
নিজস্ব প্রতিবেদক: | শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
মো. শাহিনূর পেশায় একজন কৃষক। প্রায় ১৫ বছর ধরে বাড়ির পাশে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী তার নিজ জমিতে প্রায় ৬৬ শতক জমিতে বিভিন্ন জাতের কলা চাষ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ৪০০-৫০০টি চারা রোপণ করা যায়। কলা চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয় ৩০-৩৫ হাজার টাকা। বছর শেষে কলা বিক্রি করেন কমপক্ষে দেড় লাখ টাকার। বিষমুক্ত থাকায় ভোক্তাদের কাছে আমাদের কলার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। কলা চাষে নিজের ভাগ্যকে বদল করেছেন তিনি। শাহিনূর জামালপুরের মেলান্দহের দাউদপুর গ্রামের আজিজুল হক মোল্লার ছেলে।
শাহিনূর বলেন, প্রায় ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন জাতের কলা চাষ করছি। প্রতি বিঘা জমিতে ৪০০-৫০০টি চারা রোপণ করা যায়। কলা চাষে তেমন বিষ প্রয়োগ করতে হয় না। কিছু পরিমাণে সার ও অধিক পরিমাণে গোবর দিতে হয়। বর্তমানে বাগানে সাগর কলা ও চাপা কলা চাষ করছি। এসব কলা চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয় ৩০-৩৫ হাজার টাকা। বছর শেষে কমপক্ষে দেড় লাখ টাকার কলা বিক্রি করা যায়। প্রথম কয়েক বছর ভালো ফলন না হলেও পরে কৃষি অফিসারের পরামর্শে কলাচাষে সফলতা পেয়েছি। বাজারে প্রায় সারা বছর কলার চাহিদা থাকায় পাইকাররা বাগানে এসে ট্রাকভর্তি কলা নিয়ে যান। বিষমুক্ত থাকায় ভোক্তাদের কাছে আমাদের কলার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে।
তিনি আরো বলেন, ফলন ভালো হওয়ায় এবং বাজারে উপযুক্ত দাম পাওয়ায় কলা বিক্রি করে নিজের ভাগ্যকে বদলে নিয়েছেন নিজেই। এই এলাকায় কলাচাষ করে তার পাশাপাশি আরো অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন।
শাহিনূরের ছোটভাই শামিম আহমেদ বলেন, আগে শুধু সবজি চাষ করতাম। কলা চাষে ভাইয়ের সফলতা দেখে আমিও তার কাছ থেকে কলা চাষ শিখেছি। বর্তমানে আমি সবজি চাষের পাশাপাশি ২ বিঘা জমিতে কলা চাষ করছি। কলাচাষে খরচ কম মুনাফা বেশি।
মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক আজাদ বলেন, কলা অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল। ক্যালরির চাহিদা মেটাতে সবচেয়ে সহজলভ্য ফল কলা। এতে রয়েছে খনিজ পদার্থ, ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।
মেলান্দহ কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, এ উপজেলায় প্রায় ১৩০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়। এরমধ্যে কুলিয়া, দুরমুঠ ও শ্যামপুর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি চাষ হয় কলার। কলা একটি আদর্শ ফল। এটি একটি লাভজনক ও অর্থকরী ফসল। ঝুঁকি কম থাকায় এ অঞ্চলে আগের তুলনায় কলা চাষ বেশি হচ্ছে। অল্প পরিশ্রম ও কম খরচে চাষ করা যায় বলে কলা চাষে দিনদিন আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের।
উপজেলার কুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম বলেন, কৃষি বিভাগের উৎসাহ ও পরামর্শ পেয়ে কৃষকরা কলা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। এ কারণে বাজারে প্রচুর পরিমাণে কলা পাওয়া যাচ্ছে। এ ইউনিয়নের দাউদপুরসহ ডেফলা, পড়াগলি, দাউদকুড়া ও টনকী গ্রামের কৃষকরা কলা চাষ করে। দাউদকান্দি গ্রামের কলাচাষি শাহিনূরের সফলতা দেখে এলাকার কৃষক নূরুল ইসলাম, শাহাজাদা, শাহেন শাহ্, আনাছ আলিসহ আরো অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়েছেন কলা চাষে।
তিনি আরো বলেন- কলা চাষে কৃষক শাহিনূরের সফলতা প্রশংসনীয়। কৃষি বিভাগের উৎসাহ ও পরামর্শে কৃষক শাহিনূর একজন আদর্শ ও সফল কলাচাষি।
Posted ৬:১০ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin