আজকের অগ্রবাণী ডেস্ক: | ১৮ জুলাই ২০১৭ | ৯:৩১ পূর্বাহ্ণ
দেশের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে প্রতিকূল সময় পাড়ি দিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। আদালতের রায়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন তাদের বাতিল হয়ে গেছে। আদালতের নির্দেশেই দলীয় প্রতীক দাড়িপাল্লাও হারিয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে। নিবন্ধন ফিরে না পেলেও দলটি ভোট যুদ্ধে নামতে চাইছে। বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ থেকে ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন বর্জন করলেও আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত।
৬০ আসনে লড়ার মতো সক্ষমতা রয়েছে তাদের এবং সেটা মাথায় রেখেই তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জোটভিত্তিতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে জানাতে চাইলে ওই নেতা বলেন, আপাতত জোটের কথা আমরা ভাবছি না। দলীয় ভাবেই নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। শরিকদের সঙ্গে আসন নিয়ে আলোচনা হবে নির্বাচনের আগে। কেমন পরিবেশে, কেমন নির্বাচন হবে তার ওপর নির্ভর করবে অনেক কিছু।
দলীয় সূত্র জানা গেছে, জামায়াতের যে প্রার্থীরা যেসব আসনে নির্বাচনের প্রস্ততি নিচ্ছেন সেগুলো হলো-
এমএ হাকিম (ঠাকুরগাঁও-২), মোহাম্মদ হানিফ (দিনাজপুর-১), আনোয়ারুল ইসলাম (দিনাজপুর-৬), মনিরুজ্জামান মন্টু (নীলফামারী-২), আজিজুল ইসলাম (নীলফামারী-৩), হাবিবুর রহমান (লালমনিরহাট-১০), শাহ হাফিজুর রহমান (রংপুর-৫), নূর আলম মুকুল (কুড়িগ্রাম-৪), নজরুল ইসলাম (গাইবান্ধা-৩), আবদুর রহিম সরকার (গাইবান্ধা-৪), নুরুল ইসলাম বুলবুল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২), মো. লতিফুর রহমান (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), আতাউর রহমান (রাজশাহী-৩), রফিকুল ইসলাম খান (সিরাজগঞ্জ-৪), আলী আলম (সিরাজগঞ্জ-৫), মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান (চুয়াডাঙ্গা-২), মতিয়ার রহমান (ঝিনাইদহ-৩), আজিজুর রহমান (যশোর-১), আবু সাইদ মুহাম্মদ সাদাত হোসাইন (যশোর-২), অ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াদুদ (বাগেরহাট-৩), শহীদুল ইসলাম (বাগেরহাট-৪), মিয়া গোলাম পারওয়ার (খুলনা-৫), শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুছ (খুলনা-৬), ইজ্জতউল্লাহ (সাতক্ষীরা-১), মুফতি রবিউল বাশার (সাতক্ষীরা-৩), গাজী নজরুল ইসলাম (সাতক্ষীরা-৪), শফিকুল ইসলাম মাসুদ (পটুয়াখালী-২), অধ্যাপক জসিমউদ্দিন (ময়মনসিংহ-৬), ফরীদউদ্দিন (সিলেট-৫), মাওলানা হাবিবুর রহমান (সিলেট-৬), ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের (কুমিল্লা-১১), শামসুল ইসলাম (চট্টগ্রাম-১৪), হামিদুর রহমান আযাদ (কক্সবাজার-২) এবং শাহজালাল চৌধুরী (কক্সবাজার-৪)।
উল্লেখিত ৩৪টি আসনের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, সিরাজগঞ্জ-৫, ময়মনসিংহ-৬, সাতক্ষীরা-১, পটুয়াখালী-২, কক্সবাজার-৪ এই ছয়টি আসনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী ছিল না। ময়মনসিংহ-৬ আসনে ২০০১ সালে জামায়াত প্রার্থী জোটের মনোনয়ন পেয়েও পরাজিত হন।প্রার্থীর নাম এখনই না জানা গেলেও পঞ্চগড়-২, রাজশাহী-২, রাজশাহী-৫, বগুড়া-২ ও চট্টগ্রাম-৭ আসনে জামায়াত লড়বে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ, সর্বশেষ ২০১৪-এর উপজেলা নির্বাচনে এসব এলাকায় জয়ী হয়েছেন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা।
জামায়াতের যেসব নেতা ২০০৮ সালে জয়ী হয়েছিলেন, পরে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত ও বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছেন সেসব আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে ভাবছে জামায়াত। তাদের মধ্যে ফাঁসি হয়েছে দলের আমির মতিউর রহমান নিজামী (পাবনা-১), মুহাম্মদ কামারুজ্জামান (শেরপুর-১) ও দলের মহাসচিব আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের (ফরিদপুর-৩); আমৃত্যু কারাদণ্ড ভোগ করছেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (পিরোজপুর-১); আবদুস সুবহান (পাবনা-৫) ও এটিএম আজহারুল ইসলামের (রংপুর-৩) ফাঁসির রায় রয়েছে। জানা গেছে, ফরিদপুরে মুজাহিদের আসন বাদে বাকিগুলোতে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত।
এ ছাড়া আবদুল আজিজ (গাইবান্ধা-১) ও আবদুল খালেক মণ্ডলের (সাতক্ষীরা-২) বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মামলা চলেছে বলে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না ধরে নিয়ে জামায়াত নতুন প্রার্থী খুঁজছে।প্রার্থী বদল হতে পারে মেহেরপুর-১ আসনেও। ২০০৮ সালে এখানে প্রার্থী হয়েছিলেন ছমিরউদ্দিন। ২০১৩ সালে তার ছেলেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে কিছু লোক তুলে নেওয়ার পর তার লাশ পাওয়া যায়। এরপর ছমিরউদ্দিন আর রাজনীতিতে সক্রিয় নন বলে জানা গেছে।