেখানে তাদের সঙ্গে দেখা করতে স্বজনদের ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘ফাঁসি কার্যকরের আগের সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া যেহেতু শেষ হয়ে গেছে, সেহেতু দুই আসামির পরিবারের সদস্যদের খবর দিয়েছি। যদি তারা চান, তবে কারাগারে এসে আসামিদের সঙ্গে দেখা করে যেতে পারেন। ’
ফাঁসি কার্যকরের সব প্রস্তুতি থাকলেও বিধান অনুসারে এটি আসামিদের সঙ্গে স্বজনদের ‘শেষ সাক্ষাৎ’ কি-না, তা বলতে রাজি হননি এই কারা কর্মকর্তা।
এ ছাড়াও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপনকে রাখা হয়েছে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে। তার সঙ্গে ইতিমধ্যেই দু’দফায় শেষ সাক্ষাৎ করেছেন তার স্বজনরা। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার সকালে তার বাবা আ. ইউসুফ, মা আজিজুন্নেছা, ভাই নাজমুল ইসলাম ও তার স্ত্রী দেখা করে যান। আর গত রবিবার তার চাচা আব্দুন নুর, চাচি আজিজুন্নেছা, চাচাতো বোন রুমেনা, ফুফাতো বোন লুৎফা বেগম ও ফুফাতো ভাই জাবির হোসেন আসেন।
জানা গেছে, রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচের চিঠিটিও আজ সকালে কারাগারে পৌঁছায়। চিঠি কারাগারে পৌঁছানোর পর তিনজনকেই তা পড়ে শোনানো হয়েছে বলে জানান স্ব স্ব কারা কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলায় হাইকমিশনারসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৫ আসামির মধ্যে ‘মুফতি’ হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিল করেন। বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন দুই আসামি ‘মুফতি’ হান্নান ও বিপুল। এরপর গত বছরের ০৭ ডিসেম্বর আসামিদের আপিল খারিজ করে চূড়ান্ত রায় দেন আপিল বিভাগ। আসামিরা এ রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ আবেদন জানালেও গত ১৯ মার্চ তা খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।
রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২১ মার্চ প্রকাশিত হলে পরদিন ২২ মার্চ তিন জঙ্গির মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করে কারাগারে পাঠান বিচারিক আদালত।