
নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতি মানুষের জীবনে অনেক পরিবর্তন এনেছে। জনজীবনের গতিপথকে পাল্টে দিয়েছে। অসম্ভব জিনিসকে হাতের নাগালে এনে দিয়েছে। এর ফলে জ্ঞানচর্চা ও গবেষণা এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের জীবনও এসব প্রযুক্তির সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। ফলে তৈরি হচ্ছে নিত্যনতুন অনেক বিধিবিধান। এই তথ্য-প্রযুক্তিকে অনেক কল্যাণকর কাজে আমরা ব্যবহার করে থাকি। এর মাঝে একটি মোবাইলের মাধ্যমে কোরআন থেকে উপকৃত হওয়া। নিম্নে আমরা এসংক্রান্ত কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
কোরআনের অ্যাপস
গুগল প্লে-স্টোরে সার্চ করলেই কোরআনে কারিমের অনেক অ্যাপস পাওয়া যায়। আমরা অনেকেই এসব অ্যাপস ব্যবহার করে থাকি। তবে একজন মুমিন হিসেবে এসব অ্যাপস ব্যবহারের আগে সতর্কতা কাম্য। কারণ এসব অ্যাপসের মাঝে এমন অনেক রয়েছে, যেগুলো ভুল-শুদ্ধ মিশ্রিত। সে জন্য যেকোনো অ্যাপস নির্দ্বিধায় ব্যবহার করা ঠিক হবে না; বরং এ ক্ষেত্রে আমাদের উচিত হবে যারা এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ তাদের থেকে জেনে নেওয়া। এসব বিভ্রান্তি এড়াতে অভিজ্ঞ আলেম বা হাফেজ দিয়ে যাচাই করে নেওয়া উচিত যে আমি যে অ্যাপস ব্যবহার করছি তা নির্ভুল আছে কি না? মুসলিম শরিফে এসেছে, ‘এই ইলম হচ্ছে দ্বিনের অংশ। তাই তোমরা তোমাদের দ্বিন কার কাছ থেকে গ্রহণ করছ তা খেয়াল রেখো।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬)
ডিভাইস দেখে কোরআন তিলাওয়াত করা
মোবাইল, কম্পিউটার কিংবা অন্য যেকোনো ডিজিটাল ডিভাইসে কোরআন তিলাওয়াত করা জায়েজ আছে। এ ক্ষেত্রে স্পর্শ করা ব্যতীত শুধু দেখে দেখে তিলাওয়াত করার জন্য অজু শর্ত নয়। অজু ছাড়াও তিলাওয়াত করা যাবে। তবে অজু করে তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব। কারণ কোরআন তিলাওয়াত সর্বোত্তম জিকির। আর হাদিসে এসেছে, পবিত্র অবস্থা ব্যতীত রাসুল (সা.) জিকির করতে অপছন্দ করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৭)
তবে অজু ব্যতীত স্ক্রিনে কোরআনে কারিম স্পর্শ করার ব্যাপারে ওলামাদের দুটি মত পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ের অনেক আলেম বলেছেন যে কোরআনের স্ক্রিনের লেখা স্থায়ী নয়। এটি প্রতিচ্ছবির মতো। এ ছাড়া এর ওপর একটি আবরণও থাকে। তাই অজু ব্যতীত তা স্পর্শ করা যাবে। (আল-ইসলাম, সওয়াল-জাওয়াব, ফাতওয়া নম্বর : ১০৬৯৬৬১)
আবার কেউ বলেন, অজু ছাড়া স্ক্রিনে কোরআনে কারিম স্পর্শ করা যাবে না। কাগজে লেখা কোরআনে কারিম যেভাবে স্পর্শ করা জায়েজ নেই, তেমনিভাবে স্ক্রিনে লিপিবদ্ধ কোরআনও অজু ব্যতীত স্পর্শ করা জায়েজ নেই। তাঁরা বলেন, প্রয়োজনে স্ক্রিনের পাশের খালি জায়গায় আঙুল দেওয়ার সুযোগ আছে। আবদুল্লাহ ইবনে আবু বাকর ইবনে হাজম (রহ.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমর ইবনে হাজমের কাছে যে পত্র লিখেছিলেন তাতে এটাও লিখিত ছিল যে পবিত্র ব্যক্তি ছাড়া কোরআনকে যেন কেউ স্পর্শ না করে। (মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হাদিস : ৪৫৫)
Posted ৩:৪৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin