অনলাইন ডেস্ক | ২১ জুলাই ২০১৭ | ১২:০১ পূর্বাহ্ণ
শেরপুরে নিজের কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের মামলায় হানিফ উদ্দিন (৪২) নামে এক বাবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। ২০ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশু আদালতের বিচারক (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ মুসলেহ উদ্দিন আসামির উপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষণা করেন। হানিফ উদ্দিন সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের ধোপাঘাট হদিপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে এবং ২ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তানের জনক। আত্মীয়-স্বজনসহ আইনজীবীদের ঘৃণার কারণে ওই মামলায় আসামি পক্ষে কেউ আইনি লড়াই করেননি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন শেরপুর শিশু আদালতের পিপি (সরকারি কৌসুলি) অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু। তিনি মামলার নথির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হানিফ উদ্দিন বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীকে নিয়ে সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের ধোপাঘাট হদিপাড়া গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই হিসেবে বসবাস করছিল। হানিফ অলস ও জুয়াড়ি প্রকৃতির হওয়ায় অনেক কষ্টে সংসার চালাতে হতো স্ত্রীকেই। ওই অবস্থায় তাদের সংসারে ২ মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। ভিকটিম (১৫) তাদের বড় মেয়ে এবং সে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে বাড়িতেই থাকতো। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর রাতে নিজের বসতঘরে সুযোগমত পেয়ে নরপশু সেই বড় মেয়েকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। এরপর আরও কয়েক দফায় হানিফ মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। ওই অবস্থায় ধর্ষিতা কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তার মাসহ আত্মীয়-স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদে সে বাবার দ্বারা কয়েকমাস যাবৎ ধর্ষণের তথ্য ফাঁস করে।
ওই ঘটনায় একই বছরের ২০ অক্টোবর ধর্ষিতা কিশোরীর মা বাদী হয়ে নরপশু বাবা হানিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে শেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। একই দিন ওই মামলায় ধর্ষিতা কিশোরীর আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে। অন্যদিকে ২৫ অক্টোবর গ্রেপ্তার হয় আসামি হানিফ উদ্দিন। পরদিন সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি হানিফের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জীবন চন্দ্র বর্মণ। আদালত ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ওই দণ্ডাদেশের রায় দেন।