অনলাইন ডেস্ক | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ | ৭:৪৯ অপরাহ্ণ
ফের প্রশ্নবিদ্ধ হলো শিক্ষকতা নামের মহান পেশা! এমন ঘটনাকে ভয়ানক অশনিসংকেত হিসেবেই দেখছেন সচেতন অভিভাবকেরা। এবার শিক্ষকতাকে পুজি করে নবম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে বিকৃত লালসার ফাঁদে আটকানো শিক্ষককে প্রকাশ্যেই জুতাপেটা করেছেন ক্ষুব্ধ স্কুলছাত্রী। এ ঘটনায় চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সচেতন মহল।
ঘটনাস্থল- ফরিদগঞ্জ এ.আর. মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়।
রাসেল হাসান নামের এক শিক্ষককে প্রকাশ্যে স্কুলের ভেতরেই শার্টের কলার ধরে টেনে হিচড়ে জুতাপেটা করেছে এক ছাত্রী। ঐ ছাত্রীর অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে ঐ শিক্ষক নানা ছুতোয় তার সরলতার সুযোগ নিয়ে তাকে যৌন হয়রানি করেছে। সর্বশেষ শিক্ষকের কু-প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তাকে কেমিস্ট্রিতে ফেল করিয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠিয়েছেন ভুক্তভোগি স্কুলছাত্রী।
ফরিদগঞ্জ এ.আর. মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় আঙ্গিনায় কয়েক শত অভিভাবক ও শিক্ষার্থীর সামনে এ ঘটনা ঘটেছে গতকাল বেলা ১২টায়। মুহূর্তে আশপাশে ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে সমগ্র এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। কৌতুহলী শত শত মানুষ ছুটে যায় স্কুল আঙ্গিনায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্রীর অভিভাবক জানিয়েছে, ঘটনার সময় ঐ স্কুলছাত্রী স্কুলে উপস্থিত হয়ে রাসেল হাসানকে শিক্ষক কক্ষ থেকে ডেকে বাইরে নেয়।
দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ছাত্রী পা থেকে জুতা খুলে রাসেল হাসানকে জুতাপেটা শুরু করে। ঘটনার আকস্মিকতায় আশপাশে উপস্থিত লোকজন ছুটে যায়। তারা ছাত্রীকে থামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু, ক্ষুব্ধ ছাত্রী রাসেল হাসানের শার্ট টেনে ধরে রাখে ও চিৎকার করতে থাকে। সে অভিযোগ করে জানায়, রাসেল হাসান তাকে ফুসলিয়ে বিভিন্ন সময় যৌন হয়রানি করেছে।
কুপ্রস্তাব গ্রহণ না করায় রাসেল হাসান ক্যামিস্ট্রি বিষয়ে ছাত্রীকে ফেল করিয়েছে। এমনি হৈ-হট্টগোলের মধ্যে রাসেল হাসান দৌড়ে শিক্ষক কক্ষে ঢুকে পড়ে। কয়েক মিনিট পর প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজলসহ অপরাপর শিক্ষক ছুটে যান।
খবর পেয়ে অভিভাবক প্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার লোকজনও সেখানে জড়ো হয়। ছাত্রীর বিক্ষুব্ধ অভিভাবকগণ অনবরত চিৎকার করে বলেন, গত এক বছর যাবত ছাত্রীর সঙ্গে কি হয়েছে আপনারা শোনেন এবং এ মুহূর্তে বিচার করেন।
ছাত্রীর মামা অভিযোগ করেন, রাসেল হাসান তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে নানা সময় এমন ঘৃণ্য কাজ করেছে। ছাত্রীর বাসায় রাসেল হাসান যাতায়াত করতো বলেও তারা উপস্থিত সবার সামনে অভিযোগ করেন। এ সময় রাসেল হাসান নীরব ছিল।
উপস্থিত প্রধান শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিতাদের আশ্বস্ত করে বলেন, এখনই ৪/৬ সদস্য বিশিষ্ট্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে অপরাধ সাব্যস্ত হলে রাসেল হাসানকে আইনের আওতায় নেয়া হবে। কিন্তু, ছাত্রীর অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমরা এখানে বিচার পাবো কিনা এ নিয়ে সন্দেহ আছে।
তারা অভিযোগ করে বলেন, এর পূর্বে রাসেল হাসানের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু, কোনো বিচার হয়নি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রাসেল হাসান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এ সবই ষড়যন্ত্র। পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।