
নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
ঢাকা জেলার ঐতিহ্যবাহী ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারি স্কুল ও কলেজের কথাই বলা যাক। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। শতবর্ষী এই প্রতিষ্ঠানের কলেজ শাখা শুরু হয় ২০১৩ সালে। এখন প্রতিষ্ঠানটির স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক হাজার ৭০০, কারিগরি শাখায় ১৮০ ও কলেজে ৮০০, মোট দুই হাজার ৬০০ জন। স্কুলশিক্ষক আছেন ৪৩ জন, কারিগরি শিক্ষক সাত জন ও কলেজের শিক্ষক ১৪ জন। ২১ বিঘা জমিতে ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারি স্কুল ও কলেজ অবস্থিত। পূর্ব-পশ্চিমে ইউ আকৃতি প্রতিষ্ঠানটির পশ্চিমে শিক্ষকদের অফিস কক্ষ। উত্তরে স্কুল এবং দক্ষিণে স্কুল ও কলেজের ভবন রয়েছে। স্থান সংকুলান হয় না বলে স্কুলের ক্লাস চলে দুই শিফটে।
সম্প্রতি সরকারি অর্থায়নে তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে একটি চারতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। মার্চ মাসে এর উদ্বোধন হয়। তবে গত ছয় মাস ধরে কোনো শিক্ষার্থী সেখানে যাচ্ছে না। আগ্রহ নেই শিক্ষকদেরও। এই অবস্থার কারণ পাশের ডেইরি ফার্ম। ফার্ম থেকে আসা দুর্গন্ধে ভবনটিতে পাঠদান অসম্ভব হয়ে পড়েছে। খামারের প্রতিষ্ঠাতা প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না স্থানীয় এমপি-মেয়র। ফলে সাড়ে তিন কোটি টাকার ওই ভবন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, যে স্থানটিতে চারতলা ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে তার পেছনে স্কুলের জমিতে বিশাল একটি গরুর খামার রয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ধামরাই ডেইরি ফার্ম’। ফার্মটির উত্তর ও পূর্বপাশে আবাসিক এলাকা,পশ্চিমে পৌরসভার কার্যালয়, দক্ষিণে হার্ডিঞ্জ স্কুল ও কলেজের নবনির্মিত ভবন। এই ভবনের সামনে স্কুলের পুকুরে ফার্মের গোচনা ও বর্জ্য নিস্কাশন করা হয়। এতে ভবনটিতে তীব্র দুর্গন্ধ আসে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ, এলাকাবাসী ও শিক্ষকরা জানান, এই ফার্মের প্রতিষ্ঠাতা পাঠানটোলা মহল্লার হাসিবুর রহমান কাশেম একসময় হার্ডিঞ্জ স্কুল ও কলেজে তিনবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ২৪ অক্টোবর ১৯৯৮ থেকে ২ নভেম্বর ২০০১, এরপর ১ ডিসেম্বর ২০০৭ থেকে ৯ নভেম্বর ২০১৫ এবং সর্বশেষ ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ থেকে ৩০ জুন ২০১৮ পর্যন্ত। প্রথমবার সভাপতি হওয়ার পর তিনি স্কুলের প্রায় ১০ বিঘা জমি ভাড়া নিয়ে ‘ধামরাই ডেইরি ফার্ম’ নামে গরুর খামার করেন। খামারে গাভী, ষাঁড় ও বকনাসহ প্রায় ২০০ গবাদি পশু আছে। এখন তিনি প্রতিমাসে হার্ডিঞ্জ স্কুল ও কলেজকে ৫০ হাজার টাকা ভাড়া দেন।
Posted ৮:৪২ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin