| ২৬ নভেম্বর ২০২০ | ১০:৩৬ অপরাহ্ণ
সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে ইয়াং ছেলেমেয়ে ও শিক্ষার্থীরা অভিভাবক ছাড়া বাইরে যেতে পারবে না—মাদারীপুরের জেলা প্রশাসকের এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষ আলোচনা ও সমালোচনা করছে। এ কারণে বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন স্থানে সচেতনতামূলক মাইকিং করার কথা থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা করা হয়নি।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিবচর উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ‘ইয়াং’ ছেলেমেয়ে ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা তার বক্তব্যে প্রকাশ করেন। এরপর তিনি চায়ের দোকানগুলোয় টেলিভিশন রাখতে পারবে না বলেও বক্তব্য দেন।
এদিকে জেলা প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তে গত বুধবার থেকে জেলায় সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়েছে। কেউ জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হলেও কেউ কেউ এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে সমালোচনা করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও এ নিয়ে লেখালেখি চলছে।
নাগরিক অধিকার বিবেচনায় জেলা প্রশাসকের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করেন জেলার সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি খান মোহাম্মদ শহীদ। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ডিসির সিদ্ধান্তের কয়েকটি বিষয় বিতর্কিত। তবে জেলার পরিস্থিতি বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারেন না। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত সাময়িক হতে পারে, দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। বর্তমানে পরিস্থিতি বিবেচনায় কোনো মানুষকে ফোর্স না করে সচেতনতার মাধ্যমে ইয়াং ছেলেমেয়ে ও শিক্ষার্থীদের সতর্ক করতে হবে। ডিসি বা এসপি কোনো মানুষকে ইনফোর্স করার মতো অধিকার রাখেন না।’ তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। চায়ের দোকানে টিভি না থাকলেই কী? ছেলেরা অন্য জায়গায় গিয়েও আড্ডা দিতে পারে না? তাই এসব সিদ্ধান্তে সরাসরি না গিয়ে প্রশাসনের উচিত সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে সবাইকে নিয়ে কাজ করা।
চেয়েছিলাম মাইকিং করে সবাইকে সচেতন করতে। কিন্তু কিছু মানুষ এ ব্যাপারটা অন্যদিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে আমরা মাইকিংয়ের বিষয়টি আজ (বৃহস্পতিবার) করিনি।
জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতামূলক মাইকিং করার কথা গত বুধবার জানানো হয়। এমনকি জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত না মানলে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সহযোগিতায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করার কথাও বলা হয়। কিন্তু জেলাজুড়ে সমালোচনা শুরু হওয়ার মাইকিং কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত রাখা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।