
ডেস্ক রিপোর্ট | বৃহস্পতিবার, ০৮ জুলাই ২০২১ | প্রিন্ট
ভারতে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ভারতে পাচার করার অভিযোগে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় আরো একটি মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলাটি করেন পাচারকৃত কিশোরীর বাবা।এ মামলায় আসামি করা হয়েছে টিকটক হৃদয়সহ চারজনকে।
মামলায় অটোরিকশা চালক বাবা উল্লেখ করেন, অজ্ঞাতনামা কয়েকজন আসামিদের সহযোগিতায় তার কিশোরী মেয়েকে ভারতে পাচার করে হৃদয় বাবু।
ভারতে তরুণী নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এ নিয়ে মোট ছয়টি মামলা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হাফিজ আল ফারুক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সিদ্দিক মাস্টারের ঢালের একটি বাসায় দুই মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন অটোরিকশা চালক। বড় মেয়ে (১৫) বিজি প্রেস স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। করোনা মহামারির কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় সে মাঝেমধ্যে তার মা ও ছোট বোনকে নিয়ে হাতিরঝিল ঘুরতে যেতো। সেখানে গিয়ে মেয়ের সঙ্গে কয়েকজন ছেলে-মেয়ের পরিচয় হয়। এর মধ্যে মগবাজারের হৃদয় বাবু ছিল। সে আরো কয়েকজন ছেলেমেয়েসহ টিকটক শুটিং করতো। আমার স্ত্রী এসব ছেলেমেয়েদের কথা আমাকে জানালে আমি মেয়েকে তাদের সঙ্গে মিশতে নিষেধ করি। আমার মেয়ে আর মিশবে না বলেও কথা দেয়।
পরবর্তী ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, গত ১৭ মার্চ বিকেলে আনুমানিক ৫টায় মেয়ে ৩০ মিনিটের জন্য হাতিরঝিলে ঘুরতে যাবে বলে বাসা থেকে বের হয়। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সে বাসায় না ফেরায় তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল করে বন্ধ পাই। রাতেও আমার মেয়ে বাসায় না ফেরায় আমরা হাতিরঝিল লেকসহ বিভিন্ন স্থানে তাকে খুঁজেছি। কিন্তু তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আমাদের আত্মীয়স্বজন ও আমার মেয়ের পরিচিত বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারাও কোনো সন্ধান দিতে পারেনি। এরপর গত ২ জুন বাংলাদেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে একটি মেয়ের সাক্ষাতকার প্রচারিত হয়। যে সাক্ষাতকারে মেয়েটি জানায় তাকে ভারতে পাচার করা হয়েছিল। অমানবিক শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের পর সে ভারত থেকে পালিয়ে দেশে ফিরেছে। অজ্ঞাতনামা কয়েকজন আসামিদের সহযোগিতায় হৃদয় বাবু তাকে ভারতে পাচার করে। এ সময় সে বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত যে মেয়েগুলোকে ভারতে দেখেছে তাদের নাম বলে। সেখানে আমার বড় মেয়ের নামও ছিল।
পাঁচার হওয়া ছাত্রীর বাবা বলেন, সাক্ষাতকার দেওয়া মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগ করে আমার মেয়ের ছবি দেখালে সে আমার মেয়েকে ব্যাঙ্গালুরু আনন্দপুরা সার্কেলের বাসায় আরো কয়েকজন মেয়েসহ দেখেছে বলে শনাক্ত করে। সে আরো জানায়- সবুজ, সাগর রুবেল রাহুলসহ আরও কয়েকজনের নেতৃত্বে এ মানবপাচার চক্রটি হৃদয় বাবুর মাধ্যমে তার মেয়েকে চাকরির প্রলোভনে ভারতে পাচার করেছে বলে সে শুনেছে। সে আরও জানায়, রিফাদুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২৬), সবুজ (৩০), সাগর (২৭) ও রুবেলসহ (৩১) অজ্ঞাতনামা আসামিরা গত ১৭ মার্চ আমার মেয়েকে পাচারের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর আনন্দপুরা সার্কেলের একটি বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে মারপিট করে জোরপূর্বক বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, ম্যাসাজ পার্লার ও বাসায় পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে। এখন পর্যন্ত অদ্যবধি আমার মেয়ের কোনো সন্ধান পাইনি। আন্তর্জাতিক পাচারকারীদের কাছে পাচার বা বিক্রি করার উদ্দেশ্যে আমার মেয়েকে ফুসলিয়ে ভারতে নিয়ে যায় আসামিরা।
Posted ১০:৩৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৮ জুলাই ২০২১
ajkerograbani.com | shalauddin Razzak
.
.
Archive Calendar