অনলাইন ডেস্ক | ০৯ এপ্রিল ২০১৭ | ৯:০০ অপরাহ্ণ
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘ভারতে নরেন্দ্র মোদি নির্বাচিত হওয়ার পর যারা ফুরফুরে ছিলেন এখন কেন তাদের মনে বিষাদ। এখন কেন মনের জ্বালা। এখন কেন গাত্রদাহ।’
‘সরকার ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিয়েছে’ খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের উপযুক্ত প্রমাণ দাবি করেন। প্রমাণ পেশ করতে না পারলে খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
রবিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মুজিবনগর সরকার দিবস উপলক্ষে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
শেখ হাসিনার ভারত সফর প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যিনি প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) গঙ্গা চুক্তি করেছেন, একটু অপেক্ষা করুন, ধৈর্য্ ধরুন, তিস্তাসহ অন্যান্য নদীর পানি বন্টনের বিষয়টি এবার আরও এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে, চুক্তি সম্পাদন এখন কিছু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ভারতের জনগণের নেতা নরেন্দ্র মোদি আমাদের দেশের জনগণের কথা ভেবে অনতিবিলম্বে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের যথাযথ উদ্যোগ দেবেন। এটা যত দ্রুত সম্ভব হবে, ততই মঙ্গল হবে।’
কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের আবেগ, অনুভূতিকে বন্ধু ভারত সরকার মূল্য দেবে, সেটা আমরা আশা করি।’ এ চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্কের মাত্র আরও নতুন উচ্চতায় উন্নতি হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
‘আওয়ামী লীগ ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিয়েছে’ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্য প্রমাণের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঐতিহাসিক ভারতে সফরে যে ২২টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি হয়েছে, তা কোনো গোপন বিষয় নয়, সবই প্রকাশ্য। এ চুক্তির লাইন বাই লাইন পড়ে দেখুন, আর এখানে কোথাও দেশ বিক্রি, দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হয়েছে এর প্রমাণ দেখিয়ে জবাব দিতে হবে। আর যদি তথ্য-উপাত্ত দিয়ে প্রমাণ করতে না পারেন তাহলে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পার্বত্য শান্তি চুক্তির পরে বিএনপি বলেছিল ফেনী থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আর বাংলাদেশের থাকবে না, ভারতের অংশ হয়ে যাবে। এখন কি এটা ভারতের অংশ?’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা দেশ বিক্রির কথা বলছেন, পাকিস্তানের কাছে তাদের বিবেক বিক্রি হয়েছে, তাদের অন্তর বিক্রি হয়েছে ইসলামাবাদের কাছে। কাজেই তারা এটা বলবেই। তারা ভারত বিদ্বেষ অপপ্রচার করে, প্রোপাগান্ডা করে। তারা ভারত থেকে কিছুই আদায় করতে পারেনি। আমাদের (আওয়ামী লীগ) পলিসি হচ্ছে, ভারতের সাথে সুসম্পর্ক রেখে আমাদের পাওনা আদায় করে নেয়া। বৈরিতা করে কখনো পাওনা আদায় করা যায় না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে যেকোনো চুক্তি আমরা করে যাবো। এটা কে কী মনে করলো, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।’
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যে দলের প্রতিষ্ঠাতা ৭ মার্চকে স্বাধীনতার সবুজ সংকেত বলে নিবন্ধ লিখেছেন, সেই দল এখন ৭ মার্চ পালন করে না। ১৭ এপ্রিল গঠিত সরকারের অধীনে যিনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন সেই দিনটিও তার দল পালন করে না। এ দিনটির মধ্যেই কি তারা (বিএনপি) ভারতের গন্ধ খুঁজে পান? যারা ৭ মার্চ, ১৭ এপ্রিল পালন করে না তাদের বিবেকতো বিক্রি হয়ে গেছে পাকিস্তানের কাছে।’
দলের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার কোনো পিছুটান নেই। নেত্রী আমাকে বড় আশা করে দায়িত্ব দিয়েছেন, তাঁর মুখ আমাকে রক্ষা করতে হবে। আগামী নির্বাচনের জন্য জনগণের সামনে একটি কোন্দলমুক্ত, আধুনিক, স্মার্ট দল উপহার দিতে চাই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দলে ঐক্য ফিরিয়ে আনতে হবে। সম্প্রতিককালে দলের অনৈক্যর জন্য মূল্য দিতে হয়েছে।’ এটা দূর করতে সবার সহযোগিতা চান ওবায়দুল কাদের।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছারের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ নাথ প্রমুখ।