
মোঃ নাজমুল হক,: | মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ধলাদিয়া এলাকায় ডার্ড কম্পোজিট ওয়াশিং এন্ড ডাইং এর ময়লা পানি আবাদি ও ফসলি জমি ধ্বংস করছে। এতে এলাকার কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী গন স্বাক্ষরসহ সংসদ সদস্য বরাবর অভিযোগ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সেলিম খান জানান, ডার্ড কম্পোজিট এর ওয়াশিং ও ডাইং এর পানির কারণে ২০০৬ সালের পর থেকে আমাদের এলাকায় কৃষি জমিতে কোন ফসল হয়নি। এমনকি ধলাদিয়া ও নোয়াগাও এলাকার শত শত বিঘা জমি নষ্ট হয়ে গেছে।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মুঞ্জুর আলী জানান, সুরমা বিলের পানি পারুলী নদীতে গিয়ে মিশেছে। ডার্ড প্রতিষ্ঠান করার পর থেকে আমাদের এই বিলে মাছ ও জলজ জীব বৈচিত্র্যের কোন উপস্থিতি নেই। এই পঁচা পানিতে কোন কারণে নামলে শরীরের চুলকানিসহ চর্মরোগ দেখা দেয়।
স্থানীয় কৃষক লিয়াকত আলী বলেন, আমরা আবাদ হারিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে বার বার প্রতিকার চেয়েও প্রতিকার পাইনি।
গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছি তাতেও কোন লাভ হয়নি। ডার্ড যদি তাদের পানি পরিশোধন করে তাহলে আমাদের জমি নষ্ট হলো কেন। ফসল হয়না কেনো। একেমন পরিশোধিত পানি যার কারণে আমাদের ফসল হয়না।
স্থানীয় কৃষক আফাজ উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম ও আব্দুল মালেক বলেন, ডার্ড আমাদের ফসিল জমির ফসল গিলে খেয়েছে। এমন কি সুরমা বিল ভরাট করে দখল করে নিয়েছে। একসময় রাজবাড়ী ইউপি’র চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন চেয়ারম্যান থাকাকালীন ডার্ড থেকে কৃষকদের জমি নষ্ট করার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হতো। তিনি চলে যাবার পর থেকে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া বন্ধ করে দেয় ডার্ড কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে অদ্যবদি আর কোন ক্ষতিপূরণ ডার্ড থেকে পায়নি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।
এদিকে স্থানীয়দের তথ্যমতে সুরমা খাল দখলের বিষয়ে রাজাবাড়ি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ নূরে আলম বলেন, আমি নতুন এসেছি। এবিষয়ে আমার জানা নেই। খোজ খবর নিয়ে পদক্ষেপ নেবো।
রাজাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসিনা মমতাজ বলেন, পরিবেশে দূষণের বিষয়ে আমাকে কেউ জানায় নি। অভিযোগ পেলে পদক্ষেপ নেবো।
রাজাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য হারিছ সিকদার জানান, আমাদের আসনের জনপ্রতিনিধিগণ সব সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েই খালাস। কোন প্রতিকার পায়নি কৃষক। কৃষকের পাশে কেউ নেই আল্লাহ ছাড়া। কিছুদিন আগে ডার্ডের মহিলা মালিক এসে ৬,৭,৮ নং ওয়ার্ড এর সাধারণ সদস্যের নিয়ে মিটিং করেছেন। ঐ মিটিং পর্যন্তই শেষ তাদের কাছ থেকে আর কোন ফলাফল আসেনি কৃষকদের জন্য।
সরেজমিনে দেখা যায়, ধলাদিয়া ও নোয়াগাও এলাকায় দুই থেকে আড়াইশত বিঘা জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। কোথাও কোন ফসলের লেসমাত্র নেই।
ডার্ড কম্পোজিটের বিরুদ্ধে কৃষকদের এমন অভিযোগ সততা জানতে, প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে গিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে সিকিউরিটি অফিসার হারুন অর রশিদ জানান, এখানে কেউ নেই, সবাই হেড অফিসে আছে। আপনারা হেড অফিসে যোগাযোগ করুন। তাঁদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা’র ফোন নম্বর চাইলে তিনি বলেন, তাঁদের কাছে কোন ফোন নম্বর নেই।
গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নয়ন মিয়া মুঠো ফোনে দৈনিক আজকের অগ্ৰবানী কে বলেন, পরিবেশ দূষণ হচ্ছে কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে এটা আমার নোটে আছে। ডার্ডের বায়োলজিক্যাল ইটিপি প্লান্ট আছে। পানি পরিশোধন করে ছাড়ে ওরা। কিন্তু কালার ও দুর্গন্ধ বিষয়ে পরিবেশ আইন না থাকায় কোন পদক্ষেপ নেয়া যাচ্ছে না। পরিবেশ আইন সংশোধন হচ্ছে, তা বাস্তবায়ন হলেই পদক্ষেপ নেয়া হবে।
Posted ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin