
নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
ঝালকাঠির আমড়ার রয়েছে সুখ্যাতি। দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে আমড়া চাষে। জেলার তিন শতাধিক গ্রামে আমড়া গাছ লাগিয়ে অর্থনৈতিক সচ্ছলতার স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। পদ্মাসেতু চালু হওয়ায় ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে ঝালকাঠির মিষ্টি আমড়া পৌঁছে রাজধানী ঢাকায়। এছাড়াও সড়কপথে সিলেট, চট্টগ্রাম, যশোর, রাজশাহীসহ দেশের বড় বড় শহরে পাইকার-ফরিয়াদের মাধ্যমে পৌছে যাচ্ছে উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠিতে উৎপাদিত আমড়া। অপরদিকে বঙ্গোপসাগর থেকে বড় বড় জাহাজে করে আমড়া যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
কীর্তিপাশা ইউনিয়নের ভীমরুলীর আমড়া চাষি পঙ্কজ বড়াল। তিনি ২০১৭ সালে এক একর জমি লিজ নিয়ে আমড়া গাছ লাগান। ৩ বছরের মধ্যেই এসব আমড়া গাছে ফলন ধরতে শুরু করে। তিনি বলেন, এ বছর ৫০ মণের ওপরে আমড়া বিক্রি করেছি। ভাদ্র-আশ্বিন মাস আমড়ার ভরা মৌসুম।
তিনি আরো বলেন, ভীমরুলী, ডুমুরিয়া, বেতরা, জগদিশপুর, শতদশকাঠি, শিমুলেশ্বর, কুড়িয়ানা, আটঘর এসব এলাকায় বিপুল উৎপাদিত আমড়া সংগ্রহে ব্যবসায়ী-আড়তদার পর্যাপ্ত নয়। প্রত্যন্ত এলাকার বাগান থেকে সংগ্রহ করা আমড়া প্রথম দিকে আকার ভেদে ৮শ থেকে ৯শ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। এখন তা সাড়ে একহাজার থেকে ১২শ টাকার কাছাকাছি বিক্রি হচ্ছে। আমড়া পেয়ারার মতো অতি দ্রুত পচনশীল নয়, বিধায় এটি চাষে লোকসান হয় না। এখন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে সড়ক ও নৌপথে বিদেশেও যাচ্ছে।
ভীমরুলীর আড়তদার লিটন হালদার বলেন, এ বছর ভাদ্র মাসের শেষের দিকে আমড়ার ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ৫০-৬০ মণ আমড়া ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও চাঁদপুর যাচ্ছে বস্তা ভরে। বর্তমানে দাম মণপ্রতি এক হাজার থেকে ১২শ টাকার মধ্যে।
আড়তদার সিদ্দিক বলেন, আদমকাঠিতে আমড়ার আড়ৎ খুলে সেখান থেকে প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে আমড়া সংগ্রহ করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। পাইকাররা ট্রাক, পিকআপে করে চট্টগ্রাম নিয়ে যায়। সেখান থেকে জাহাজে করে কাঁচা আমড়া পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যায়। এছাড়া লন্ডনেও গত বছর থেকে এ অঞ্চলের আমড়া রফতানি হচ্ছে।
পুষ্টিবিদ সাজেদা বেগম জানান, আমড়ায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাসসহ অনেক পুষ্টিগুণ। আমড়াতে আঁশ থাকার কারণে হজমে সহায়তা করে। তাই মৌসুমের সময় নিয়মিত আমড়া খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর হয়।
ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ঝালকাঠিতে এ বছর ৬৪১ হেক্টর জমিতে আমড়ার চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ১২ টন আমড়ার ফলন পাওয়া গেছে। অর্থকরী ফসল হওয়ায় আমড়া চাষে দিন দিন আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। প্রতি বছরই আমড়ার ফলন বাড়ছে।
তিনি আরো বলেন, চাষিদের মাঝে সার্বিক পরামর্শ প্রদান ও সরকারি সবধরনের সুবিধা সুষম বণ্টন করছি।
Posted ৬:৫৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin