
নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে (সন্মান) স্নাতক প্রথম বর্ষের লোক দেখানো ভর্তি পরীক্ষা প্রশাসনিক দুর্নীতির মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
চলতি মাসের ২-৫ তারিখে সম্পূর্ণ হওয়া ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয় ৮ ডিসেম্বর। প্রকাশিত ফলাফলে মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ভর্তি আগামী ৫, ৬ ও ৭ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। আর অপেক্ষামান তালিকা হতে ভর্তি করানো হবে ১৩ ও ১৪ তারিখ।
এদিকে প্রশাসনিক বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে হাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষার সার্বিক বিষয় নিয়ে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. ফজলুল হক “দৈনিক আজকের অগ্রবানী” অনলাইন পত্রিকায় বলেছেন, বিগত বছরের তুলনায় এইবার প্রশ্নপত্র অনেক স্ট্যান্ডার্ড হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন পক্ষ থেকে আমরা কোন অভিযোগ পাইনি। নিয়ম অনুযায়ী প্রশাসনিক দিক থেকে যদি কোন প্রশ্নপত্র ভুল হয় তার নম্বর সবাইকে দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার প্রশ্নপত্রে কোন ভুল ছিল না।
প্রক্সি সম্পর্কে হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার বলেন, গত বছরের তুলনায় এইবার প্রক্সিও কম হয়েছে। প্রক্সির ঘটনায় এবার একজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয় এবং শাস্তি স্বরূপ তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তিনি আরও বলেন, আমিনুল নামে এক কর্মচারী ভর্তি জালিয়াতির সাথে জড়িত থাকায় তাকে তাৎক্ষনিক ভর্তি পরীক্ষার ডিউটি থেকে বিরত রাখা হয়। তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, তদন্ততের রিপোর্ট অনুযায়ী তার বিচার হবে।
কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার ৪টি ইউনিটে দেখা যায় প্রায় প্রতিটি শিফটে একাধিক প্রশ্ন ভুল।
‘এ’ ইউনিটে ইংরেজি ২৩ নং প্রশ্ন ভুল। ‘বি’ ইউনিটে বি১ শিফটে গনিত ৯ ও ইংরেজি ২৫ নং প্রশ্ন ভুল, বি২ শিফটে রসায়ন ৬ নং প্রশ্ন ভুল, বি৩ শিফটে পদার্থ-রসায়ন-গনিত অংশের প্রশ্ন বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে হুবহু দেওয়া। ‘সি’ ইউনিটে ইংরেজি ১ নং ও ৩৬ নং প্রশ্ন ভুল এবং সাধারন জ্ঞান অংশে ক্যাসিনো কোন ভাষার শব্দ প্রশ্ন দেয়। ‘ডি’ ইউনিটের ডি১ শিফটে ১৯ নং প্রশ্নের পর ২০ নং না দিয়ে সে জায়গায় ১২০ নং প্রশ্ন, ডি২ শিফটে ৪১ নং প্রশ্নের পরে ৪২ নং না দিয়ে পরপর দুবার ৪৩ নং প্রশ্ন, ডি৩ শিফটে ইংলিশ অংশে ২২ নং প্রশ্নের উত্তর ভুল, ডি৪ শিফটে ইংলিশ ভার্সন প্রশ্নে সাধারণ জ্ঞান অংশে প্রশ্ন গুলো বাংলায় ছিল। এতে করে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার সময় চোখের জল ফেলেছে।
এছাড়াও বর্তমান প্রশাসন সবচেয়ে বড় ভর্তি বানিজ্য করেছে প্রকাশিত ফলাফল নিয়ে। সেখানে প্রায় অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থী এক ইউনিটে একই সাথে মেধা ও অপেক্ষামান তালিকায় স্থান পায়। যা ভর্তি দুর্নীতির বড় প্রমাণ এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নিয়ে খেলা। ‘বি’ ইউনিটে ২০৯৪৭০ নং রোল আর্কিটেকচারে মেধা তালিকায় ৫ এবং বি২ শিফটে অপেক্ষমাণ ৩১০ হয়, ২১৩৯৭৪ নং রোল একই সাথে আর্কিটেকচারে ১ ও ইইই তে ৩১ হয়, ২০৯৮৬২ নং রোল একই সাথে আর্কিটেকচারে ৪ ও পরিসংখ্যানে ১৪৪ হয়, ২১০৯৪৯ নং রোল আর্কিটেকচারে ৮ ও বি২ শিফটে অপেক্ষমাণ ৪৮৮ হয়, ২১১২৯৩ নং রোল বি২ শিফটে অপেক্ষমাণ ১০৪ ও আর্কিটেকচারে অপেক্ষামাণ ১০ হয়, ২১০৪৭১ নং রোল আর্কিটেকচারে অপেক্ষমাণ ১১ ও বি২ শিফটে অপেক্ষমাণ ৪০৯ হয়, ২০৯২১৭ নং রোল বি২ শিফটে পদার্থ বিভাগে মেধা তালিকায় ১৫৫ ও আর্কিটেকচারে ১৩ অপেক্ষমাণ হয়, ২০৯৪৩৪ নং রোল বি২ শিফটে ৩৯৪ ও আর্কিটেকচারে ১৬ হয়, ২১৪৫৩০ নং রোল বি২ শিফটে ২০৫ ও আর্কিটেকচারে ১৮ হয়, ২১০২২০ বি২ শিফটে অপেক্ষমাণ ৪৬১ ও আর্কিটেকচারে অপেক্ষমাণ ২২ হয়, ২০৮২৬২ নং রোল বি২ শিফটে ৪০৬ ও আর্কিটেকচারে ২৩ অপেক্ষমাণ হয়।
উল্লেখ্য এইবার ভর্তি পরীক্ষায় সাথে ছবি না নিয়ে আসায় প্রায় শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমিত দিলেও ৪-৫ জন কে পরীক্ষা দিতে দেয়নি। এদের মধ্যে সাইফুল নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা তিন জন বন্ধু ছবি ছাড়ায় এসেছিলাম। কিন্তু ভিন্ন রুমে সিট পড়ায় আমার ২ বন্ধু পরীক্ষা দিতে পারলেও আমাকে পরীক্ষা দিতে দেয়নি স্যারেরা।
Posted ৯:৫২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২০
ajkerograbani.com | shalauddin Razzak
.
.
Archive Calendar