শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সন্তান জন্ম দিয়ে ১৫ মিনিটের মধ্যে কেন্দ্রে ছুটে গেলেন পরীক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

সন্তান জন্ম দিয়ে ১৫ মিনিটের মধ্যে কেন্দ্রে ছুটে গেলেন পরীক্ষার্থী

সন্তান সম্ভবা অবস্থায় এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন শায়লা আক্তার। মঙ্গলবার পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১৫ মিনিট আগে হাসপাতালে কন্যা সন্তান জন্ম দেন। এর পরই ছুটে যান কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিতে।

নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিয়ে আবার হাসপাতালে নবজাতকের কাছে ছুটে আসেন। তার এমন অদম্য ইচ্ছে শক্তি দেখে শিক্ষক ও সহপাঠিরা অভিভূত ও আনন্দিত। আর ফুটফুটে কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় খুশি পরিবারের সদস্যরা। শায়লা শরীয়তপুর পৌরসভার নীলকান্দি এলাকার সবুজ মিয়ার স্ত্রী।

জানা যায়, শরীয়তপুর পৌর এলাকার আংগারীয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী শায়লা আক্তার। তিনি পাশের আংগারীয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।

গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে নীলকান্দি এলাকার সবুজ মিয়ার সাথে বিয়ে হয় শায়লা আক্তারের। তিনি সন্তান সম্ভবা হন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। ওই অবস্থায় তিনি পরীক্ষা দিতে থাকেন। মঙ্গলবার ছিল তার ভূগোল পরীক্ষা। সকালে প্রসব বেদনা উঠলে তাকে জেলা সদরের রুপসী বাংলা হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনেরা। এরপর ১০টা ৪৫ মিনিটের সময় নরমালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। বেলা ১১ টার সময় পরীক্ষা শুরু হয়ে যায়। সুস্থ ভাবে সন্তান জন্ম দেয়ার পর ছুটে যান পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিতে।

হাসপাতাল থেকে আংগারীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দূরত্ব ৫ কিলোমিটার। পরিবারের সদস্যরা শায়লাকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হন বেলা সাড়ে ১১টার সময়। কেন্দ্র সচিব ও শিক্ষকদের সহায়তায় তিনি ছিটে বসে পরীক্ষা দেন। পরীক্ষা শেষে দুপুর দেড়টার দিকে আবার সন্তানের কাছে হাসপাতালে ফিরে আসেন।

শায়লা বলেন, সন্তান পেটে নিয়েই ৮টি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। আজ লিখিত পরীক্ষার শেষ দিনে কোল আলো করে সন্তান এসেছে। আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি নির্বিঘ্নে আমার কোলে সন্তান দিয়েছেন। সুন্দর ভাবে পরীক্ষা দিতে পারায় শিক্ষক ও চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি সন্তান লালন-পালনের পাশাপাশি পড়া-লেখা চালিয়ে যাব।

শায়লার স্বামী সবুজ মিয়া বলেন, শায়লা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে তা কল্পনাও করতে পারিনি। সন্তান জন্ম নেয়ার সাথে সাথেই সে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য উতালা হয়ে ওঠে। স্বজনদের কাছে সন্তান রেখে তাকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাই।

আংগারীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব আনোয়ার কামাল বলেন, একজন শিক্ষার্থীর কতটা অদম্য ইচ্ছা শক্তি থাকলে প্রসব বেদনা উপেক্ষা করে পরীক্ষায় বসতে পারে। আমরা বিশ্বাসই করতে পারিনি সে ঠিক মত পরীক্ষা দিতে পারবে। তার পরীক্ষায অংশ নেয়ার ব্যবস্থা করে একজন নারী চিকিৎসক উপস্থিত রেখেছিলাম। সুস্থ দেহে পরীক্ষা শেষ করে সন্তানের কাছে ফিরে যাওয়ায় আমরা অনেক খুশি হয়েছি।

আংগারীয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, শায়লা আমাদের বিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্রী। সন্তান সম্ভাবা অবস্থায় সে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। আজ সন্তান জন্ম দেয়ার পরপরই পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়ায় আমরা গর্বিত, আনন্দিত।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:৪৬ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০  
সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]