
নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ছোট-বড় আকারের প্রচুর ইলিশ। বাজারেও নেই কমতি। তবু কমছে না দাম। গত বছর জালে ইলিশ কম উঠলেও দাম ছিল ক্রেতাদের নাগালে। কিন্তু এ মৌসুমে পুরোপুরি ভিন্ন। বাজারে প্রচুর ইলিশ থাকলেও দাম চড়া।
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি হাট-বাজারে কয়েকদিন ধরেই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে ইলিশের জমজমাট বেচাকেনা। দাম বেশি হলেও কিনছেন ক্রেতারা।
বাজারে দুই কেজি ওজনের ইলিশের কেজি ১৮০০ টাকা। আর এক থেকে দেড় কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০-১৪০০ টাকায়। এবার জাটকা সংরক্ষণে প্রশাসনিক তৎপরতার কারণে ঝাঁকে ঝাঁকে বড় ইলিশ ধরা পড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মৌসুমের সবচেয়ে বেশি ইলিশ আসছে উপজেলার চরবংশী ইউনিয়নের আলতাফ মাস্টারের মাছ ঘাটে। এখানে ঝুড়িভর্তি ইলিশ ও চোখেমুখে তৃপ্তি নিয়ে তীরে নামছেন জেলেরা। মাছ ব্যবসায়ীরাও ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন ইলিশ গোছাতে। কেউ ইলিশের স্তূপে দিচ্ছেন বরফ, কেউ কেউ ঝুড়িতে গুনে গুনে ভরছেন ইলিশ। জেলে, ব্যবসায়ীদের হই-হুল্লোড়ে চারদিক উৎসবমুখর। প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিন হাজার মণ ইলিশের সরবরাহ হচ্ছে এ ঘাটে।
শুক্রবার সকালে রায়পুর বাজারসহ কয়েকটি হাট-বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ঘাট থেকে ঝুড়িভর্তি প্রচুর ইলিশ নিয়ে বিভিন্ন বাজারে বসে বিক্রি করছেন জেলেরা। বেচাকেনাও ছিল জমজমাট। এর মধ্যে বেশিরভাগই বড় ইলিশ।
হাজীমারা মাছ ঘাটের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, আগের চেয়ে ইলিশের দাম কিছুটা সাধ্যের মধ্যে এসেছে। তবে মেঘনার ইলিশের দাম এখনো কমেনি। ঘাটে এখন বেশিরভাগই ইলিশ সাগরের।
উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, রায়পুর উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় ১৫টি মাছ বিক্রির ঘাট রয়েছে। এ উপজেলায় প্রায় আট হাজার জেলে রয়েছেন। এর মধ্যে কার্ড রয়েছে প্রায় ছয় হাজার জেলের। এবার অন্য মাছের চেয়ে ইলিশ বেশি ধরা পড়ছে নদীতে। গত পাঁচ বছরেও এত ইলিশ ধরা পড়তে দেখেননি মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
চরবংশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মাস্টার ঘাটের মালিক আবুল হোসেন বলেন, আমাদের ঘাটে প্রতিদিন কয়েক হাজার মণ ইলিশ সরবরাহ হচ্ছে। ইলিশ বেশি হওয়ায় এখন দামও কম। এখান থেকে অনেক ব্যবসায়ী ইলিশ কিনে নিয়ে জেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন। এভাবে আরো কয়েকদিন ইলিশ এলে মাছ ব্যবসায়ীসহ ক্রেতা-বিক্রেতা ও জেলেদের হতাশা কেটে যাবে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, জাটকা সংরক্ষণে প্রশাসনিক তৎপরতার কারণে অন্য বছরের তুলনায় এবার ইলিশ পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়েছে। এতে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ছোট-বড় ইলিশ ধরা পড়ছে। জাটকা নিধন বন্ধ ও জেলেরা সচেতন হলে সারা বছরই ইলিশ পাওয়া যাবে।
Posted ৯:২২ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin