অনলাইন ডেস্ক | ০২ নভেম্বর ২০১৭ | ১২:৩৬ অপরাহ্ণ
মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে রাজধানীতে মা-ছেলে এবং বাবা-মেয়ে খুন হলো। এই দুই খুনের ঘটনার সাথে কারা জড়িত পুলিশ এখনো তা উদঘাটন করতে পারেনি।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডার ময়নারবাগ এলাকার একটি বাসার ছাদ থেকে বাবা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে একটি বাড়িতে মা ও ছেলে খুন হন।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ওয়াজেদ আলী সাংবাদিকদের জানান, ময়নারবাগ এলাকার নিহত দুজন হলেন বাবা মো. জামিল হোসেন (৪২) ও মেয়ে নুসরাত (৯)।
তিনি জানান, উত্তর বাড্ডার ৩০৬ নম্বর ময়নারবাগের তিনতলায় জামিল-আরজিনা দম্পতি থাকতেন। এই দম্পতির এক মেয়ে ও পাঁচ বছর বয়সী ছেলে।
ওয়াজেদ আলী বলেন, বাবা-মেয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। রাতের কোন এক সময়ে তাদের খুন করা হয়ে থাকতে পারে। এ ঘটনায় গৃহকর্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে একটি বাড়িতে ঢুকে মা ও ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত ব্যক্তিরা হলেন শামসুন্নাহার (৪৬) ও তাঁর ছোট ছেলে সাজ্জাদুল করিম ওরফে শাওন (১৮)।
শামসুন্নাহারের স্বামী আবদুল করিম ওই বাড়ির মালিক এবং তিনি একজন ব্যবসায়ী। পুলিশ গতকাল রাতেই করিমকে আটক করে রমনা থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় বাড়ির দারোয়ান আবদুল নোমান ও বাসার গৃহকর্মী রাশিদা বেগমকেও পুলিশ আটক করেছে। পুলিশ সাজ্জাদুলের লাশের পাশ থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করেছে। সাজ্জাদুল উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এ লেভেল পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, শামসুন্নাহার ছাড়াও ব্যবসায়ী আবদুল করিমের আরেক স্ত্রী আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহ ও অর্থসম্পদ নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।
বাড়ির দারোয়ান নোমানের ভাষ্যমতে, মাগরিবের নামাজের পর ওপর থেকে নেমে আসা এক ব্যক্তি তাকে বলছিলেন, ‘ওপরে মারামারি হচ্ছে সেখানে যান।’ এরপর তিনি ওপরে গিয়ে মা ও ছেলের লাশ পরে থাকতে দেখেন।
পুলিশ বাড়ির দারোয়ান নোমান ও গৃহকর্মী রাশিদা বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় রাশিদা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, কিছুদিন আগে তিনি এই বাড়িতে খণ্ডকালীন কাজ নেন।
গতকাল মাগরিবের নামাজের পর তিনি দরজায় টোকা দিলে গৃহকর্ত্রী দরজা খুলে দেন। তিনি রান্নাঘরে ঢোকার পর বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দেওয়া হয়। রাশিদা বলেন, ‘আমি চিৎকার করে বলেছিলাম, আম্মা দরজা বন্ধ করলেন কেন, দরজা খোলেন। এ সময় বাঁচাও! বাঁচাও! বলে চিৎকার করছিল কেউ। কিছুক্ষণ পর বাড়ির দারোয়ান এসে ছিটকিনি খুলে দেন।’ হত্যার কারণ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান রাশিদা।