
নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
ভারি বর্ষণে ডুবে গেছে খুলনা শহরের অধিকাংশ এলাকার ভবনের নিচতলা। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল ও শহর অঞ্চলের বেশিরভাগ বাড়িতে। ডুবে গেছে শহরের সড়ক। প্লাবিত হয়েছে মৎস্য ঘেরসহ ফসলের ক্ষেত।
আবহাওয়া অফিস বলছে, লঘু চাপের প্রভাবে মধ্যরাতের হঠাৎ ভারী বর্ষণ বিগত ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। খুলনা আবহাওয়া অফিস বুধবার ভোর ছয়টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। যার মধ্যে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে ভোর ছটা পর্যন্ত ১৩০ মিলি মিটার।
এদিকে, রাতের বৃষ্টিতে ডুবে গেছে খুলনা শহরের রাস্তাঘাটসহ অধিকাংশ বাড়ির নিচতলা। ঘরের ভিতরে প্রবেশ করেছে নোংরা পানি। ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বুধবার মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত লাগাতার বৃষ্টিতে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
পানি নদীতে নামার নগরবাসী বলছেন, খালগুলো দখল করে ভরাট করাসহ ধীরগতিতে ড্রেন নির্মাণ এ অবস্থার অন্যতম কারণ। অবিলম্বে এসব ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তাদের।
জানা যায়, খুলনার নিরালা, মুজগুন্নী, বয়রা ও প্রান্তিকাসহ অধিকাংশ আবাসিকের বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। নীচ তলা নিমজ্জিত। সব রাস্তায় পানি। পানি ঢুকেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও। ফজর নামাজের সময় অধিকাংশ মুসল্লি রাস্তায় পানির কারণে মসজিদেও যেতে পারেননি। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ড্রেন নির্মাণের কাজ করার জন্য মাটি ও বালুর বস্তা দিয়ে বেশির ভাগ ড্রেন আটকে দেয়ার কারণে অবস্থা আরো বিপদজনক হচ্ছে।
এছাড়া নগরীর পানি যাওয়ার অধিকাংশ খাল দখল করে বালি ভরাট করাও নগরী তলিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে। অজ্ঞাত কারণে এসব চিহ্নিত ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় তাদের দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। ফলে লাখ লাখ নগরবাসী আজ দুর্ভোগের মুখে।
কোনটি রাস্তা আর কোনটি জলাশয় চেনার উপায় নেই। অধিকাংশ রাস্তা পানির নিচে। ফলে চলতে পারছে না রিকশা-অটোরিকশাও। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এসএসসি ও সমমানের পরিক্ষার্থীরা। যথাসময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে তাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে গত রোববার থেকে খুলনায় থেমে থেমে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছিল। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত এ বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ১৩০ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। যা বিগত ছয় বছরের মধ্যে খুলনা অঞ্চলের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।
তিনি বলেন, লঘুচাপ বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের মধ্যপ্রদেশে গিয়ে শেষ হয়েছে। কিন্তু লঘু চাপের প্রভাব এখনো রয়ে গেছে। যে কারণে আরও ২-১ দিন বৃষ্টি চলবে। বিগত পাঁচ-ছয় বছর আগে এই অঞ্চলে সর্বোচ্চ ১৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। তারপর থেকেই খুলনা অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম হয়।
Posted ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin